×

সারাদেশ

২৫ গ্রামের ৪৮ বছরের স্বপ্ন একটি ব্রিজ!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:৫৬ পিএম

২৫ গ্রামের ৪৮ বছরের স্বপ্ন একটি ব্রিজ!

বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় পারাপার। ছবি: প্রতিনিধি

স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর রাণীনগর উপজেলার রক্তদহ বিলের বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবি পূরণ হতে চলেছে দুই পাড়ের প্রায় ২৫ গ্রামের অর্ধলাখ মানুষের। খেয়াঘাটে একটি ব্রিজের অভাবে বিল পাড়ের মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা ছিলো নৌকা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় পারাপার হতেন তারা।

সেই বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণ রাণীনগর ও আদমদিঘী দুই উপজেলার বিল পারের মানুষের প্রাণের দাবি ছিলো। দীর্ঘ আন্দোলন ও প্রচেষ্টার পর এবং স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর দু’পাড়ের প্রায় ২৫ গ্রামবাসীর স্বপ্ন পূরণে রক্তদহ বিলের বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব একনেকে অনুমোদন পেয়েছে। এ খবরে আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করছেন ওই এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, রাণীনগর উপজেলার রাণীনগর-আবাদপুকুর মেইন রাস্তা থেকে বেলঘড়িয়ার ভিতোর দিয়ে বোদলা থেকে রক্তদহ বিলের মধ্য দিয়ে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্দিড়া-সান্তাহারের সাথে যুক্ত হয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে বোদলা, পালশা, বিল কৃষ্ণপুর, সরকাটিয়া, তেবারিয়াসহ দু’পাড়ের প্রায় ২০/২৫ গ্রামের অর্ধলাখ মানুষ চলাচল করে। কিন্তু রক্তদহ বিলের মধ্যে বোদলা-সান্দিড়া রাস্তার মাঝখানে খাল বয়ে যাওয়ায় দু’পাড়ে ভাগ হয়ে গেছে।

ফলে বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে দু’পাড়ের মানুষজন এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে নৌকাতেই পারাপার হতে হয়। ওই খোয়াঘাটে একটি ব্রিজ নির্মাণের রাণীনগর ও আদমদিঘী দুই উপজেলার বিল পারের মানুষের প্রাণের দাবি ছিলো। দীর্ঘ আন্দোলন ও প্রচেষ্টার পর বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মানের প্রস্তাব একনেকে অনুমোদন হয়।

রাণীনগরের বোদলা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান জানান, ওই খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণের জন্য বিএনপির শাসনামলে তৎকালিন প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবিরের কাছে বহুবার দাবি জানানো হয়েছে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের এমপি ইসরাফিল আলমের কাছে বিষয়টি উত্থাপনের পর তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বোদলা-সান্দিড়া খেয়াঘাটে ব্রিজটি নির্মাণের জন্য একনেকে অনুমোদন হয়। খবরটি শুনে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। তিনি আরো জানান, ওই খেয়াঘাটে ব্রিজটি নির্মাণ হলে দু’পাড়ের মানুষের মাঝে আত্মীয়তার বন্ধন তৈরি হবে। খুলে যাবে ব্যবসা বাণিজ্যের দ্বার, ঘুচে যাবে বেকারত্ব। কৃষক সহজেই ধানসহ অন্য শস্য ঘরে তুলতে পারবে।

পথচারী আল আমিন, সাহীন আলম ও কলেজ ছাত্রী তানিয়া আক্তার বলেন, একটি মাত্র ব্রিজের অভাবে প্রায় ২০ কিলোমিটার রাস্তা পারি দিয়ে সান্তাহার শহরে যেতে হয়। অথচ খেয়াঘাটে একটি ব্রিজ হলে মাত্র ৫ কিলোমিটার অতিক্রম করলে সান্তাহার শহরে পৌঁছানো সম্ভব। ফলে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ কমে যাবে। কমে যাবে পথের দুর্ভোগ।

তেবারিয়া গ্রামের জহুরুল ইসলাম জানান, জরুরি ভিত্তিতে রোগী বহন করতে গেলে খেয়াঘাটে একবার নৌকা মিস করলে বা ছেড়ে গেলে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। ফলে রোগির অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়। এখানে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ হলে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে এ এলাকার মানুষের।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞা জানান, ৯৫ মিটার ব্রিজের জন্য প্রস্তাবপত্র পাঠানো হয়েছিলো। ব্রিজটি একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর ইতোমধ্যে মাটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে। শিগগিরই টেন্ডারের মাধ্যমে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App