×

সাময়িকী

জলশিশু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২০, ০৮:০২ পিএম

৫. একদিন টম একটি ক্যাডিস দেখতে পেল। সে ক্যাডিসের ঘর ভেঙে ফেলল। দেখতে চেয়েছিল ক্যাডিসটি ভেতরে কী করছে। ক্যাডিস পাখাযুক্ত এক প্রকার পতঙ্গ, যা সাধারণত জলাশয়ের আশপাশে বাস করে। অন্য ক্যাডিসরা এই অবস্থা দেখে চিৎকার শুরু করে দিল। তারা বলল, ‘তুমি একটি দুষ্ট বালক। এই ক্যাডিসের ঘর তুমি ভেঙেছ, এখন সে মরে যাবে। তোমাকে কে এখানে পাঠিয়েছে আমাদের জ্বালাতে।’ লজ্জা পেয়ে টম সেখান থেকে সাঁতরে অন্যদিকে চলে গেল। কিন্তু অন্য প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করা ছাড়েনি। সে একটি খুঁটির কাছে আসল। এখানে মাগুর জাতীয় মাছেরা থাকে। যখন সে ওগুলোকে ধরতে চেষ্টা করল, তারা তার আঙুলের ফাঁক গলে পালিয়ে গেল। সে তাদের ধাওয়া করতে করতে উপস্থিত হলো একটি ঘন অন্ধকার স্থানে। জায়গাটি একটি এলভার গাছের মূলের নিচে। সেখান থেকে একটি বিশাল আকারের বাদামি মাগুর বের হয়ে আসল। সে টমের মুখোমুখি হলো এবং তাকে ধাক্কা দিল। মুখ ভার করে সে সেখান থেকে চলে গেল। আর এক জায়গায় সে একটি অত্যাশ্চর্য প্রাণী দেখতে পেল। ওটি আকারে তার অর্ধেক। কিন্তু খুব বিশ্রী এবং নোংরা। প্রাণীটির ছয়টি পা, একটি বড় পাকস্থলী, মাথায় দুটি বিশাল চোখ এবং মুখটা গাধার মাথার মতো। ‘তুমি কি বিশ্রী জিনিস!’ টম নিষ্ঠুরভাবে মন্তব্য করল। প্রাণীটি হয়তো বুঝতে পেরেছে ভাষা। সে টমের নাকের কাছে নাক নিল এবং তার মুখোমুখি হলো। ওই প্রাণীটির মাথা থেকে একটি লম্বা বাহু বের হলো, যেটির মাথায় খোঁচা দেওয়ার মতো সুচালো অংশ আছে। প্রাণীটি টমকে নাক দিয়ে শক্তভাবে ধরে রাখল। বিরক্ত হয়ে টম বলল, ‘আমাকে ছেড়ে দাও।’ ‘তাহলে আমাকেও যেতে দাও।’ প্রাণীটি বলল, ‘আমি শান্তিতে থাকতে চাই। আমি একা থাকতে চাই। আমি টুকরো টুকরো হতে চাই।’ টম প্রতিশ্রæতি দিল প্রাণীটিকে ছেড়ে দিতে। ওটিও টমকে ছেড়ে দিল। টম বলল, ‘তুমি টুকরো টুকরো হতে চাও কেন?’ ‘কারণ আমার সব ভাই ও বোনেরা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়েছে। তারা পাখাযুক্ত সুন্দর প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। আমিও তাদের মতো হতে চাই। এখন আমার সঙ্গে কথা বলো না। আমি এখন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাব।’ টম দেখল প্রাণীটি ফুলে ফেঁপে উঠছে। এক সময় এটি মাথা পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফুলে গেল। এরপর এর ভেতর থেকে বের হয়ে গেল একটি খুবই সুন্দর নরম প্রাণী। কিন্তু এটি খুব ফ্যাকাসে ও দুর্বল। খুব আস্তে আস্তে এটি পা নাড়াচ্ছিল। ধীরে ধীরে এটি পানির উপরের একটি ঘাসের ডগায় উঠতে শুরু করল। টম বিস্ময়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। টম প্রাণীটিকে অনুসরণ করে উঁকি দিয়ে দেখতে লাগল শেষ পর্যন্ত কী হয়। প্রাণীটি যখন উপরে উঠে উজ্জ্বল সূর্যালোকে বসল, তখন একটি আশ্চর্য পরিবর্তন দেখা দিল। অল্প সময়ের মধ্যে এটি সুস্থ হয়ে উঠল। তার শরীরে যেন সুন্দর রঙের মেলা বসে গেল। নীল, হলুদ এবং কালো ফোঁটা, লম্বা দাগ এবং গোলাকার রিঙের মতো ছোপ। পিঠ থেকে বের হলো চারটি বড় আকারের উজ্জ্বল বাদামি রঙের পাখা। মনে হচ্ছে দশ হাজার হীরার ঝলকানি। ‘তুমি খুব সুন্দর প্রাণী।’ টম কথাটি বলে তাকে ধরতে চেষ্টা করল। কিন্তু এটি বাতাসে উড়ে গেল এবং কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে এসে নির্ভয়ে টমের পাশে বসল। ‘না।’ প্রাণীটি বলল, ‘তুমি আমাকে ধরতে পারবে না। এখন আমি ড্রাগনমাছি। সকল মাছির রাজা। আমি সূর্যালোকে নৃত্য করব। ডুমোমাছি ধরব এবং আমার মতো একটি সুন্দর সঙ্গিনী পাব।’ এই বলে সে উড়তে শুরু করল। মাছি ধরা শুরু করল। টম চিৎকার করে বলল, ‘দয়া করে ফিরে এসো। আমি এখানে খুবই একা। আমার সঙ্গে খেলা করার কেউ নেই। আমি কথা দিচ্ছি তোমাকে আর ধরার চেষ্টা করব না। দয়া করে ফিরে এসো।’ ‘তুমি কী করবে, না করবে তাতে আমার কিছু আসে যায় না। কারণ, তুমি আমার কিছুই করতে পারবে না।’ ড্রাগনমাছি বলল, ‘তবে আমি যা কিছু খাব আর সুন্দর যা কিছু দেখব, তোমাকে এসে সব বলব। আমার ভ্রমণের বিবরণ দেব।’ সে সত্যিই এসেছিল। সে যা কিছু দেখেছিল তার সম্পর্কে কথা বলতে খুবই আগ্রহী ছিল। সে গাছে এবং সমতলভ‚মিতে অনেক সুন্দর জিনিস দেখেছে। টম ওগুলো শুনতে খুবই আগ্রহী হলো। কারণ, সে সবকিছু ভুলে গেছে। তারা এভাবে অল্পদিনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে গেল। ৬. টম ওইদিন একটি শিক্ষা পেয়েছিল এবং এরপর দীর্ঘদিন আর কোনো প্রাণীকে বিরক্ত করেনি। ক্যাডিস সাধারণত খুবই ভীতু প্রাণী। তারা টমকে গল্পে কীভাবে তাদের ঘর তৈরি হয়, তাদের চামড়ার পরিবর্তন হয়, অবশেষে কীভাবে পাখাযুক্ত মাছিতে পরিণত হয় সব বলল টমকে। টম তার ত্বক সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে এবং তাদের মতো পাখাযুক্ত হতে ইচ্ছে প্রকাশ করল। টম যে এক সময় মাগুরকে বিরক্ত করেছিল তা মাগুরেরা ভুলে গেল। এখন টমের সঙ্গে তারা খেলা করছে। নানাভাবে আনন্দ করছে। টম প্রথম প্রথম তাদের মাছি ধরে দিত। কিন্তু পরবর্তীতে মাছি আর ধরে না। ওই ছোট্ট মাছিরাও এক সময় তার বন্ধু হয়ে গেল। একদিন টম একটি নতুন অভিযান শুরু করল। শুরু করল বললে ভুল হবে, নতুন অভিযানে মেতে উঠল। টম এবং ড্রাগনমাছি একটি