×

সারাদেশ

ভোলায় কমিশন খাচ্ছেন ডাক্তার-ক্লিনিক মালিকরাও!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২০, ০৩:৩৬ পিএম

ভোলায় কমিশন খাচ্ছেন ডাক্তার-ক্লিনিক মালিকরাও!
ভোলায় কমিশন খাচ্ছেন ডাক্তার-ক্লিনিক মালিকরাও!
ভোলায় কমিশন খাচ্ছেন ডাক্তার-ক্লিনিক মালিকরাও!
ভোলায় কমিশন খাচ্ছেন ডাক্তার-ক্লিনিক মালিকরাও!
ভোলায় কমিশন খাচ্ছেন ডাক্তার-ক্লিনিক মালিকরাও!

প্রতীকী ছবি।

প্রতিটি মানুষের কাছে তার শরীরটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখার জন্য ভোলাবাসী শরণাপন্ন হয় চিকিৎসকের। জরুরি না হলেও চিকিৎসকরা রোগীকে ডায়গনস্টিক বা ক্লিনিকে ভর্তি করায়। রোগীর শরীরে বড় ধরনের সমস্যা না থাকলেও প্রেসক্রিপসনে লিখে দেন নানা ধরনের টেস্ট। টেস্টের ৩০ থেকে ৪০% কমিশন পায় ডাক্তাররা। বাকি অর্থ যায় ক্লিনিক মালিকের পকেটে। নরমাল ডেলিভারি প্রসূতি মাকেও সিজার করান। সিজারে দিতে হয় ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এই সিজারের টাকা ক্লিনিক সোর্স থেকে শুরু করে ৪ থেকে ৫টি সেক্টরে ভাগ হয়। অনুসন্ধানে এমন চিত্রই উঠে এসেছে ভোলার বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোর।

অবৈধ লাইসেন্স, টিন শেট ঘর, অদক্ষ জনবল, অপর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, ক্ষতিকারক মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট দিয়ে মানব দেহের চিকিৎসা করে ভোলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো। এখানে অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ ও মানহীন ডায়াগনষ্টিক ও ক্লিনিক সেন্টার। যেখানে নেই কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান। ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দিয়ে অনেক ক্লিনিক মালিকরা ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করছে।

চিকিৎসা ফি, বেড ও কেবিন ভাড়া, অপারেশন, প্যাথলজি টেস্টের ফি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করছে। নতুন প্রযুক্তি, আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনা খরচের নামে তারা চিকিৎসার খরচ বাড়াচ্ছেন। এসব প্রতিষ্ঠানগুলো সিভিল সার্জন ও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রোগীরা।

অনুমোদনহীন ও মানহীন ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্ট এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেয়ার পরও সিভিল সার্জন-প্রশাসন বড় ধরনের কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি। যার পলে ক্লিনিক মালিকরা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ভোলা স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুসারে, জেলায় ৮৫ টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে ৫৮টির অনুমোদন থাকলেও বাকি ২৭টি প্রতিষ্ঠানের কোন কাগজ পত্র নেই। ভোলায় ২২ লক্ষ মানুষের বসবাস। অর্থনৈতিক সম্ভবনাময় এই জেলায় মানুষের জীবন যাত্রার মান অত্যন্ত নাজুক।

এ ব্যাপারে বিভিন্ন ডায়াগনিস্টিকের একাধিক নার্সদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এভোর্শন, এম আর তাদের নিত্য দিনের কাজ। ক্লিনিকে শুধুমাত্র কাগজে কলমে নিয়োগ প্রাপ্ত ডাক্তার ও টেকনেশিয়ান, নার্স, স্টাফ রয়েছে। ক্লিনিকগুলোতে নেই কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তার-নার্স। যার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ক্লিনিকের নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েক জন ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কাগজে-কলমে আমাদের নিয়োগ থাকলেও এই বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই ।

অভিযোগের ব্যাপারে ভোলা জেলার ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগগুলো সিংহভাগই সত্য। প্রশাসনের কোন নজরদারি না থাকায় ডায়গনস্টিক মালিকরা বেপরোয়া। সিভিল সার্জন মহদোয়কে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

ভোলার সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালি বলেন, কিছুদিন হলো ভোলার সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছি। দায়িত্ব পাওয়ার পর কিছু প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিকের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। ডায়াগনষ্টিক ও ক্লিনিক ব্যাবসার নীতিমালা অনুসারে সবাইকে ব্যবসা করতে হবে। সরকারি নীতিমালার বাহিরে যে সব প্রতিষ্টান কাজ করবে আমি অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App