×

মুক্তচিন্তা

করোনার বৈশ্বিক প্রভাব এবং আমাদের করণীয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:৩৮ পিএম

বিশ্বের ৫৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন করোনা ভাইরাস। গত শুক্রবার রাতে বিশ্বজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন বার্তা আমাদের জন্যও উদ্বেগের। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধে এখনই কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া জরুরি বলে মনে করছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনার ‘মহামারি হয়ে ওঠার আশঙ্কা’ রয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ক্রমেই বৈশ্বিক মহামারির রূপ নিচ্ছে। প্রথমবারের মতো একদিনে বুধবার চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা চীনের ভেতরে আক্রান্তের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া সব মহাদেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের ৫৬টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ২ মাসে ২ হাজার ৮৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বিশ্লেষকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ২০০৮ সালে শুরু হওয়া বিশ্বমন্দাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে এর প্রভাব। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে দর পড়ে গেছে ব্যাপকহারে। গেল সপ্তাহজুড়েই খারাপ সময় পার করেছে বিশ্বের বড় বড় শেয়ারবাজার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গত সপ্তাহে ৫ ট্রিলিয়ন (৫ লাখ কোটি) ডলার হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। মন্দার পর এমন পতন আর দেখা যায়নি। কমছে জ্বালানি তেলের দামও। ব্যাপক প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে। দেশের মোট আমদানির প্রায় ২৬ শতাংশই আসে চীন থেকে। রপ্তানিও কম নয়। চলমান পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের উপক্রম হওয়ায় চরম ঝুঁকির মুখে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। এতে উদ্বিগ্ন সরকার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে আগাম প্রস্তুতি রাখতে হবে। অন্যথায় আমরা সংকটের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখনই আমদানি-রপ্তানির জন্য বিকল্প রাষ্ট্র খুঁজতে হবে। এর প্রভাব মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে ভাবতে হবে। নিশ্চয়ই এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওয়াকিবহাল আছেন। আদা, রসুনসহ বিভিন্ন মসলা জাতীয় পণ্য আমদানি করা হয় চীন থেকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় এসব পণ্যের সরবরাহ কমে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব পণ্যেও দাম বাড়ার খবরও আসছে। অন্যান্য পণ্যেও প্রভাব পড়ছে। অতএব আপৎকালীন সময়ে নতুন বাজার খুঁজে বের করার বিষয়ে আগাম ভাবতে হবে আমাদের। করোনা ভাইরাস যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে না পারে সে ব্যাপারে আগাম জরুরি ব্যবস্থা নেয়াও কর্তৃপক্ষের সচেতন দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা এখন এমন এক সংবেদনশীল পর্যায়ে পৌঁছেছি, সংক্রমণ পরিস্থিতি যে কোনো দিকে যেতে পারে। ভাইরাসটি মহামারি হয়ে উঠতে পারে। আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু বলা হয়নি। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App