×

সম্পাদকীয়

সাগর-রুনি খুনের রহস্য বের হবে না?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২০, ০৬:৪৯ পিএম

দীর্ঘ আট বছর পেরোলেও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত তিমিরেই রয়ে গেল। খুনিরা রয়েছে অধরা। একাত্তর দফা পেছানোর পর ৭২তম তারিখে গত সোমবার আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাবের পক্ষ থেকে হাইকোর্ট বেঞ্চে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তবে এ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডিএনএ নমুনার মাধ্যমে তদন্ত যেভাবে এগিয়ে চলেছে অগ্রগতি প্রতিবেদনে র‌্যাব তা তুলে ধরেছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দীর্ঘ সময়ে তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় দুটি পরিবারে বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের পর খুনি ধরতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আল্টিমেটাম, বিচার দাবিতে সাংবাদিক সমাজের আন্দোলনে কোনো ফল হয়নি। দীর্ঘ সময়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যময়তা দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরাট ব্যর্থতার নজির বলা যায়।

র‌্যাব বলছে, সাগর-রুনির হত্যায় জড়িত সুনির্দিষ্ট কারো পরিচয় এখনো জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো আলামতের সূত্র ধরে অজ্ঞাত যাদের ডিএনএ প্রোফাইল মিলেছিল, সেসবের মাধ্যমে জড়িতদের চেহারা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। নতুন একটি প্রযুক্তি দিয়ে ডিএনএ নমুনার সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির চেহারা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সাগর-রুনির ডিএনএ আলামত যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবে রয়েছে। দুই পরিবারে দাবি, অজ্ঞাতনামা অনেক দিন ধরেই শুনছি। এখন আসল খুনির চেহারা দেখতে চাই। আমরাও এই হত্যাকাণ্ডের ক‚লকিনারা দেখতে চাই। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ। ওই সময় বাসায় ছিল তাদের একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ।

ঘটনাস্থলে গিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার’ মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে। দুই দিন পরে তৎকালীন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, ‘প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। সেই ৪৮ ঘণ্টার অগ্রগতি ৮ বছরেও জানা যায়নি। দেশের বিভিন্ন সংস্থা হয়ে মামলার তদন্ত ঘুরেছে সুদূর মার্কিন মুল্লুক পর্যন্ত। কবর থেকে লাশ তোলা শুধু নয়, তদন্তের সব শাখা-প্রশাখায় বিচরণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু ফল শূন্য। হয়নি দৃশ্যমান তদন্তের অগ্রগতি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা গেছে কিনা বা কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হতে পারে, এত বছর পরও এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কারো কাছে। র‌্যাবের দেয়া অগ্রগতি প্রতিবেদনের শুনানি আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে সোমবার এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজন অপরিচিত যুবক জড়িত ছিল। সাগরের হাতে বাঁধা চাদর এবং রুনির টি-শার্টে ওই দুই যুবকের ডিএনএর প্রমাণ মিলেছে বলেও প্রতিবেদনে দাবি করেছে র‌্যাব। সাগর-রুনি হত্যারহস্য অমীমাংসিত রাখার কোনো সুযোগ নেই; এ হত্যাকাণ্ডের বিচার অবশ্যই করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App