×

সম্পাদকীয়

বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:২৮ পিএম

আরেক দফা বাড়ানো হলো বিদ্যুতের দাম। এতে সাধারণ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল বাবদ খরচ যেমন বাড়বে, তেমনি পণ্য উৎপাদনে খরচ বাড়বে বড় বড় শিল্প কারখানাগুলোরও। আর উৎপাদন খরচ বাড়ায় পণ্যমূল্যও বাড়বে, ভোক্তাদের প্রতি মাসে গুনতে হবে বাড়তি টাকা। বিদ্যুতের এই বাড়তি দাম মার্চ থেকে কার্যকর হবে। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মূল্য বৃদ্ধির এ ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), পরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কমিশন। বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো নাগরিকদের জীবনযাত্রায় বাড়তি চাপ যোগ করবে এটাই স্বাভাবিক। খুচরা পর্যায়ে ব্যবহার করা বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট বা কিলোওয়াট ঘণ্টায় দাম বাড়ানো হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৩৬ পয়সা। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহারে ১০০ টাকা বিল দিতে হতো, এখন একই পরিমাণ ব্যবহার করে ১০৫ টাকা ৩০ পয়সা বিল দিতে হবে। আর পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট গড়ে ৪০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। ৪ টাকা ৭৭ পয়সা থেকে বেড়ে প্রতি ইউনিটের দাম হয়েছে ৫ টাকা ১৭ পয়সা। এছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন মূল্যহার বা হুইলিং চার্জ প্রতি ইউনিটে শূন্য দশমিক ২৭৮৭ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয়েছে শূন্য দশমিক ২৯৩৪ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলেও পিডিবির উচ্চমূল্যে তেল ক্রয় এবং বসে থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়ার জন্যই এবার মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। দাম বৃদ্ধি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে কমিশন বলছে, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হওয়াতে পুরনো কেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে আর তা নবায়ন না করতে সরকারের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিভিন্ন কোম্পানির প্রস্তাবগুলো নিয়ে যে গণশুনানি আগে হয়ে গেল তা বিতরণ ও সঞ্চালনকারী কর্তৃপক্ষ দাম বাড়ানোর পক্ষে নানা যুক্তি দেখালেন। কিন্তু এর বিপরীতে ভোক্তাদের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে দাম বৃদ্ধির দাবি অযৌক্তিক। বিশ্ববাজারে অনেক দিন থেকেই জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী। দেশীয় বাজারেও ফার্নেস অয়েলের দাম কমানো হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমে গেছে। দেশে গ্যাসভিত্তিক কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের দাম কমার কথা। কিন্তু দাম না কমিয়ে উল্টো বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর উদ্যোগ কেন নেয়া হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। জানা কথা যে, বিদ্যুতের দাম বাড়লে সব রকম দ্রব্যমূল্য ও সেবামূল্যের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। আর শেষ পর্যন্ত তা বহন করতে হয় ভোক্তা সাধারণকে। তাই সাধারণ ভোক্তাদের সামর্থ্য তথা জনস্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুতের দাম কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায় তা নিয়ে সরকারকে ভাবতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার বিদ্যুতের মতো জরুরি প্রয়োজনীয় সেবা খাতের ব্যাপারে জনবান্ধব নীতি নিয়ে এগোবে এটাই সবার প্রত্যাশা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App