×

মুক্তচিন্তা

নগরপিতাদের কাছে প্রত্যাশা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২০, ০৮:২০ পিএম

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নগরপিতা হিসেবে শপথ নিয়েছেন ঢাকার দুই মেয়র। শতবর্ষ পরিকল্পনা নিয়ে কোনো নগরপিতা এই পর্যন্ত এই চেয়ারে বসতে পারেননি। যারা বসেছেন তারা গতানুগতিক নগর পরিকল্পনায় নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। যা দেখে আমরা নগরবাসী হিসেবে আশাহত হয়েছি। আমরা অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা শক্ত অবস্থানে আছি। এই যে দুরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অর্থের যা প্রয়োজন তা আমরা বহন করতে সক্ষম। তবুও যেন যোগ্যতার অভাবে অথবা সদিচ্ছা অভাবে এগিয়ে যেতে পারছি না। এই দুটি বিষয় নগরবাসীকে প্রতিদিন সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমান সময়ে যেন অভিশাপের মতো লেগে আছে এ বিষয় দুটি। মুক্তির হাতছানি যেন এখনো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। যা থেকে বাঁচতে নানাবিধ পরিকল্পনা জরুরি। জলাবদ্ধতা যেন আরেক অভিশাপ। বর্ষার দিনগুলো ঢাকাবাসীর জন্য অভিশাপ হয়ে আবির্ভাব করে।

সঠিক নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকার কারণে এ সমস্যা সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ সমস্যার পেছনে রয়েছে আরো অনেক সমস্যা তা হলো রোগের প্রাদুর্ভাব। যা নগরবাসীর জন্য দুঃখের আরেক নাম হয়ে দাঁড়ায় জলাবদ্ধতা। তার পাশাপাশি অনেক জায়গায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। গত বছর দেখেছি মানুষ সুপেয় পানির জন্য ওয়াসার এমডির রুমে গিয়ে প্রতিবাদ করেছে। সুস্বাস্থ্যের জন্য সুপেয় পানির বিকল্প নেই। কিন্তু সেই জায়গায়ও আমরা ঢাকাবাসী অনেকটা পিছিয়ে আছি। যা ছাড়া চলা সম্ভব নয়। তবুও দিনের পর দিন পানির জন্য যেন যুদ্ধ করে বাঁচতে হচ্ছে। নগরবাসী মুক্তির পয়গাম পেতে চায় এই নগরপিতাদের কাছ থেকে। একটি সুস্থ পরিবেশে বাঁচার জন্য স্বপ্ন সবাই দেখে। সেই স্বপ্ন ঢাকাবাসী হাজারও সীমাবদ্ধতার মধ্যেও দেখে। কিন্তু নগর পরিকল্পনা অদক্ষ মানুষের কাছে থাকার কারণে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আর সে স্বপ্ন পূরণে নগরপিতার যেমন দায়িত্ব রয়েছে ঠিক তেমনি আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে।

কিছু দিন আগে আমরা দেখেছি সিলেটের মাজারের রাস্তা কত সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। নেই কোনো বিদ্যুতের খুঁটি নেই কোনো ডিশের লাইন কিংবা অন্য কিছুর লাইন। সব কিছু মাটির নিচে দিয়ে নেয়া হয়েছে। দৃশ্য দেখে মনে হয়েছে এ যেন বিদেশের কোনো নগরীর দৃশ্য। যা আমাদের জন্য আশার আলো ছাড়াচ্ছে বলে মনে করে নগরবাসী। আমরা জানি সেই রোড ম্যাপ নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে ঢাকাকেও তার বিহীন ঢাকা করা সম্ভব। যা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো মনে হলেও তা অসম্ভব কিছু নয়। এমন করলে যে পরিবেশের স্বপ্ন আমরা দেখি তা বাস্তবে দেখতে পাব। আর তা সম্ভব শুধু সদিচ্ছা আর কিছু নয়। পরিচ্ছন্ন ঢাকাকে সাজাতে গত নগরপিতা যে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। যেমন সমান দূরত্ব বজায় রেখে ডাস্টবিন স্থাপন করে। যাতে পথচারীরা ময়লা রাস্তায় না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলে। পরিবেশটা সুন্দর থাকে কিন্তু চিত্রটা আমরা ভিন্ন দেখেছি। যা খুবই দুঃখজনক। ময়লা যেখানে ফেলানোর কথা সেখানে তো ফেলিইনি বরং অনেক জায়গায় ডাস্টবিনকে উধাও করে দিয়েছি।

শুধু তাই না, ডাস্টবিনে ময়লা না ফেলে তার নিচে ফেলে রেখেছি। একটা কথা মনে রাখতে হবে নগরপিতারা যত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাক না কেন। সেটার দেখাশোনা এবং তার সঠিক ব্যবহার করার দায়িত্বটা আমাদের। তা না হলে পরিকল্পনা যাই হোক না কেন যে সুন্দর সৌন্দর্যের স্বপ্ন দেখি তা কখনো বাস্তবায়ন হবে না। আসলে দুইয়ের সমন্বয়ে অবাসযোগ্য নগরী বাসযোগ্যে পরিণত হবে। আর এর পেছনে কতটুকু আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে হবে তা সবার বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম।

কুষ্টিয়া। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App