পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ সংসদের বিশেষ অধিবেশন করোনাভাইরাসের কারণে কাটছাট হবে কি-না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামী বুধবার। এ দিন বিকেলে জাতীয় সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে। এদিন বিকাল ৪টায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কার্য উপদেষ্টা কমিটির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে কমিটির সদস্য প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনাও উপস্থিত থাকবেন। আজ সোমবার সংসদ সচিবালয়ের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে গত ৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর জম্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনের আহ্বান করেন। রেওয়াজ অনুযায়ী অতীতে দেখা গেছে অধিবেশন শুরুর দিন ঘণ্টা খানেক আগে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে অধিবেশনের দিনক্ষণ ও আলোচনার বিষয়বস্তু চূড়ান্ত হয়। কিন্তু এবার অধিবেশন শুরুর বেশ কয়েকদিন আগেই বসছে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক। আর এ বৈঠকে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবের কারণে অধিবেশন কাট ছাট হবে কিনা সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকে মনে। সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ মার্চ বুধবার সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভাকক্ষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

যেহেতু সম্প্রতি বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাই অধিবেশনের কর্মসূচিতে কাটছাট হবে বলেই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে এমনটিও হতে পারে বিশেষ অধিবেশন তাই আগে থেকে সবকিছু ঠিকঠাক করে রাখলে অধিবেশনের দিন কর্মসূচি পালনে সহজ হবে। এছাড়া সকল সংসদ সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে একযোগে সংসদে ঢুকবেন।

এদিকে আশঙ্কা করা হচ্ছে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়তে পারে বিশেষ অধিবেশনে। কেননা এবারের অধিবেশনে বিদেশি অনেক অতিথির সংসদে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানা শোনা বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভূটানের রাজা জিগমে খেশর নামজেল ওয়াংচুক, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ জায়েদ আল নাহিয়ানসহ বেশ কয়েকজন অতিথির। যেহেতু বাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাই শেষ পর্যন্ত অতিথিরা আসবেন কিনা তা নিয়েও ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। এদিকে মুজিববর্ষের সুচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষন দেবার কথা থাকলেও তার সফরসূচি বাতিল হয়েছে।

এ বিষয়ে সংসদের এক কর্মকর্তা বলেন, রাষ্ট্রপতি অধিবেশন আহ্বান করার পর স্থগিত হয়েছে এমন নজির নেই। তাই অধিবেশন হয়তো হবে, তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠানে কাটছাট হতে পারে। তাছাড়া কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশন আহ্বান করার পর সভাপতি সুবিধা মতো সময়ে আহ্বান করতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। এর আগে ১৯৭৪ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১৮ জুন জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন বসেছিল। যেখানে যথাক্রমে সাবেক যুগোস্লোভিয়ার রাষ্ট্রপতি জোসেফ মার্শাল টিটো এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ভাষণ দিয়েছিলেন।