মাদক চোরাচালান মামলায় ৭৯ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মাদক সম্রাট আমিন হুদা (৪৮) মারা গেছেন।  শুক্রবার (৬ মার্চ)দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবীর চৌধুরী। তিনি জানান, কয়েদি আমিন হুদা দীর্ঘদিন কারাবন্দি ছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় গত বছরের পহেলা আগস্ট তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করে কারা কর্তৃপ। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ (শুক্রবার) মারা গেছেন তিনি। হৃদরোগসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন আমিন হুদা। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আমিন হুদার বাল্যবন্ধু শাখাওয়াত জানান, আমিন হুদা ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই’র আপন ভাগিনা ছিলেন। তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, আমিন হুদা দীর্ঘদিন ধরে নানান রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তার হার্টের সমস্যা ছিল, মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত ও হতাশাগ্রস্থ ছিলেন। কারাগারে থাকা অবসস্থায় তার হার্টে রিং পরানো হয়েছিল। কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাজা হওয়ার পর মাদক সম্রাট আমিন হুদা কারাগারে ছিলেন প্রায় সাত বছর ধরে। এর মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় তিন বছর কাটিয়েছেন হাসপাতালের কেবিনে।

২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর মাদকসহ গ্রেপ্তার হন আমিন হুদা ও তার সহযোগী আহসানুল হক ওরফে হাসান। এরপর গুলশানে তার একটি ফ্যাট থেকে ইয়াবা তৈরির সরঞ্জাম, উপাদানসহ বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। ওই ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা হয়। দুই মামলায় ২০১২ সালের ১৫ জুলাই আদালতের রায়ে আমিন হুদা ও তার সহযোগী আহসানুল হকের বিভিন্ন ধারায় মোট ৭৯ বছর করে সশ্রম কারাদন্ডাদেশ হয়। একই সঙ্গে জরিমানার আদেশও দেয়া হয়।

এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আমিন হুদা হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান। ২০১৩ সালে হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপ আবেদন করলে ওই বছরের ৫ মে আপিল বিভাগ জামিন বাতিল করে তাকে আত্মসমর্পণ করতে ও হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তিনি কারাগারে।