×

সারাদেশ

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসায় পাঠদান!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২০, ০৫:৩৫ পিএম

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসায় পাঠদান!

মদিনাতুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসায় ক্লাস চলছে। ছবি: প্রতিনিধি।

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসায় পাঠদান!

মদিনাতুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা। ছবি: প্রতিনিধি।

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাদ্রাসায় পাঠদান!

অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে সাধারণ ছুটি উপেক্ষা করে মাদ্রাসা খোলা রেখে পাঠদান করালেন দাউদকান্দি মদিনাতুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস সম্পর্কে কোনো কিছুই জানেন না শিক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষের নির্দেশে অন্যান্য দিনের মতোই বই-খাতা নিয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে তারা ক্লাস করেছে।

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বলে মনে করছেন দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল ইসলাম খান। অধক্ষ্যের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ নিচ্ছেন তারা।

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে মদিনাতুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা বইপুস্তকসহ পাঠ নিচ্ছেন। জানতে চাইলে ষষ্ট শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, অন্যান্য সহপাঠীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমাদের মাদ্রাসা বন্ধ দেয়া হয়নি। তাদের শিক্ষকরা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস সম্পর্কে কিছুই জানাননি। অন্যদিনের মতোই আমাদের ক্লাস নেয়া হয়েছে।

[caption id="attachment_209580" align="aligncenter" width="700"] মদিনাতুল উলুম ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা। ছবি: প্রতিনিধি।[/caption]

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম ভোরের কাগজকে বলেন, মুজিববর্ষ নিয়ে আলোচনার জন্যই মাদ্রাসা খোলা রেখেছি। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৭ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করা হলেও অধ্যক্ষ দাবি করেন, সরকার ১৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। তাই তিনি ১৮ থেকে মাদ্রাসা বন্ধ রাখবেন। তবে মুজিববর্ষের আলোচনা না করে, ক্লাসে পাঠদান কেন করা হচ্ছে, সে প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ।

তবে মাদ্রাসা খোলা রাখার খবর পেয়ে সেখানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাজির হলে তাদের সামনে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক রচনা ও করোনাভাইরাস সম্পর্কে সতর্কতার নির্দেশনার কাগজপত্র বের করে দেখান।

এ ব্যাপারে ইউএনও কামরুল ইসলাম খান বলেন, মাদ্রাসায় পাঠদান চলছে এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে সত্যতা পেয়েছি। ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথাও বলেছি। তবে দুঃখের বিষয়, শিক্ষার্থীরা একজনও জানে না আজ (১৭ মার্চ) জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে ছুটির দিন এবং মুজিববর্ষ উদযাপনের উদ্বোধন হচ্ছে।

[caption id="attachment_209581" align="aligncenter" width="700"] অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম[/caption]

ইউএনও কামরুল ইসলাম খান আরো কলেন, একজন অভিভাবক তার ছোট বাচ্চাকে শ্রেণিকক্ষে বসিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলে বলেন আমাদের আসতে বলেছে তাই বাচ্চাকে নিয়ে এসেছি। ইউএনও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বই নিয়ে ক্লাস করছে আর অধ্যক্ষ বলছে মুজিববর্ষ পালনের জন্য এনেছে। অধ্যক্ষের এ মিথ্যাচার রাষ্ট্রের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কথা ডিসি মহোদয় ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডকে জানিয়েছি। আমার কাছ থেকে লিখিত রিপোর্ট চেয়েছে। আর ডিসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুমন বলেন, গত বছরেও মাদ্রাসার কমিটিতে প্রকৃত মুসলমানকে দেখিনি। অধ্যক্ষ বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী নিয়োগ করায় বঙ্গন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনের দিনে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App