×

মুক্তচিন্তা

ছিনতাইকারীদের বিপজ্জনক দৌরাত্ম্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২০, ০৭:৪২ পিএম

বেড়ে গেছে ছিনতাই, রাহাজানি, ডাকাতি। ছুরি, চাপাতি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে প্রতিদিনই ঢাকা মহানগরীর কোথাও না কোথাও ছিনতাই করা হচ্ছে। বিশেষ করে মাঝরাত থেকে ভোর পর্যন্ত অন্ধকারাচ্ছন্ন সড়ক, ফ্লাইওভার, লঞ্চ ও বাস টার্মিনালের আশপাশের এলাকায় হরহামেশাই ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। এ কাজে বাধা দিলে হত্যা করতেও পিছপা হচ্ছে না ছিনতাইকারীরা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৩৮টি চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চুরির ঘটনা ঘটে তেজগাঁও বিভাগে (২৮টি)। ২০১৯ সালে রাজধানীতে ১৫৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চুরির ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৫১৭টি। ডাকাতি হয়েছে ২১টি। শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের অন্যান্য এলাকায়ও বেড়েছে ছিনতাইকারী ও ডাকাতদের দৌরাত্ম্য। ফলে সারাদেশে ঘরে-বাইরে মানুষ ভুগছে নিরাপত্তাহীনতায়। এ রকম উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পেরেছে এ কারণে যে, ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা যত ঘটছে, সে তুলনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার, বিচার ও শাস্তির ঘটনা খুবই কম। বিচারহীনতার পরিবেশে সব অপরাধীর সাহস বেড়ে চলে। জানা গেছে, জামিন পেয়ে আবার একই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তারা। ছিনতাই রোধে পুলিশ কার্যকর কোনো ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, অনেক চক্র ধরাও পড়ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রশাসনের এত প্রচেষ্টা সত্তে¡ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে কেন, তা একটি দুর্বোধ্য বিষয়। পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে সহযোগী একটি পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর প্রায় অর্ধশতাধিক স্পটে ছিনতাই নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পুলিশ স্থানগুলো চিহ্নিত করতে পারলেও ছিনতাই ঠেকাতে পারছে না। আমরা লক্ষ করছি প্রতি বছরই রমজানের সময়টাতে অর্থাৎ ঈদের বাজারকে টার্গেট করে বেড়ে যায় ছিনতাই। এবারো রমজানের কাছাকাছি সময় থেকেই দেখা যাচ্ছে ছিনতাইকারীসহ এ ধরনের অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য। মানুষের নির্বিঘ্নে পথচলার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। বিশেষ করে ভোরে এবং সন্ধ্যার পর তাদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। বেপরোয়া ছিনতাইয়ের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর জন্য একটি উদ্বেগজনক বিষয়। জননিরাপত্তার স্বার্থে ছিনতাইকারীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। রমজান সামনে রেখে ছিনতাই চক্রকে ধরা ও জননিরাপত্তা রক্ষায় বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, র‌্যাব ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। ছিনতাই রোধে অবশ্যই ছিনতাইকারীদের ধরে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ছিনতাইকারীদের জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো ছিনতাইয়ে জড়িত হওয়া খুবই উদ্বেগের। এ ধরনের ঘটনার আইনি প্রতিরোধের কথাও সংশ্লিষ্টদের ভাবা দরকার। সহজে জামিনে বেরিয়ে এসে তারা যেন আবার এসব অপরাধে জড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থাকে জোরালো করার কোনো বিকল্প নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App