×

পুরনো খবর

গোপন জামিন নিয়ে প্রশ্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২০, ০৯:৫৮ এএম

গোপন জামিন নিয়ে প্রশ্ন

জি কে শামীম

অস্ত্র ও মাদক আইনে করা পৃথক ২টি মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন ‘টেন্ডার মোঘল’ খ্যাত ঠিকাদার জি কে শামীম। গত ৪ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পৃথক ২টি কোর্ট থেকে তিনি জামিন পান বলে জানা গেছে। তার জামিনের লিখিত আদেশ প্রকাশিত হয় ১২ ফেব্রুয়ারি। জি কে শামীমের আইনজীবী শওকত ওসমান জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা বিষয়টি অবগত নয়। এ অবস্থায় অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা প্রভাবশালী ঠিকাদার জি কে শামীমের আগাম জামিনের বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, একটি মামলায় এক বছর ও অন্যটিতে ৬ মাসের আগাম জামিন পেয়েছেন জি কে শামীম। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও দুদকের আরো ২টি মামলা আছে। সেগুলোর জন্যও ইতোমধ্যে হলফনামা করা হয়েছে। শামীমের আইনজীবী শওকত ওসমান জানান, সম্প্রতি অস্ত্র ও মাদক মামলায় তার মক্কেল জি কে শামীম হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। ইতোমধ্যে এই ২ মামলায় জামিননামা ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে দাখিলও করা হয়েছে। ২টি মামলায় জামিন পেলেও জি কে শামীমের বিরুদ্ধে আরো ২টি মামলা আছে। এই ২টি মামলায় এখনো জামিন পাননি তিনি। এ কারণে জি কে শামীম এখনই মুক্ত হচ্ছেন না।

এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ভোরের কাগজকে বলেছেন, তিনিও জি কে শামীমের জামিনের বিষয়টি অবগত নন। তবে রবিবার আদালতে গিয়ে এ বিষয়য়ে খোঁজ নেবেন। যদি জামিনের বিষয়টি সত্যি হয়, তাহলে তিনি পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন। একই সঙ্গে তার জামিন বাতিলের জন্য আপিল করবেন বলে জানান মাহবুবে আলম। এছাড়া সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খানের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জি কে শামীম অন্য মামলা নিয়ে কোর্টে গিয়েছিল, ক্যাসিনো এবং আরো কিছু মামলা ছিল। কিন্তু অস্ত্র মামলার কথা আমার জানা নেই। আমি আদালতে থাকি সারাদিন। আমার জানামতে জি কে শামীমের কোনো মামলার জামিন হয়নি। এটা আমার দেখতে হবে। জামিনের কাগজ পাওয়ার বিষয় উল্লেখ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে একটু কনফার্ম হতে হবে। জজ সাহেব নিজের মতো করে দিয়েছেন কিনা, সেটা আমার দেখতে হবে। ক্যাসিনোর মামলাগুলোর আমরা বিরোধিতা করি বেশি করে। এখানে ভুয়া জামিনও তো বহু হয়েছে। আমি নিজে ধরেছি। এর আগে আরো কয়েকবার জি কে শামীম জামিন আবেদন করলে তা কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন আদালত। এখন যদি জি কে শামীমের জায়গায় অন্য শামীম হয়, হতে পারে। আমাকে আদালতে গিয়ে নিশ্চিত হতে হবে।

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন জি কে শামীম। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মোট ৪টি মামলা হয়। আদালত সূত্র বলছে, ইতোমধ্যে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ঢাকার আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে র?্যাব। অস্ত্র মামলাটি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। মাদক মামলাটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। অস্ত্র মামলায় গত বছরের ২ জানুয়ারি জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। আর গত বছরের ২৭ অক্টোবর জি কে শামীমসহ তার ৭ দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় র‌্যাব।

অস্ত্র মামলায় দেয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার সহযোগীরা উচ্চ বেতনভোগী দুষ্কর্মের সহযোগী। তারা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্রশস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করেছেন। এর মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল ও গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। আসামি শামীম অস্ত্রের শর্ত ভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদক ব্যবসা ও মানিলন্ডারিং করে আসছিলেন।

এছাড়া গত বছরের ২১ অক্টোবর জ্ঞাত আয়বহিভর্‚ত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় শামীমের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৯ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহিভর্‚ত সম্পদ থাকার অভিযোগ আনা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App