×

সম্পাদকীয়

দায়ীদের চিহ্নিত করুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২০, ০৮:৪৭ পিএম

আবারো পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকায় পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরণের এই ঘটনায় আইএস জড়িত বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’। আইএস পরিচালিত আমাক নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে গত শনিবার রাতে সাইট ইন্টেলিজেন্স এ তথ্য জানায়। আমাকের এমন খবরকে উড়িয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টিকে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় আনতে হবে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা নতুন নয়। গত বছর ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা দেখেছি। সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেও যখন পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে, তখন বিষয়টি অত্যন্ত ভীতিপ্রদ। পুলিশ যদি নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে জননিরাপত্তা বিধান হবে কী করে। জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে দুই নম্বর গেটের ওই পুলিশ বক্সে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দুই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যসহ আহত হন ৫ জন। এই ঘটনার সঙ্গে ঢাকার হামলার মিল আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বক্স ও গাড়িতে ৫টি বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সেসব হামলার দায় স্বীকার করেছিল আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট গ্রুপ। তবে পুলিশ জানিয়েছিল, সেসব হামলার পেছনে দেশি জঙ্গিগোষ্ঠী নব্য জেএমবি জড়িত।

তবে চট্টগ্রামের বিস্ফোরণের ঘটনায় আইএস দায় স্বীকার করলেও পুলিশ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সম্পর্ক আছে বলেও মনে হয় না। পুলিশের দাবি, পুরনো জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-জিহাদ, জামা’আতুল মুজাহিদীন বা জেএমবি নামের জঙ্গিরা নব্য জেএমবি নামে সংগঠিত হওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এর আগে দেখেছি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ভাঙতে পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছে। বিভিন্ন চেকপোস্টে একের পর এক পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে, পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষা করতে পারেনি, নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় পুলিশের পেশাদারিত্ব ও সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তখন। চট্টগ্রামে হামলার ঘটনা বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে, যা খুবই স্বাভাবিক। বর্তমান সরকার ধর্মীয় উগ্রপন্থাসহ সব রকম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্র মতবাদের কোনো স্থান নেই। বলা যায় দেশে জঙ্গি তৎপরতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগাম তথ্য নিয়ে বেশকিছু জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে। এই তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি জঙ্গি দমন অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকা অবস্থায় নব্য জেএমবি বা অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর গোপন তৎপরতা কীভাবে ও কিসের জোরে চলতে পারছে, তা গভীরভাবে জানার চেষ্টা করা দরকার। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন কখনোই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, তাদের জনবল সংকটও কখনো স্থায়ী হয়নি। আমরা মনে করি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হলে এদের তৎপরতাও কমে যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App