×

পুরনো খবর

শিশুদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুই প্রথম আইন করেছিলেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২০, ১১:১০ এএম

শিশুদের কল্যাণে বঙ্গবন্ধুই প্রথম আইন করেছিলেন

শিশুদের সঙ্গে আনন্দঘন মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু।

মুক্তিযুদ্ধের পর দেশের মানুষের পাশাপাশি আলাদাভাবে শিশুদের সুরক্ষায় পূর্ণাঙ্গ একটি আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও ভেবেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪ সালের ২২ জুন জাতীয় শিশু আইন (চিলড্রেন অ্যাক্ট) প্রণয়ন করেন বঙ্গবন্ধু। এই আইনের মাধ্যমে শিশুদের নাম ও জাতীয়তার অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। শিশুদের প্রতি সব ধরনের অবহেলা, শোষণ, নিষ্ঠুরতা, নির্যাতন, খারাপ কাজে ব্যবহার ইত্যাদি থেকে নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।

শিশু আইনের পাসের ১৫ বছর পর জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ তৈরি করে। বাংলাদেশ ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত শিশু অধিকার সনদের অন্যতম অনুস্বাক্ষরকারী দেশ।

সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে শিশুদের অগ্রগতির বিশেষ বিধান প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষাসহ মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা, সুযোগের সমতা, অধিকার ও কর্তব্য এবং জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান। এরই লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শিশু উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

জাতির জনক প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করে ১৯৭৩ সালে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। শিশুদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সব সময় থাকতেন হাস্যোজ্জ্বল। শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর দুয়ার ছিল খোলা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শিশুদের প্রিয় বন্ধু। বড়োদের মতো শিশু-কিশোরদের কাছেও তিনি ছিলেন ‘মুজিব ভাই’ নামে পরিচিত। ১৯৬৩ সালে ঢাকার প্রেসক্লাবে দশ দিনব্যাপী শিশুমেলার আয়োজন করা হয়। ওই শিশুমেলায় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এই পবিত্র শিশুদের সঙ্গে মিশি মনটাকে একটু হালকা করার জন্য।’

১৯৭২ সালের দিকে একদিন সকালে বঙ্গবন্ধু তার বড় ছেলে শেখ কামালকে নিয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখলেন একটি ছোট ছেলে বইয়ের ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। কাছে ডাকার পর ছেলেটি জানায় যে, তার পা ব্যথা করছে বলে খুঁড়িয়ে হাঁটছে। বঙ্গবন্ধু নিজে ছেলেটির জুতা খুলে দেখেন যে, জুতার মধ্যে একটি পেরেকের সুঁচালো মাথা বেরিয়ে আছে, যার খোঁচায় ছেলেটির পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু তখনই চিকিৎসার জন্য তাঁর দেহ রক্ষী পুলিশকে নির্দেশ দিলেন এবং তার হাতে কিছু টাকাও দিলেন। আর পরম মমতায় ছেলেটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন।

বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন ভবিষ্যতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব দিতে হবে আজকের শিশুদেরই। তাই শিশুরা যেন সৃজনশীল, মননশীল এবং মুক্তমনের মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠে। অহিংসা দিয়ে, মানবপ্রেম দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে সমাজে যে আদর্শ বঙ্গবন্ধু নির্মাণ করে গেছেন তার মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App