×

সারাদেশ

কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আ.লীগ, হুমকিও নিষ্ফল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২০, ১১:৩৭ এএম

আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ। দলের স্থানীয় সরকার পরিষদের মনোনয়ন বোর্ড থেকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের বাইরে অন্য কেউ নির্বাচন করলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আবারো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চসিক নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ফলে মহানগর আওয়ামী লীগের এই কোন্দলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন বিএনপি প্রার্থীরা।

গত ৫ মার্চ নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহীদের সামলাতে ব্যর্থ হওয়ায় গত রবিবার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের সামাল দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হচ্ছে না বলেই জানা গেল কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যে।

প্রসঙ্গত, চসিক নির্বাচনে এবারই প্রথম কাউন্সিলর পদে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কিছু কিছু ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে ৩ থেকে ৪ জনও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।

এরপর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে বর্ধিত সভার মাধ্যমে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে রবিবার এ বর্ধিত সভার আয়োজনও স্থগিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, নগর জুড়ে আলোচনা চলছে- শেষ পর্যন্ত কী বিদ্রোহীরা মাঠে থেকে যাচ্ছেন? যদি তা-ই হয়, তাহলে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়া নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। আর এই প্রভাব পড়তে পারে দলে মনোনীত মেয়র প্রার্থীর ওপরও।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বিদ্রোহী ও দল মনোনীত কাউন্সিলদের নিয়ে হওয়া বৈঠকে সমঝোতার চেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হয়।

বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হলেও তারা তা করতে রাজি না হয়ে কাউন্সিলরদের সব পদে প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখার দাবি জানান।

গত রবিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে নগর অঅওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হওয়ার কথা থাকলেও বর্ধিত সভা স্থগিত করা হয়েছে। তবে ওবায়দুল কাদের মেয়র পদপ্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে নিয়ে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জ্যৈষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার সভা করবেন বলে জানিয়েছেন নগর কমিটির সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

কাউন্সিলরদের বিষয় নিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্সিলর পদ নিয়ে দল যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাই চূড়ান্ত। দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বিদ্রোহীরা সবাই দলীয় মনোনয়ন ফরম নেয়ার সময়ই পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বর্ধিত সভা হবে না, তবে ক্লোজড ডোর মিটিং হবে। মেয়র নির্বাচনে দলের কৌশল ঠিক করতে আয়োজিত এই সভায় সিনিয়র নেতারা থাকবেন। তাতে মেয়র পদে নির্বাচনী প্রচারণা ও আচরণবিধি মেনে চলাসহ ভোট কেন্দ্রভিত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।

নগরীর ৪১ সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে এবার প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর পদে ৫৫ জনকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে দলের রাজনীতিতে জড়িত ৩-৪ জন করে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।

রবিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ছিল শেষদিন। বিদ্রোহীদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী বেশি।

এ ছাড়া প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সাংসদ আফছারুল আমিন ও এম এ লতিফ, সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এবং সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির অনুসারীরাও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App