সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না কেন?
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:১৯ পিএম
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবিটি সাধারণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দীর্ঘদিনের চাওয়া। এটি কোনো ব্যক্তি বিশেষের খেয়ালিপনা কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের ইগো বজায় রাখতে আটকে থাকতে পারে না। এই মুহূর্তে যদি সংবাদমাধ্যমগুলো একটি নিরপেক্ষ জরিপ চালায় দেখা যাবে অধিকাংশ লোক কিন্তু সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে।
তবে এ ক্ষেত্রে বুয়েটের মতো প্রতিষ্ঠানকে বাইরে রাখা হয়তো খারাপ কিছু না। বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে বুয়েট পুরোপুরিভাবে স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যতার ধারক। আর কিছু প্রতিষ্ঠান এ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিরোধিতা করছে তার পেছনে রয়েছে মূলত অর্থ বাণিজ্য। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সুষ্ঠু করতে কিছু ব্যবস্থা ইউজিসিকে নিতে হবে। তাহলে অটোমেটিক সব কিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আগে এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস নিতেন প্রাণবন্তভাবে। এখন উনারা ক্লাসে মনোযোগ দেন না। উনাদের মনোযোগ সান্ধ্য কোর্সে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর কাজে। একজন বেতনভোগী শিক্ষককে বেতন দেয়া হয় শুধু পাঠদানের জন্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শ্রেণিভিত্তিক দায়িত্ব পালনের জন্য। সেখানে অবশ্য পরীক্ষা নেয়া, খাতা কাটা এ দায়িত্বগুলো পড়ে।
এসবের জন্য উনাদের আলাদা টাকা দিতে হবে কেন! হ্যাঁ যদি উনারা একান্তই ক্লাসের পরবর্তী সময়ে খাতাগুলো দেখেন তাহলে তাদের সময়ের চার্জ দিতে হবে। তবে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ৪টার আগে ক্যাম্পাস ছাড়েন। উনাদের ক্লাস শেষ হওয়ার কথা ৪টায়। ক্লাস না থাকলে শ্রেণির অন্যান্য দায়িত্ব পালন করবেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি ক্লাস থাকলে শিক্ষক থাকেন ১২-১৪ জন। ৫ জনকে ক্লাসের দায়িত্বের বাইরে খাতা কাটার কাজে লাগালে তেমন ক্ষতি হবে না।
সরকারের অর্থও লাঘব হবে। তারপর ৪টার পর যদি কোনো শিক্ষক সদয় হয়ে বিনামূল্যে সান্ধ্য কোর্সে পড়াতে ইচ্ছুক হন, পড়ান। অসুবিধা নেই। তবে কিছুতেই এর জন্য অতিরিক্ত কোনো অর্থ দেয়া যাবে না। তাহলে বুঝা যাবে সান্ধ্য কোর্সের মাহাত্ম্য। ৪টার আগে ক্যাম্পাস ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আবার অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করছেন, অর্থ নিচ্ছেন। এভাবে উনারা সরকারি বেতন নিয়ে নিজেরা নিজ দায়িত্ব অবহেলা করে অসদুপায়ে টাকা ইনকাম করছেন। বিশেষ করে নতুন ছাত্র ভর্তির সময় যে মোটা টাকা আসে তা তারা ভাগ পান বলে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিরুদ্ধে উনাদের চুলকানি আছে। তাই ইউজিসির উচিত সবার আগে শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক শ্রেণিতে উপস্থিতি ও অতিরিক্ত টাকা ইনকামের সোর্স বন্ধ করা। তাহলে শিক্ষাঙ্গনে স্বস্তি নেমে আসবে। সর্বোপরি একটি সুষ্ঠু আদর্শিক পন্থায় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার জন্য বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।
চট্টগ্রাম। [email protected]