×

সম্পাদকীয়

করোনা মোকাবিলায় অব্যবস্থাপনা নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০২০, ০৮:০২ পিএম

হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে না পারলে করোনা ভাইরাস বিস্তার ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে। বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আক্রান্তপূর্বক জনসচেতনতা, প্রতিরোধের ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। সরকারের নির্দেশ অমান্যে আইনের মাধ্যমে শাস্তি প্রদানের মতো কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। কিন্তু তারপরও বিধি মানতে চাচ্ছেন না বিদেশফেরত করোনা ভাইরাস সন্দেহভাজনরা। করোনা ভাইরাসে যে ব্যক্তি আক্রান্ত বা কারো সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের আলাদা করে রেখে রোগের বিস্তার ঠেকানোর নাম কোয়ারেন্টাইন। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পর থেকে রোগের পূর্ণ প্রকাশ হতে ১৪ দিন লাগে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটি আক্রমণ করেছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন জরুরি। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ১৬টি নির্দেশনা দিয়ে বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়- থানার ফোকাল পয়েন্ট অফিসারদের মাঝে ব্রিফিং দিতে হবে। জেলার অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ফোকাল পয়েন্ট অফিসারদের নিয়ে একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ খুলে জরুরি নির্দেশনা ও তথ্যাদি আদান-প্রদান করতে হবে। এ সংক্রান্ত লিফলেট ও ফেস্টুন সর্বত্র বিতরণ করার জন্য বলা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সরকারের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগের (আইইডিসিআর) অভিযোগ- বিদেশফেরত ব্যক্তিরা কোয়ারেন্টাইনে থাকতে চাচ্ছেন না। আবার কোয়ারেন্টাইন হোম থেকে পালানোর মতো ঘটনাও ঘটছে। গত ২১ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ৬ লাখ ৬ হাজার ৫১২ যাত্রী বাংলাদেশে এসেছেন।

এদের সবার হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে নজরদারি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বিভিন্ন এলাকায় আগত প্রবাসীরা কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম মানছেন না। এতে ভাইরাসটি জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কোয়ারেন্টাইন ছেড়ে বাইরে যাওয়ায় মানিকগঞ্জে এক সৌদি প্রবাসীকে গত রবিবার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাল্টা অভিযোগও রয়েছে। হজক্যাম্পে অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে অব্যবস্থাপনার কারণে ইতালিফেরত প্রবাসীরা সেখানে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে যে কোয়ারেন্টাইন কর্নার খোলা হয়েছে তাতে নানা অব্যবস্থার চিত্রও আমরা দেখতে পাচ্ছি। সেক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইন কর্নারগুলো স্বাস্থ্য উপযোগী করে গড়ে নিতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, যারাই বিদেশ থেকে আসছেন, তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া দরকার, এখানে ছাড় দেয়া যাবে না। তাদের কোয়ারেন্টাইনে না নিলে এটা ছড়িয়ে যাবে। প্রয়োজনে কারাদণ্ড, জরিমানা যা যা দরকার সব করতে হবে। জানা গেছে, গত দুই মাসে সাড়ে ৫ লাখ মানুষ বিদেশ থেকে ফিরেছে, এই বিপুলসংখ্যক মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস নিয়ে ঢুকে পড়ার ঝুঁকি আছে। কোয়ারেন্টাইন ঠিকমতো না হলে পুরো দেশ ঝুঁকিতে পড়বে। এখনই সরকারকে আরো সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দায় রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App