×

পুরনো খবর

শিশুদের প্রিয়বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২০, ০১:০২ এএম

শিশুদের প্রিয়বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু

শিশুদের সান্নিধ্যে উৎফুল্ল বঙ্গবন্ধু। ছবি: ফাইল।

শিশুদের প্রিয়বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু

পরিবারের শিশুদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু। ছবি: ফাইল।

শিশুদের কে না ভালোবাসে! ব্যতিক্রম কী করে হবেন বঙ্গবন্ধু। তিনি তো শিশুদের জন্য ছিলেন অন্তঃপ্রাণ। ভালোবাসতেন হৃদয় উজার করে। বলতেন, শিশুরাই আগামী প্রজন্ম। শিশুদের দেখলেই হাসতেন, আনন্দে প্রাণ ভরে যেত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর। শিশুদেরও অত্যধিক প্রিয় বন্ধু ছিলেন বঙ্গবন্ধু।

১৯৭২ সালের শেষ দিকের কথা। একদিন সকালে বঙ্গবন্ধু হাঁটতে বেরিয়েছেন, যেমনটি রোজ বের হন। সঙ্গে ছিল বড় ছেলে শেখ কামাল। হঠাৎ বঙ্গবন্ধু দেখলেন- একটি বাচ্চা ছেলে। তার কাঁধে বইয়ের ব্যাগ ঝুলানো। ছেলেটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। বঙ্গবন্ধু ছেলেটিকে কাছে ডাকলেন। জানতে চাইলেন, কেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে?

ছেলেটি জানালো তার পায়ে কি যেন ফুটেছে- এ জন্য ব্যথা করছে। বঙ্গবন্ধু ছেলেটির পায়ের জুতা খুলে দেখেন, জুতার ভেতর লোহার সুচালো মাথা বের হয়ে আছে। যার খোঁচায় পা দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু তখনই ছেলেটির চিকিৎসার জন্য তাঁর দেহরক্ষী পুলিশকে নির্দেশ দিলেন। ছেলেটির হাতে কিছু টাকাও দিলেন। পরম মমতায় আদর করে বিদায় নিলেন।

১৯৬৩ সালের কথা। তখনো বঙ্গবন্ধু উপাধি পাননি, জাতির পিতাও হননি। তবে আওয়ামী লীগের বড় নেতা। সে সময়ই তিনি শিশুদের টানে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে কচি-কাঁচার মেলা আয়োজিত শিশু আনন্দমেলায় এসেছিলেন। মেলায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে মিশি মনটাকে একটু হালকা করার জন্য। সংগ্রামমুখর জীবনে বঙ্গবন্ধু যে শিশুর সান্নিধ্য থেকে প্রশান্তি খুঁজে পেতেন, শিশুদের কাছ থেকে প্রেরণার উপাদান খুঁজে বেড়াতেন, সেটি তার এই বক্তব্যে বোঝা যায়।

১৯৭২ সালে একদল ক্ষুদে আঁকিয়ে ছবি এঁকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যায় গণভবনে। বঙ্গবন্ধু খুব খুশি হলেন ছোট বন্ধুদের পেয়ে। আগ্রহ নিয়ে ছবিগুলো দেখলেন। প্রশংসা করলেন। মুগ্ধ হয়ে বললেন, আমাদের দেশে ছোটরা যে এতো সুন্দর ছবি আঁকতে পারে, এসব না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। সাড়ে তিন ঘণ্টা শিশুদের সঙ্গে কাটান বঙ্গবন্ধু। একসঙ্গে খাবার খান।

সেদিন তিনি তৃপ্তিভরা কণ্ঠে বলেছিলেন, কর্মব্যস্ত সারাটাদিনের মধ্যে এই একটুখানি সময়ের জন্য আমি শান্তি পেলাম। এতে বোঝা যায় বঙ্গবন্ধু শিশুদের মাঝে থেকে ভুলে থাকতেন ক্লান্তি, যন্ত্রণা বা রাজনৈতিক জীবনের বড় সমস্যাগুলো।

[caption id="attachment_209376" align="aligncenter" width="700"] পরিবারের শিশুদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু। ছবি: ফাইল।[/caption]

তার মানে তিনি শিশুদের কাছে থাকতে চাইতেন নিজেকে সব জটিলতা থেকে মুক্ত রেখে প্রশান্তির জন্য। এত বড় নেতা হয়েও, এতো ব্যস্ততা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু কখনো তার শিশুপুত্র রাসেলকে আদর করতে ভোলেননি। কোথাও গেলে রাসেলকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর ‘আমাদের ছোট্ট রাসেল সোনা’ গ্রন্থে লিখেছেন, রাসেল আব্বাকে ছায়ার মতো অনুসরণ করতো। আব্বাকে মোটেই ছাড়তে চাইতো না। বঙ্গবন্ধুর কাছে তাঁর শিশুপুত্র রাসেল ছিল বাংলাদেশের সব শিশুদের প্রতীক। শিশুদের কাছে পেলেই আনন্দে আত্মহারা হতেন বঙ্গবন্ধু।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App