×

জাতীয়

বড়পুকুরিয়ায় ৫ লাখ টন কয়লা আত্মসাৎ

Icon

nakib

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২০, ১০:২০ এএম

বড়পুকুরিয়ায় ৫ লাখ টন কয়লা আত্মসাৎ

কয়লা। ফাইল ছবি

কনজুমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর তদন্ত কমিটি দাবি করেছে, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে ৫ দশমিক ৪৮ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাৎ করা হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার পর দায়েরকৃত মামলা চলাকালীন অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দিতে জ¦ালানি বিভাগ চুরি যাওয়া কয়লা ‘সিস্টেম লস’ হিসেবে চালিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছে। গতকাল মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। তদন্ত কমিশনের সদস্যরা মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ার সময় চলা প্রশাসনিক তৎপরতার কঠোর সমালোচনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কমিটির প্রধান, কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বড়পুকুরিয়ার ঘটনাকে দুর্নীতি বললে কম বলা হবে। এটি আসলে পুকুরচুরি ছাড়া আর কিছু না। এখান থেকে ৫ দশমিক ৪৮ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আত্মসাৎ হয়েছে। সরকার গোঁজামিল দিয়ে মানুষকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করছে। এখন সরকারের উচিত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ছাড় না দেয়া। আমরা আমাদের প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তর করব। সরকার কি সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাদের ব্যাপার।

তদন্ত কমিটির সদস্য ও ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, এই ঘটনার আগেও ৩০০ টন কয়লা চুরি হয়েছে। সেই ঘটনাটিও ধামাচাপা দেয়া হয়। এখন এই পুকুর চুরির ঘটনাটিও ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে। খনি সম্পদ রক্ষা ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় বড়পুকুরিয়ার কর্মকর্তা-কর্মচারী, পরিচালনা বোর্ড, পেট্রোবাংলা, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগও ব্যর্থ হয়েছে। দুদকের অভিযোগপত্রে বিসিএমসিএল’র ৭জন এমডিসহ ২৩ জন অভিযুক্ত। ক্যাবের কমিশন মনে করে, ২৩ জনের সঙ্গে পেট্রোবাংলা, জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযোগভুক্ত হবেন। তারাও দায় এড়াতে পারেন না।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, পেট্রোবাংলার মতে কয়লা সরবরাহের সিস্টেম লস ১ দশমিক ৫ শতাংশ ধরে নিলেও আত্মসাতের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, উৎপাদনের শুরু থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত বিসিএমসিএল চুক্তিতে গ্রহণযোগ্য ৫ দশমিক ১ শতাংশ ময়েশ্চার (পানি) ধরে ১০১ দশমিক ৬৬ লাখ মেট্রিক টন কয়লার বিল পরিশোধ করা হয়। একই পরিমাণ কয়লা চীনা কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে প্রাপ্ত কয়লার পরিমাণ হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে কয়লার গড় ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চার ছিল। ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চারে বিসিএমসিএল কর্তৃক প্রাপ্ত কয়লার পরিমাণ হয় ১০৭ দশমিক ৩১ লাখ টন-যা বিসিএমসিএল এর রেকর্ডভুক্ত কয়লার চেয়ে বেশি। এর অর্থ বিসিএমসিএল গৃহীত কয়লার পরিমাণ ১০১ দশমিক ৬৬ লাখ টনের বেশি। কিন্তু ১০ দশমিক ৫ শতাংশ ময়েশ্চারে গৃহীত কয়লার পরিমাণের কোনো রেকর্ড নেই। ক্যাবের কমিশনের হিসাবে বলা হয়, বিসিএমসি কয়লা বিক্রি করে ১০০ দশমিক ২২ লাখ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী ঘাটতি দেখায় ১ দশমিক ৪৪ লাখ মেট্রিক টন। কিন্তু কমিশনের হিসাবে একটি ৭.০৯ লাখ টন।

সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক এমএম আকাশ, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ও প্রফেসর সুশান্ত কুমার দাস বক্তব্য রাখেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App