×

জাতীয়

প্রস্তুতির ফাঁকফোকর বের করলেন জেলা প্রশাসকরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২০, ১০:০৯ এএম

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঢাকাসহ সারাদেশে ওয়াজ মাহফিল, তীর্থযাত্রাসহ সব ধরনের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সমাবেশ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৪টায় মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় প্রশাসন এ নির্দেশনার কথা জানায়। করোনা ভাইরাস থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। সচিবালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এ ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন সব জেলার জেলা প্রশাসকসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই কনফারেন্সে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে নানা প্রস্তুতির কথা উঠে আসে। তখনই বেরিয়ে আসে নানা ফাঁকফোকর। সূত্র জানায়, ওই কনফারেন্সেই বেশ কয়েকজন জেলা প্রশাসক করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে নেয়া প্রস্তুতিতে ঘাটতির কথা জানান। তারা এ বিষয়ে আরো নির্দেশনা চান। কেউ কেউ খুব দ্রুত ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে মেম্বার-চেয়ারম্যানকে দিয়ে কমিটি গঠনের কথা বলেছেন। জেলা ও উপজেলা শহরে চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত পরিমাণে জীবাণু সংক্রমণ রোধক পোশাকের ঘাটতির কথাও জানান তারা। কনফারেন্সে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের পাশাপাশি ধর্মীয় বা অন্য যে কোনো ধরনের জমায়েত বন্ধ থাকার বিষয়টি কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে জনগণকে আতঙ্কিত না করে সচেতনমূলক কাজ বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে। কনফারেন্সে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক বলেছেন, তুরাগ তীরে ইজতেমা মাঠে করোনা ইউনিট চালু করা ঠিক হবে না। কারণ ওই জায়গাটি ঘনবসতিপূর্ণ। কোনো কারণে ভাইরাসটি ছড়ালে পুরো এলাকার ক্ষতি হয়ে যাবে। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছেন, পয়েন্টটি ভালো। আমরা ভেবে দেখব। খুলনার জেলা প্রশাসক বলেছেন, খুলনা অঞ্চলে চিকিৎসক আছেন সহস্রাধিক। কিন্তু চিকিৎসকদের সংক্রমণ রোধ পোশাক আছে মাত্র ১০০টি। এই অবস্থায় খুলনায় করোনা চিকিৎসা ভালো হবে না। তিনি কনফারেন্সে বলেন, চিকিৎসকরাই যদি ঝুঁকিতে থাকেন তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে কী করে? নরসিংদীর জেলা প্রশাসক বলেছেন, সেখানে শিল্প কারখানা বেশি। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। কোনো কারণে ভাইরাসটির সংক্রমণ হলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলেছেন, তার জেলায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসককে মনোযোগ দিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে কনফারেন্সে। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলেছেন, কোয়ারেন্টাইন না মানলে সাজা দেয়া ঠিক হবে না। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে প্রবাস থেকে ফেরত আসাদেরসহ সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। এ রোগ প্রতিরোধে সবাইকে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে হবে। এদিকে আজ শুক্রবার মসজিদে গিয়ে মসল্লিরা জুম্মার নামাজ আদায় করতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা দেয়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় আলাদা করে কোনো নির্দেশনা দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয়ভাবে যে নির্দেশনা আসবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App