শাপলা পাতার ওপর বসে আছে। তারা বসে বসে দেখছিল অন্য একটি মাছির নৃত্য। হঠাৎ টম নদীতে অদ্ভুত এক শব্দ শুনল। তা ছিল কখনও ঘুঘুর ডাকের মতো, কখনও খোঁৎ খোঁৎ, কখনও আর্তচিৎকার এবং কখনও তীব্র যন্ত্রণাকাতর। মনে হচ্ছে একটি ব্যাগের মধ্যে দুটি ঘুঘু, নয়টি ইঁদুর, তিনটি গিনিপিগ আর একটি অন্ধ কুকুরের বাচ্চা একসঙ্গে শব্দ করছে। টম দেখল একটি বল নদীর ওপর দিয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। বলটিকে কখনও মনে হচ্ছে বাদামি পশম, আবার কখনও মনে হচ্ছে চকচকে কাচ। এক সময় বলটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। তারপর আবার জোড়া লেগে গেল। আবার শব্দ আসতে লাগল। ধীরে ধীরে শব্দ বাড়তে লাগল। ড্রাগনমাছি বলতে পারল না, এটি কিসের শব্দ। কারণ, সে কানে কম শোনে। তাই টম নিজেই শুধু দেখতে লাগল। যখন সে কাছে আসল, তখন সে দেখল বলটি চার-পাঁচটি সুন্দর প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। ওইগুলোর প্রতিটি টমের চেয়ে কয়েক গুণ বড় হবে। তারা সাঁতার কাটছিল, গড়াগড়ি দিচ্ছিল। লাফ দিচ্ছিল খুব সুন্দরভাবে। কিন্তু ওসবের মধ্যে সবচেয়ে বড়টি যখন টমকে দেখল, তখন সে চিৎকার করে উঠল, ‘ছেলেমেয়েরা, তোমরা তাড়াতাড়ি এসো, এখানে খাবার জিনিস পাওয়া গেছে।’ বলেই সে টমের কাছে এল। তার একজোড়া দুষ্টু চোখ এবং এক সেট ধারালো দাঁত দেখে টম পানিতে ডুব দিল। প্রাণপণ চেষ্টার পর জলের গভীরে চলে গেল। জলের একদম তলায় গিয়ে সে ফিরে দাঁড়াল। চোখে চোখ রেখে প্রাণীটিকে দেখতে লাগল। ‘বেরিয়ে এসো।’ দুষ্ট ভোঁদর বলল। কিন্তু টম দুটো মোটা শিকড়ের ওপাশ থেকে তার দিকে তাকাল। যেমনভাবে সে শহরে থাকার সময় বয়স্ক মহিলাটির দিকে তাকাত। ‘এদিকে চলে এসো।’ বিরক্ত হয়ে ভোঁদর বলল, ‘এটি আমাদের উপযুক্ত খাবার নয়।’ তারপর সে টমের দিকে তাকাল। ‘তুমি এখানে থাকো, যতক্ষণ পর্যন্ত না স্যামন মাছ তোমাকে খায়। তারা তোমাকে খাবে আর আমরা স্যামন মাছ খাব। ভারি মজা হবে।’ টম জিগ্যেস করল, ‘স্যামন কী?’ ভোঁদর উত্তর দিল, ‘মাছ, ভালো মাছ, খেতে খুব মজা। আমরা তাদের শিকার করে এক পাশে নিয়ে আসি।’ আবার বাচ্চার দিকে ফিরল ভোঁদর। ‘শোনো, আমি বৃষ্টির গন্ধ পাচ্ছি। স্যামনদের আসার সময় হয়ে গেল। কী মজা, সারাদিন তাজা স্যামন খাব। কী মজা, কী মজা!’ ‘তারা কোত্থেকে আসে?’ টম খুব অবাক হয়ে জিগ্যেস করে। ‘তারা সমুদ্র থেকে আসে। ওখানে তারা নিরাপদে থাকে। কিন্তু বোকা মাছগুলো নদীতে চলে আসে। আমরা তাদের লক্ষ করি। তারা যখন ফিরে যায় তাদের অনুসরণ করি। এটি একটি সুন্দর জীবন হতো, যদি মানুষ না থাকত।’ ‘মানুষ কী?’ টম জিগ্যেস করল। ‘দুই পেয়ে প্রাণী। প্রকৃতপক্ষে দেখতে অনেকটা তোমার মতো।’ ভোঁদর টমকে বলল, ‘তারা মাছ ধরার জন্য বড়শি ব্যবহার করে, চিংড়ি ধরার জন্য খাঁজে বাক্স বসিয়ে রাখে। তারা আমার স্বামী বেচারাকে এক ধরনের ওষুধ ছিটিয়ে অজ্ঞান করে ধরে নিয়ে গেছে।’ ভোঁদর যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাতটি কুকুর চিৎকার করতে করতে ছুটে এল। ভোঁদরের পেছন পেছন তীরের দিকে ছুটে গেল টম। নিজেকে আড়াল করে রাখল শাপলা পাতার পেছনে। সে বুঝতে পারল না যে জলপরীরা তাকে সাহায্য করতে এসেছে। ৭. ভোঁদর টমকে যা যা বলল কিছুই ভুলল না। টম ভোঁদরের কাছে জেনেছে নদীর কথা, সমুদ্রের কথা, স্যামন মাছের কথা আর জলের নিচের বিচিত্র জীবের কথা। টম সমুদ্রের সেই মাছগুলোকে দেখতে উৎসাহী হয়ে রইল। সে এ বিষয়ে যত চিন্তা করে তত অস্বস্তি বাড়ে তার। রুপোলি জলের ধারায় বসবাস করা টমের অন্যান্য সাথীরাও অস্বস্তি বোধ করে। একদিন সে রুপোলি সেই ছোট্ট নদী থেকে যাবার জন্য যাত্রা করল। পানি খুবই কম। যখন সে পানির ওপরের দিকে আসল তখন সূর্যের তেজে তার পিঠ পুড়ে গেল। সে অসুস্থ হয়ে পড়ল। আবার ফিরে গেল সে। একটি খুঁটিতে পুরো এক সপ্তাহ শুয়ে কাটাল। তারপর খুব গরমের দিনের এক সন্ধ্যায় মুষলধারে বৃষ্টি নামল। পানিতে ফেনা জমে গেল। ছোট্ট নদী ফুলে ফেঁপে উঠতে লাগল। এখন ছোট্ট নদীকে বিশাল সমুদ্র বলে মনে হলো তার। টম স্রোতের বিপরীতে খুব কষ্টে নিজেকে ধরে রাখল। সে একটি পাথরের পেছনে লুকাল। কিন্তু মাগুর লুকায়নি। তারা পাথরের আড়াল ছেড়ে বের হলো এবং গুবরেপোকা, কীটপতঙ্গ ধরে ধরে গিলতে লাগল। নদীর তলায় ছিল বড় বাইন মাছ। তারা কয়েক সপ্তাহ যাবৎ তলার পাথরের খাঁজে লুকিয়ে ছিল। কিন্তু এখন তারা বেরিয়ে এল এবং তাকে বলতে লাগল, ‘সমুদ্রে চলো, সমুদ্রে চলো।’ ভোঁদর এসে টমকে দেখে বলল, ‘এখন তোমার দুনিয়া দেখার পালা। ‘বাচ্চারা এসো, এই জঘন্য বাইন মাছের আখড়া থেকে চলে যাই। আগামীকাল সকালের নাশতার জন্য আমরা স্যামন ধরব। সমুদ্রে চলো!’ ‘সবাই সমুদ্রে চলে যাচ্ছে। আমিও যাব।’ টম বলল। স্রোতের ধাক্কায় পানির তাড়ায় টম ধীরে ধীরে নিচের দিকে চলে যেতে লাগল। পানির গজর্নে টমের কান ফেটে যাওয়ার উপক্রম হলো। কিন্তু সেদিকে তার নজর নেই। প্রচণ্ড স্রোত টমকে এবং পাশের ঘুমন্ত গ্রামগুলোকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। যখন দিনের আলো ফুটল, টম দেখতে পেল সে স্যামন মাছে ভরা নদীতে চলে এসেছে। সে এমন একটি জায়গায় চলে এসেছে, যেখানে নদী প্রশস্ত হয়ে গেছে। এত প্রশস্ত যে টম যখন পানির ওপর মাথা তুলল তখন সে নদীর ক‚ল দেখতেই পেল না। টম থামল। কারণ সে কিছুটা ভয় পেয়েছে। এটি অবশ্যই সমুদ্র হবে। সে ভাবল, আমি