×

সাহিত্য

দেশকে জঙ্গিবাদ মুক্ত করতে সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২০, ১০:৩৮ পিএম

দেশকে জঙ্গিবাদ মুক্ত করতে সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই
২০০১ সালে নয়-এগোরোয় নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে নৃশংস আত্মঘাতী বিমান হামলা চালায় জঙ্গি ও মৌলবাদী সংগঠন আল কায়েদা। এ ঘটনায় ৯০টি দেশের প্রায় তিন হাজার নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয় আল কায়েদা ও আইএস-এর সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক। এসব জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনের জন্য এবার তুরস্ক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে প্রামাণ্যচিত্র ‘হাকানের স্বপ্নযাত্রা’। এটি নির্মাণ করেছেন নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। বুধবার (১১ মার্চ ) বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বাংলা ও ইংরেজিতে নির্মিত ৩৫ মিনিটের এই প্রামাণ্যচিত্রে তুরস্কের সুফিসাধক রুমি, সিন্ধের শাহাবায কালান্দার,পাঞ্জাবের বুলেরু শাহ, ভারতের কবীর এবং বাংলাদেশের চন্ডিদাস ও লালনের কর্মময় জীবন তুলে ধরা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল। প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী শেষে ‘জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাস ও সংঘাত প্রতিরোধে সংস্কৃতিককর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবির, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, অধ্যাপক জাফর ইকবাল, আরামা দত্ত এমপি, সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। সভা সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশকে বাঁচাতে এবং জঙ্গিবাদ মুক্ত করতে হলে সংস্কৃতি চর্চার কোনো বিকল্প নেই। মন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে, এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনও যুক্ত হলো। আন্তর্জাতিক যড়যন্ত্র বিস্তৃত হয়েছে। তিনি বলেন, জয়বাংলা স্লোগান দিয়েই আমরা যুদ্ধ করেছি, জিয়াউর রহমান এই স্লোগান বিলীন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইতিহাস বিশ্বাসঘাতকদের যার যার জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। জয়বাংলা আমাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা শিশুদের খেলার মাঠ দিতে পারছি না, ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। আমাদের দেখতে হবে দেশে কখন থেকে জঙ্গি মৌলবাদ বিস্তার হয়েছে যখন থেকে স্কুল-কলেজে ছাত্রদের পায়ের রগ কাটতে শুরু করে ছাত্র শিবির। পরে দেখলাম তিনি আরও বলেন, এখন ইসলাম, হিন্দু, খ্রিষ্টান,বৌদ্ধদের মধ্যেও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। তাই মানুষের মধ্যে যদি মানবতার বিষয়টি ছড়িয়ে দিতে পারলে শান্তির বরতা প্রতিষ্ঠিত হবে। শাহরিয়ার কবির বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে হলে বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেহ্ম মানবতা তুলে ধরতে হবে। কারণ বঙ্গবন্ধুই রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করার কথা বলছেন। তিনি আরও বলেন, নয়-এগারোর পর থেকে ইসলামের নামে ধর্মীয় সন্ত্রাস চলছে। কিন্তু ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম নয়। বরং ইসলামে শান্তির কথা বলা হয়েছে। শুধু ইসলাম ধর্ম নয় সব ধর্মেই শান্তির কথা বলা আছে। আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ইসলাম হিংসা ও সন্ত্রাসের ধর্ম নয়; মানবতার ধর্ম। সব মানুষই একই স্রষ্টার সৃষ্টি। এই বোধোদয় হলে ধর্ম নিয়ে হানাহানি,রাজনীতি থাকবে না। তাহলে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপনের কোনো সুয মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, স্কুল পর্যায়ে যদি আমরা শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ ও আধুনিক সংস্কৃতির আলোকে তাদের মনোজগত পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠবে। নয়তো সমাজের পরিবর্তন সম্ভব হবে না। বঙ্গবন্ধু পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন। তাকে বেশি বেশি করে জানতে হবে,জানাতে হবে। আরামা দত্ত এমপি বলেন, আমাদের অসাধারণ সংস্কৃতি ছিল, কিন্তু এখন তা হারাতে বসেছে। অথচ ধর্ম মানুষকে একত্রিত করে, বিচ্ছিন্ন করে না। বিদায়ী হজের ভাষণে হযরত মোহাম্মদ সা. বলেছিলেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। ফরিদা পারভীন বলেন, ঘরে ঘরে সংগীত শিল্পী যন্ত্রশিল্পী তৈরি করতে হবে। সংগীতের পদচারণা বিশ্বব্যাপী হওয়া দরকার। সুরের মাধ্যমে প্রেম ও মানবতা সৃষ্টি করতে হবে। https://www.youtube.com/watch?v=QQ-ni_0EZPA

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App