×

অর্থনীতি

মুজিববর্ষে মোবাইল অ্যাপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২০, ০৪:০৭ পিএম

মুজিববর্ষে মোবাইল অ্যাপ

মোবাইল অ্যাপ

মুজিববর্ষে মোবাইল অ্যাপ চালু করবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। আগামী ১৭ মার্চ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে প্রথম মোবাইল অ্যাপ চালু করবে ব্যাংকটি। এটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে প্রথম মোবাইল অ্যাপ হবে। এ অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহক সহজে অর্থ লেনদেন করতে পারবেন।

বুধবার (৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের বার্ষিক সম্মেলন-২০২০-এ কথা জানান ব্যাংকটির চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী।

সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, আমরা এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। আগামী এপ্রিল থেকে প্রত্যেক ব্যাংক ৯ শতাংশ ঋণ বিতরণ করবে। এখন আমরা যদি অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে বেশী সেবা দিতে না পারি তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। সেবাগত এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, এ মুহূর্তে করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমরা আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এজন্য এ বছরের মধ্যেই মোবাইল অ্যাপ, এজেন্ট ব্যাংকিং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস এবং রেমিট্যান্স আনার বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে সোনালী ব্যাংক।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ব্যাংকের সিইও অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী প্রমুখ।

মোবাইল অ্যাপ সম্পর্কে ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং অনুমোদন নেয়া আছে। প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা পৌঁছে দিতে শিগগিরই কাজ শুরু করবে। এ সেবার মাধ্যমে রেমিট্যান্স দ্রুত গ্রহকের কাছে পৌঁছে দেয়া যাবে। পাশাপাশি মুজিববর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের এক লাখ টাকা করে সম্মাননা দেয়াসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। জিয়াউল হাসান বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও আইএমএফের (বিশ্ব মুদ্রা তহবিল) পূর্বাভাস এ বছর বিশ্ব প্রবৃদ্ধি কমবে। করোনাভাইরাসের কারণে আমদানি-রফতানি কমে যাবে। এতে করে আয় কমে যাবে। তাই এখন আমাদের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মুজিববর্ষে আর্থিকভাবে যেন আমরা পিছিয়ে না যাই, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এখন বিশ্বব্যাপী একটি ভিন্ন রূপে চিত্র দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে দিয়েও ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশের কাতারে যেতে চাই। তাই সচেতনতার সাথে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

শেরাটন শাখার হলমার্ক কেলেঙ্কারির ভয় সোনালী ব্যাংক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। তিনি বলেন, সেই ঘটনার পর থেকে এখনো ঋণ বিতরণে দ্বিধাগ্রস্থ থাকেন কর্মকর্তারা। কিন্তু এটা থাকা উচিত নয়। ব্যাংক ব্যবসায় এগুলো থাকবেই। বিতরণকৃত ঋণ কখনো সন্দেহজনক, কখনো মন্দ মানের হবেই। কিন্তু তাই বলে ঋণ দেয়ার বন্ধ করবেন নাকি? এটা সোনালী ব্যাংকের একটি সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

গভর্নর বলেন, বিভিন্ন সূচকে আগের বছরের তুলনায় সোনালী ব্যাংক অনেক ভালো করেছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনা পর্যাপ্ততা সহ বিভিন্ন সূচকে সোনালী ব্যাংকের পারফরম্যান্স ভালো। সামনে এগিয়ে যেতে ভালোবাসার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের মধ্যে এক অনন্য উচ্চতায় উঠে এসেছে। তবে এর মধ্যে ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যাংকিং খাতের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। সুতরাং এই ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অনেক। বর্তমানে দেশের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৪ হাজার কোটি টাকা। যা মোট বিতরণের ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। একটি দেশের অর্থনীতির জন্য এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে সেপ্টেম্বর শেষে এটা অনেক বেশি ছিল। খেলাপি কমিয়ে আনতে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ১০ বছর মেয়াদী রিসিডিউল পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার প্রতি অভিযোগ এনে গভর্নর বলেন, দেশি ও বিদেশি কিছু গবেষণা সংস্থা দেশের মোট ক্ষতিগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করছে অবলোপন এবং রিসিডিউল এর টাকা। কিন্তু রিসিডিউল একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রকৃতপক্ষে দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক কম। বিশ্ব অর্থনীতির কথা চিন্তা করে সচেতনভাবে ঋণ বিতরণ এবং খেলাপি ঋণ থেকে আদায়ের প্রক্রিয়া জোরদার করার আহ্বান জানান গভর্নর। এজন্য উৎপাদনশীল খাতে ঋণ বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট খাত বা ব্যক্তির কাছে জাতের ইন কেন্দ্রীভূত হয়ে না যায় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

ব্যাংক টু ব্যাংক এলসি খোলার ক্ষেত্রে বেকারদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর। এটা যেন পরবর্তীতে ফোর্স মনে পরিণত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ ব্যাংকের জন্য এটি একটি বোঝা।

সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান জানান, সোনালী ব্যাংকের এবছরের স্লোগান ' দীপ্ত শপথ মুজিববর্ষে, আমরা যাবো সবার শীর্ষে'। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ব্যাংকিংখাতে আমরা শীর্ষে যেতে চাই। মুখে নয় কাজে বাস্তবায়ন করে আগামী বছরে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক অংকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে বলেও প্রত্যাশা রাখেন তিনি। ২

০১৯ সালে সরকারি ব্যাংক গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেছে সোনালী ব্যাংক। কিন্তু ৫২ টি সেবার মধ্যে ৩৭ টি সেবা বিনামূল্যে দেওয়ার কারণে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা মুনাফা কম হয় বলেও জানান তিনি। এসব সেবার মান আরো উন্নত করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

https://www.youtube.com/watch?v=U9C50P8xQ_E

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App