×

সারাদেশ

কোন্দল সমাধানের চেয়ে অনেকটা উসকে গেল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২০, ১১:৪৯ এএম

কোন্দল সমাধানের চেয়ে অনেকটা উসকে গেল

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী গণসংযোগ করেন। ছবি: ভোরের কাগজ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগর আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব কোন্দল সমাধানের চেয়ে উল্টো তা অনেকটা উসকেই দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা। ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিতদের এসব কেন্দ্রীয় নেতারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারতো করাতে পারেনইনি বরং কোনো কোনো নেতার বক্তব্যে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা আরো বেশি করে উৎসাহিত হয়েছেন বলেই কার্যত দেখা যাচ্ছে।

গত ৫ মার্চ থেকে গত ৮ মার্চ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বারবার বলেছেন, কেন্দ্র যাদের মনোনয়ন দিয়েছে তারাই নির্বাচন করবেন। এর বাইরে যদি অওয়ামী লীগের কেউ দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচন করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু তার কিছুই হয়নি, আদৌ হবে কিনা সে ব্যাপারেও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের বিষয়ে গত ৫ মার্চ থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের ঠেকাতে বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর জানানো হলো দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসে সিদ্ধান্ত দেবেন। হ্যাঁ সাধারণ সম্পাদক ৮ মার্চ এলেন সত্য, কিন্তু কোনো সমাধান দিলেন না।

পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজের অগ্রগতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘ঢাকাতেও প্রচুর প্রার্থী ছিলেন। প্রথমে যতজন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন পরে ততজন ছিলেন না। ১৭২ জনের মধ্যে কমতে কমতে মাত্র ১৫ জন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন যারা জয়লাভ করেছেন। এখানে আমি উদ্বেগের কোনো কারণ দেখি না। যেটুকু সমস্যা আছে আশা করি, সেটুকু সমাধান হয়ে যাবে।’ এরপর দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বের হয়ে যাওয়ার পথে ওবায়দুল কাদের জানান, ‘সিদ্ধান্ত নেবেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রয়োজনে বাকিদের সঙ্গে কথা বলে কাউন্সিলর মনোনয়ন পরিবর্তন, সংশোধন কিংবা পরিবর্ধনও করতে পারবেন তিনি।’

এরপর বিকেল ৪টায় নগরীর কে সি দে রোডে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ সব নেতাই বিদ্রোহীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বললেন, না হলে কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে এমনটিও বললেন তারা। কিন্তু ততক্ষণে তো নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময় শেষ।

চট্টগ্রাম মহানগরীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের এ ধরনের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে আক্ষেপের সঙ্গে বললেন, তিনি সমাধানতো দিলেনই না উল্টো বিদ্রোহের আগুনে যেন ঘি ঢেলে দিলেন। তারা বললেন, চট্টগ্রামে একজন মেয়র প্রার্থী নিজে মনোনয়ন না পেয়ে দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তার মনোনয়ন না পাওয়া এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের কাউন্সিলর পদে কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক মনোনয়ন দেয়া নিয়ে প্রকাশ্যে যেভাবে কথাবার্তা বলেছেন তা কোনোভাবেই দলের জন্য সুখকর নয়। এমনকি গত ৮ মার্চ সারাদিনব্যাপী দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠক করে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে না পারা বা ইচ্ছাকৃতভাবে এ কোন্দলকে আরো চাঙ্গা করা হলো কিনা সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কোনো কোনো নেতাকর্মী।

এ ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ভোরের কাগজকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে এ ধরনের সমস্যা হতেই পারে। নির্বাচন তো এত সহজ জিনিস নয়, প্রয়োজনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সে জন্য সময়েরও তো প্রয়োজন আছে’। কিন্তু কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যকেও বিদ্রোহী প্রার্থীরা আমলে নেননি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এসব প্রার্থীরা পরবর্তী পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও তো প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে পারেন।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App