×

সারাদেশ

প্রতীক বরাদ্দের আগেই চলছে প্রচারণা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২০, ০৯:৫১ এএম

প্রতীক বরাদ্দের আগেই চলছে প্রচারণা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (ফাইল ছবি)

নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেদিন প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করবেন সেদিন থেকেই তারা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন। কিন্তু তার কতটুকু মানা হচ্ছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আগামী ৯ মার্চ প্রতীক ঘোষণা করার কথা ইসির। কিন্তু কোনো মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থী কেউই আর অপেক্ষা করতে চাইছেন না। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অমুককে মেয়র পদে, অমুককে কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন দেয়ায় অভিনন্দন, তাদের নির্বাচিত করে জনগণের সেবা করার সুযোগ দেয়ার নানা আবেদনসহ ব্যানার পোস্টার ঝুলছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে। নির্বাচন কমিশনকে এ ব্যাপারে বরাবরই উদার ও নমনীয় হতে দেখা গেছে। এতে মনে হয় নির্বাচনী বিধিবিধান শুধুমাত্র আইনেই সীমাবদ্ধ। প্রসঙ্গত, মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে চট্টগ্রামে ফেরেন রেজাউল করিম চৌধুরী। চট্টগ্রামের পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে চট্টগ্রাম আওয়ামী পরিবারের উদ্যোগে তাকে দেয়া হয় সংবর্ধনা। অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী  ডা. শাহাদাত হোসেন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে চট্টগ্রামে ফেরার পর রেলওয়ে স্টেশনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে পুলিশের অনুমতি না থাকায় তা বাতিল করা হয়। পরে দলীয় কার্যালয় নসিমন ভবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও এ দুই প্রার্থী নানাভাবেই বিভিন্ন সভা সমাবেশে যাচ্ছেন, তাদের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য তাদের সমর্থকরা নাগরিকদের কাছে আবেদন জানাচ্ছেন। যা এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ অবস্থার মধ্যে ব্যানার পোস্টারসহ অন্যান্য প্রচারণা সামগ্রী নিজ উদ্যোগে অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে বারবার নির্দেশনা দেয়া হলেও তাও কেউই মানেননি। বাধ্য হয়ে প্রশাসনের কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এর মধ্যে কিছু এলাকার পোস্টার ব্যানার অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু তা নিতান্তই কম। দেখা গেছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি এই দুটি বড় দলের প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তাদের সংবর্ধনা বা নানা সমাবেশের মধ্য দিয়ে তাদের জয়ী করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রার্থীরা বিভিন্ন পত্রিকা অফিসসহ বিভিন্ন মিডিয়া অফিসগুলোতে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাতের নামে প্রচারণার কৌশল অবলম্বন করছেন। তাছাড়া বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধি ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেখা করে তাদের দোয়া নেয়ার নাম করে সংবাদ মাধ্যমে কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আবার এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো প্রচারণা রয়েছেই। অথচ নির্বাচন কমিশন থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৫ অনুসারে প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্যকোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিনিধি কোনো নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন না। এদিকে আসন্ন চসিক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সব মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী-সমর্থকদের মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসনের ৫টি টিম ৫টি পৃথক অভিযান পরিচালনা করেন। এসব টিম বিভিন্ন এলাকার বাজার, স্কুল-কলেজ-বাড়ির দেয়াল, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে নির্বাচন উপলক্ষে সম্ভাব্য প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে ব্যবহৃত পোস্টার, ব্যানারসহ নিষিদ্ধ প্রচারপত্র অপসারণ করেন। মেয়র ও কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী, বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নামে নির্বাচনী প্রচারণামূলক বিভিন্ন স্থানের দেয়ালে, খুঁটিতে সাঁটানো, ঝুলানো বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন এর অপসারণসহ ম্যাজিস্ট্রেটরা এলাকায় ভোটারগণকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশনা দেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মুনীর হোসেন খানের কাছে প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সজাগ রয়েছি। কেউ যদি সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণসহ আমাদের কাছে অভিযোগ করেন তাহলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থীসহ অনেক কাউন্সিলর প্রার্থী নানা জায়গায় বিভিন্ন সভা সমাবেশে-মতবিনিময় সভায় অংশ নিচ্ছেন, নানা ধরনের অঙ্গীকার করছেন। তাদের পক্ষে বিভিন্নজন ভোট চাইছেন এটিও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে কিনা জানতে চাইলে মুনীর হোসেন খান বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ আসার পরই আমরা ব্যবস্থা নেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App