×

জাতীয়

উপনির্বাচন করতে বদ্ধ পরিকর ইসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২০, ০৯:৫৫ এএম

করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক উপেক্ষা করে ঢাকা-১০ আসনসহ আগামী ২১ মার্চ অনুষ্ঠেয় তিনটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আর তারই নমুনা স্বরূপ গতকাল বুধবার ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ইভিএম সেটসহ অন্য দুই আসনে নির্বাচন সংক্রান্ত মালামাল পাঠিয়েছে ইসি। আবার এমনিতেই ইভিএমে ভোটের হার বরাবরই কম, তার ওপরে করোনা আতঙ্কে ভোটাররা ভোট দিতে আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে নির্বাচন বন্ধের পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনা বিগ্রেডিয়ার (অব.) ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহম্মদ শাহনেওয়াজ।

এদিকে বুধবার (১৮ মার্চ) সকালে সরেজমিন কমিশনে গিয়ে দেখা যায়, একটি কুরিয়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি কন্টেইনারে করে ইভিএম সেটসহ ভোট সংক্রান্ত মালামাল পাঠান হচ্ছে ঢাকা-১০ সহ অন্য দুই আসনে। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ ব্যস্ততা দেখা গেছে। তালিকা ধরে মালামাল তুলে দেয়া হচ্ছে কন্টেনারে।

করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে নির্বাচন স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সারা বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশেও করোনা ভাইরাসের চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যেখানে সরকার স্কুল কলেজ, হোটেল রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিচ্ছে। সমুদ্র সৈকতে জনসমাবেশ বন্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জনসমাবেশ বন্ধ করার কথা বলেছে। সেখানে করোনা আতঙ্কে ভোটার উপস্থিতি আরো কমতে বাধ্য। তাছাড়া এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন বন্ধ হলেও সাংবিধানিক কোনো বাধ্যবাধকতা ভঙ্গ হবে না। কেননা, নির্বাচন ডিক্লিয়ারের পরে কোন দৈব দুর্বিপাকে নির্বাচন বন্ধ হলে তাতে সংবিধান লঙ্ঘন হয় না। সে কারণে নির্বাচনটা পরেও করা যেত, তাতে কি সরকার পড়ে যাবে এমন তো নয়। তাই কেন যে ইসি নির্বাচন করা নিয়ে এতটা আগ্রহী তা বোঝা যাচ্ছে না।

সাবেক ইসি মোহম্মদ শাহনেওয়াজ বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে কম হবে। মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া, তাই ভোটের দিন ভোটাররা কেন্দ্রে যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে ভোটের মাত্র দুদিন আগে নির্বাচন বন্ধ করাও মুশকিল। তবে ভোট বন্ধ হলে ভালো হতো।

এদিকে নির্বাচনের বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এখনো নির্বাচন বন্ধ করার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। আগামী ২১ মার্চ ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪ এবং গাইবান্ধা-৩ আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, বাঙালিরা এর চেয়ে বড় বড় দুর্যোগ সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ মডেল। আইইডিসিআরের নির্দেশনামতো সব ধরনের জনসমাগম না করার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে সিইসি বলেন, আমরা এখনই বিষয়টি টেক আপ করব। সামনে চট্টগ্রাম সিটি ও কয়েকটি নির্বাচন আছে। প্রার্থীরা যেন সীমিত আকারে অন্য ডিভাইসে প্রচার করে এবং যেন জনসভা ও পথসভা পরিহার করে, সেই অনুরোধ করব।

গত ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত উপনির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ইসির বৈঠকে বাহিনীর পক্ষ থেকে ইভিএমে ভোটগ্রহণে ভাইরাস ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কা করা হয়েছিল। তখন ইসি বলেছিল, প্রতিটি ভোটারের হাতের আঙ্গুল প্রতিষেধক ও টিসু দিয়ে মুছে পরিষ্কার করা হবে। আর ভোট কর্মীরা মাক্স ব্যবহার করবেন।

নির্বাচনের বিষয়ে গতকাল ইসি রফিকুল ইসলাম বলেছেন, পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত দেব। তিনি জানান, ২১ ও ২৯ মার্চ ভোট হবে কিনা, বিষয়টি নিয়ে এখনো বৈঠকে বসেনি নির্বাচন কমিশন। যদিও ভোটের মাঝখানে বাকি আছে আর মাত্র দুইদিন।

এ বিষয়ে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম শাহাতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, করোনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে এটা ঠিক। তবে সবাই সতর্কতার কথাই বেশি বলেছেন। বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমরা সবাই এটা নিতে সতর্ক আছি এবং থাকব। ভোটের সময় টিস্যু ও হ্যান্ড ওয়াশ সরবরাহ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দরকার হলে মাস্ক ব্যবহার করবে।

যদিও ঢাকা-১০ আসনের ভোটারদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তাদের অধিকাংশই করোনা ভাইরাসের কারণে ভোট দেবেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তারা নির্বাচন পেছনের কথা বললেও প্রার্থীসহ কিছু কিছু দলীয় ভোটার ভোট নির্দিষ্ট দিনে করার দাবি জানিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App