×

সারাদেশ

চরাঞ্চলের মিষ্টি পানে সোনালী বিজয়

Icon

nakib

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৪:১৮ পিএম

চরাঞ্চলের মিষ্টি পানে সোনালী বিজয়

পানের চাষ

চরাঞ্চলের মিষ্টি পানে সোনালী বিজয়

পানের পরিচর্যা

মুখ ও নিশ্বাসকে সুরভিত করতেই শহর কিংবা গ্রামের আবাল বৃদ্ধসহ কম বেশি অনেকেই পান খেয়ে থাকেন। পানের সাথে চুন-সুপারি ও বিভিন্ন রকমারি জর্দায় মিলিয়ে এ পান খাওয়া হয়ে থাকে। পান একটি অর্থকারী ফসল। এতে রয়েছে ঔষধি গুণ। দেশ বিদেশে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মিষ্টি ও ঝাল পানের চাষ হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চর-চরাঞ্চলে মিষ্টি পান চাষ করছেন কৃষকরা। এ অঞ্চলে মিষ্টি পানের ব্যাপক ফলন হওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দারাচ্ছেন পান চাষিরা। চরফ্যাশনের পান চাষিরা বর্ষাকালে পান চাষের নির্ধারিত আগাছামুক্ত সমতল জমিকে উচু করে প্রতি ৬০ সে.মি. পর পর ২০ সে.মি. চওড়া করে নালা তৈরী করে। পরে পানের বরজের বাহিরে বড় পানি নিকাশ নালার সাথে ছোট নালাগুলোকে যুক্ত করা হয়। এবং চারদিকে ২৫ ইঞ্চি চওড়া রাস্তা তৈরী ও জমির চারপাশে পাটকাঠির বেড়া তৈরী করে এবং শুকনো পাটি গাছ ও বাশেঁর কঞ্চি (বাশেঁর চিকন ডাল) দিয়ে চালার মাধ্যমে একটি ঘর তৈরী করা হয়। ভিতরে প্রতিটি বেড ৫০ ইঞ্চি চওড়া করে প্রতিটি বেডে দুই লাইনে (১২-১৫ ইঞ্চি দূরত্ব রেখে) প্রতিটি পানের চারা পাটকাঠির সাথে রোপন করা হয়। চরফ্যাশনে সাধারনত যশোরি, হাইব্রীড, নলী, বাশঁপাতা, বাংলা, মিঠা, দেশি, বরিশাল, মাঘিসহ উজানী জাতের পান চাষ করা হয়। উপজেলার চর-ভূতা এলাকার পান চাষি খোকন চন্দ্র বালা (৪৫) ৫৬ শতাংশ জমিতে ৪শ টি পানের বরজ (পানের লতা) গড়ে তুলেছেন। তিনি ছোট বেলা থেকেই পান চাষে জড়িত। তার পানের বরজ থেকে প্রতি বছরে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার পান বিক্রি হয়ে থাকে। অল্প পুঁজিতে ফলন বেশি হওয়ায় সাবলম্বি হয়েছেন এ পান চাষি। তিনি জানান, শীত মৌসুম ছাড়া প্রতি মাসের ১৫-২০দিন পর পানের বরজ থেকে এ পান ভাঙ্গা (পান ছিড়া) হয়। চরফ্যাশনের দাসকান্দি গ্রামের রিপন মজুমদার বলেন, সংসারের দুর্দিনের সময় কোথাও কাজ না পেয়ে সামান্ন পুজি নিয়ে প্রথমে ১শ পানের বরজ গড়ে তুলি, পানের ভালো উৎপাদন হওয়ায় বর্তমানে ৮০শতাংশ জমিতে প্রায় ৪শ পানের বরজ গড়ে তুলেছি পাশাপাশি পরিবারের সহযোগীতায় আমরা এখন অনেক ভালো আছি। তবে আমাদের দাসকান্দি এলাকায় খাল খনন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থ্যা না থাকায় এলাকার চাষিরা শিত মৌসুমে পানি সেচ সংকট ও বর্ষায় জলাবদ্ধতায় অনেক ক্ষতির মুখে পড়েন। [caption id="attachment_205567" align="aligncenter" width="700"] পানের পরিচর্যা[/caption] দুলারহাটের নুরাবাদ এলাকার চর যমুনা গ্রামের পান চাষি তপন তালুকদার জানান, ‘মিষ্টি পানের চাহিদা বেশি থাকায় ও অল্প পুঁজিতে ভালো ব্যবসা হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পান চাষ করছি। তবে পৌষ মাঘ ও ফাল্গুনে পানের উৎপাদন কম থাকায় পানের মূল্য বেশি পাওয়া যায়। লাভের পাশাপশি রোগ বালাই দেখা দিলে বরজ প্রতি অনেক ক্ষতি সাধন হয়’। তবে তিনি জানান পান চাষ করে তিনি এখন সাবলম্বি। চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাট নুরাবাদ, নিল কোমোল, শশিভূষণ, চর কলমি, দক্ষিণ আইচাসহ বিভিন্ন এলাকায় এ পান চাষ হচ্ছে। চরাঞ্চলের এ পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম,বরিশাল,লক্ষিপুরসহ রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। স্থানিয় খুচরা পান ব্যবসায়ি মোঃ কামাল জানান, বর্তমানে বাজার মূল্য বেশি থাকায় প্রতি বিরা (৭২টি পান) পান ধরন অনুযায়ি ২০-২০০টাকায় ক্রয় করছি। আড়তদার মোঃ সেলিম মাদ্রাজি বলেন, বরিশাল পাতার হাট, হিজলা,মুলাদিসহ চরফ্যাশনের বিভিন্ন চরাঞ্চলের পান চাষিরা আমাদের আড়তে পান নিয়ে আসেন আমরা তাদের পান ডাকে বিক্রি করি। শুষ্ক মৌসুমে পান উৎপাদন কম থাকায় বর্তমানে বাজার মূল্যে পানের ছোট বড় প্রতি পাই (১২ বিরা) ৩০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু হাসনাইন বলেন, পান চাষিরা পানের বরজে জৈব সাড় ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করলে আরোও ভালো ফলন উৎপাদন করতে পারবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App