×

অর্থনীতি

১২ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ২৩ হাজার কোটি টাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২০, ১০:০৭ এএম

তিন মাসের ব্যবধানে ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা নতুন করে ঘাটতিতে পড়েছে আলোচিত বেসরকারি পদ্মা ব্যাংক

দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলছে। একদিকে সরকারি খাতে বেশি ঋণ যাচ্ছে, অন্যদিকে আগে বিতরণ হওয়া ঋণ আদায় হচ্ছে না। এতে খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনও রাখতে হচ্ছে। তাতে ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতিতে পড়ছে। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতের মূলধন ঘাটতি বেড়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণে (সিএআর) ব্যর্থ হয়েছে ১২ ব্যাংক। ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ সময় ব্যাংকিং খাতে সামগ্রিক মূলধন পর্যাপ্ততার হার (সিআরএআর) সামান্য হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের প্রান্তিক সেপ্টেম্বর শেষে ১২ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ১৭ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এ প্রান্তিকে নতুন করে বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংক ৭৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। তথ্য অনুযায়ী, মূলধন ঘাটতিতে থাকা মোট ১২টি ব্যাংকের মধ্যে ৫টি সরকারি, ৪টি বেসরকারি, ১টি বিদেশি এবং ২টি বিশেষায়িত ব্যাংক। এদের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোতে ঘাটতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ডিসেম্বর শেষে মোট ১০ হাজার ৭৭৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূলধন ঘাটতিতে সরকারি খাতের ৫টি ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে ২ হাজার ৫৭৩ কোটি, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোতে ১০ হাজার ১৯৯ কোটি এবং বিদেশি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি প্রায় ৬২ কোটি টাকা। এ বিষয়ে বিশ^ব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, এবারের খেলাপি কমার কারণ হলো ঋণের পুনঃতফসিল। সে কারণেই মূলধন ঘাটতি বেড়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূলধন ঘাটতিতে থাকা সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সোনালী ব্যাংকের। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির মোট মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ৫

হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের ২ হাজার ৪৯০ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ১ হাজার ২৯৪ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ২০১ কোটি এবং বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৯৬১ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের মূলধন ঘাটতি রয়েছে ৬২ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৯ হাজার ৪১১ কোটি এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৭৮৮ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক দিন ধরেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন না। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকেই শিল্পকারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। আর ব্যাংকের বেশিরভাগ ঋণই যাচ্ছে সরকারের ঘরে। ফলে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপি ঋণ বেশি হলে ব্যাংকের নানা দিক থেকে ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রথমত, সম্পদের গুণগতমান কমে যায়। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের সংরক্ষণের সীমা বেড়ে যায়। তৃতীয়ত, ব্যাংকটির আয় কমে যায়। এতে আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে পড়ে। চতুর্থ হলো ব্যাংকটির ঋণের সুদহার বেড়ে যায়। কারণ খেলাপি ঋণের কারণে একটি ব্যাংকের বিনিয়োগযোগ্য তহবিল কমে যায়। এতে বেড়ে যায় তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়। আর এ ব্যয় সমন্বয় করা হয় ঋণের সুদহার বাড়িয়ে আর আমানতকারীদের আমানতের সুদহার কমিয়ে। অর্থাৎ আমানতকারীদের আয় কমে যায় আর বিনিয়োগকারীদের ব্যয় বেড়ে যায়। হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এ ছাড়া জনতা ব্যাংকের ২ হাজার ৪৯০ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ১ হাজার ২৯৪ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ২০১ কোটি এবং বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৯৬১ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের মূলধন ঘাটতি রয়েছে ৬২ কোটি টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৯ হাজার ৪১১ কোটি এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৭৮৮ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক দিন ধরেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরছে না। উদ্যোক্তারা নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন না। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেকেই শিল্পকারখানা বন্ধ করে দিচ্ছেন। আর ব্যাংকের বেশিরভাগ ঋণই যাচ্ছে সরকারের ঘরে। ফলে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপি ঋণ বেশি হলে ব্যাংকের নানা দিক থেকে ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রথমত, সম্পদের গুণগতমান কমে যায়। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের সংরক্ষণের সীমা বেড়ে যায়। তৃতীয়ত, ব্যাংকটির আয় কমে যায়। এতে আর্থিক ভিত দুর্বল হয়ে পড়ে। চতুর্থ হলো ব্যাংকটির ঋণের সুদহার বেড়ে যায়। কারণ খেলাপি ঋণের কারণে একটি ব্যাংকের বিনিয়োগযোগ্য তহবিল কমে যায়। এতে বেড়ে যায় তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়। আর এ ব্যয় সমন্বয় করা হয় ঋণের সুদহার বাড়িয়ে আর আমানতকারীদের আমানতের সুদহার কমিয়ে। অর্থাৎ আমানতকারীদের আয় কমে যায় আর বিনিয়োগকারীদের ব্যয় বেড়ে যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App