এখানে থামব এবং ভোঁদরদের বা বাইনদের খুঁজব। আমি একা হলে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ভোঁদর আর বাইন তখন কয়েক মাইল ভাটিতে চলে গেছে। টম একটি পাথরের খাঁজে ঢুকে অপেক্ষা করতে লাগল। সেখানে সে ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ল। সে জেগে দেখল, তখনও পানি অনেক বেশি। হঠাৎ সে একটি দৃশ্য দেখে লাফ দিয়ে উঠল। তারচেয়ে কমপক্ষে একশত গুণ বড় একটি মাছ এগিয়ে আসছে। মাছটি মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত রুপোলি। টম বুঝে গেল, এটি মাছের রাজা স্যামন না হয়ে যায় না। টম খুব ভয় পেয়ে একটি গর্তে ঢুকে আত্মগোপন করতে চাইল। কিন্তু তার কোনো প্রয়োজন ছিল না। কারণ স্যামন খুবই অভিজাত ও মহৎ। এমনকি খাঁটি ভদ্রলোকের মতো তারা কখনও কারও সঙ্গে ঝগড়া করে না। নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে আর নিষ্ঠুর প্রাণীকে এড়িয়ে চলে। মাছটি টমকে দেখল এবং তাকে খেয়াল না করার ভঙ্গিতে চলে গেল। তারপর আরও স্যামন আসল এবং চলে গেল। মাঝেমধ্যে তারা পানির ওপর লাফিয়ে ওঠে। উজ্জ্বল সূর্যের আলোতে তাদের চমৎকার ঝলমল দেখায়। টম এত আনন্দিত হলো যে সারাদিন তার ওই দৃশ্য দেখতে ইচ্ছে করল। সবশেষে আসল সবার বড় মাছটি। সে আসল আস্তে আস্তে। উত্তেজিতভাবে পেছন ফিরে বারবার তাকাচ্ছে। টম দেখল ওই বড় স্যামনটি অন্য স্যামনকে সাহায্য করছে। বড় স্যামন তার সঙ্গীদের বলল, ‘বন্ধুগণ তোমরা খুবই ক্লান্ত। ওই পাথরের পেছনে বিশ্রাম নাও।’ তারপর টম যে পাথরের ফাঁকে ছিল সে পাথরে বসল। অতঃপর সে টমের দিকে তাকাল হিংস্রভাবে, যেন সে টমকে খেয়ে ফেলবে। ‘তুমি এখানে কী চাও?’ বড় স্যামন জিগ্যেস করল। ‘আমাকে আঘাত করো না।’ টম তাড়াতাড়ি বলল, ‘আমি শুধু তোমাকে একটু দেখছি। কারণ তুমি দেখতে খুবই সুন্দর।’ ‘আচ্ছা, আচ্ছা, আমি এখন বুঝতে পারছি তুমি কে হে বন্ধু।’ ভদ্রস্বরে বলল স্যামনদের নেতা, ‘আমি এর আগে অনেক ছোট প্রাণীকে দেখেছি। তারা খুবই ভদ্র হয়ে থাকে। এক সময় একটা ছোট প্রাণী আমার খুবই উপকার করেছিল। আমি তার একটি প্রতিদান দেওয়ার আশা করি।’ ‘তাহলে তুমি আমার মতো কাউকে এর আগে দেখেছিলে!’ ‘অনেকবার। গতরাতে একজন আমাকে সতর্ক করেছিল। তাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের পথ দেখিয়েছিল।’ টমকে অন্য স্যামনদের সম্পর্কে সাবধান করে দেওয়ার পর নেতা স্যামন মাছটি আবার উপরের দিকে যেতে লাগল। টম তীর বরাবর নিচের দিকে নামতে লাগল। ৮. যেতে যেতে এক অদ্ভুত অভিযানের স্বাদ পেল টম। সেটি ছিল সেপ্টেম্বরের এক নির্মল রাত্রি। (চলবে)

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App