×

মুক্তচিন্তা

উগ্রবাদীদের কোনোভাবেই ছাড় নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২০, ০৮:১৬ পিএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যোগদানকে কেন্দ্রে করে বেশ কিছু মৌলবাদী সংগঠন নড়েচড়ে বসেছে। ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলো এ ইস্যুতে রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত করার পাশাপাশি যে কোনো মূল্যে মোদির সফর প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। এমন উগ্রতার রেশ ধরে গত শুক্রবার চট্টগ্রামের পটিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়েকটি হিন্দু বাড়ি ও মন্দিরে আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক-ন্যক্কারজনক। যে কোনো মূল্যে উগ্রবাদীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জোরালো ভ‚মিকা পালন করতে হবে। আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিনে মুজিববর্ষ শুরু হবে সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। আর শেষ হবে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ আরেকটি বড় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। দুটি অনুষ্ঠানেই বিদেশি রাষ্ট্রনায়ক ও মেহমানরা থাকবেন। এরই মধ্যে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে মুজিববর্ষের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে। ১৭ মার্চ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বৃহস্পতিবার নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর থেকে উগ্রবাদীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। ১৯৭১ যাদের অসামান্য অবদানের কথা ভুলবার নয়। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফর এই অনুষ্ঠানকে আরো সাফল্যমণ্ডিত করবে। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক কোনো বিষয় কাজ করে না। জানা যায়, দিল্লিতে সম্প্রতি ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে ঢাকায় মোদির সফর বাতিলে ইসলামী দলগুলো আগামী ১২ মার্চ বিকালে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা করেছে। গত শুক্রবার হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও জাতীয় ইমাম সমাজসহ দেশের সম্মিলিত ৪৮টি ইসলামী দলের নেতারা এক সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন। এদিকে মুজিববর্ষকে ঘিরে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতে ইসলামীও। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাঠোর অবস্থানের মধ্যেও এসব উগ্রবাদী তৎপরতা চালাতে চেষ্টা করছে। বর্তমান সরকার সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। বলা যায় দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের তৎপরতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে মোদিও সফরকে কেন্দ্র করে তারা যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তদারকি জোরদার করতে হবে। চট্টগ্রামের পটিয়ায় ধলঘাট ক্যাম্প সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি অবসানের মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দিকে যাত্রা করার অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ। যে দিন জাতি ধর্ম সম্প্রদায় নির্বিশেষে দেশের সব জনগণ প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক পরিবেশে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে বাস করতে পারবে, সে দিনই আমরা পরিপূর্ণ সফল বলে মনে করব। প্রতিক্রিয়াশীলতার সব বাধাকে অতিক্রম করে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, সাম্যমৈত্রীর বাংলাদেশ গড়ব এ হোক আমাদের অঙ্গীকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App