×

জাতীয়

পাপিয়াকাণ্ডে মহারথীরা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:৩২ এএম

পাপিয়াকাণ্ডে মহারথীরা!

শামিমা নূর পাপিয়া। ফাইল ছবি।

বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কৃৃত শামিমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউয়ের অপকীর্তি নিয়ে তোলপাড় চলছে। তার অন্দরমহলে কারা যেতেন, তিনি কাদের কাছ থেকে কী ধরনের সুবিধা পেতেন এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র। তবে মুখরোচক গল্প এখন শুধু এক পাপিয়াতে সীমাবদ্ধ নেই, আলোচনায় এসেছে অনেক রথী-মহারথীর নাম। ভাইরাল হয়েছে তার সঙ্গে ফ্রেমবন্দি অনেক ছবি। পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনের একাধিক মোবাইল ফোনের কললিস্ট, কলরেকর্ড, ভিডিও ক্লিপস ও ছবির সূত্রে শত শত নারী-পুরুষের সম্পৃক্ততার ক্লু মিলেছে। আটকের পর র‌্যাব ও পুলিশ হেফাজতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওয়েস্টিনের রেজিস্ট্রার ও সিসিটিভির ফুটেজে রয়েছে ওই স্যুটে কারা যাতায়াত করত, তার রেকর্ড। সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দাদের হাতে এখন হাইপ্রোফাইল কয়েক ডজন নারী-পুরুষের নাম। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পাপিয়া তার অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি পাবেন। পাপিয়ার অপরাধের সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে, তদন্তে যাদের নাম বেরিয়ে আসবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুদক কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান বলেছেন, যারাই অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন তাদের পর্যায়ক্রমে আইনের আওতায় আনা হবে। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেছেন, আটকের পর পাপিয়াসহ চারজনকে কয়েক ঘণ্টা হেফাজতে পাওয়া গেছে। ওই সময় তাদের লাইফ স্টাইলের সবকিছু জানা যায়নি। পাপিয়ার অন্দরমহলের খবর জানতে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যেটুকু সময় তাকে হেফাজতে পাওয়া গেছে সেই সময়ে তার সংগ্রহে থাকা অবৈধ অর্থ ও অস্ত্র, মদ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। পরে তাকে নিয়ে অভিযানও চালানো হয়েছে। বুলবুল জানান, পাপিয়ার বিষয়টি র‌্যাব ছাড়াও পুলিশ, সিআইডি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পৃথকভাবে তদন্ত করছে। জাল মুদ্রা সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কায়কোবাদ কাজী বলেছেন, রবিবার রাতে প্রাথমিকভাবে পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার যোগাযোগ অনেক ওপরে এমন তথ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেছেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান কায়কোবাদ। এদিকে জাল টাকা সরবরাহ, মাদক ব্যবসা, অনৈতিক কাজ, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনকে তিন মামলায় মোট ১৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া অপর দুই আসামি সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবাকে বিমানবন্দর থানার মামলায় পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিমানবন্দর থানার মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চারজন আসামি হলেও শেরেবাংলা নগর থানার মামলার আসামি কেবল পাপিয়া দম্পতি। সেখানে জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ১০ দিন, অস্ত্র ও মাদক মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো-পূর্বক ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম শাহীনুর রহমান তাদের গ্রেপ্তার দেখান ও আবেদন মঞ্জুর করেন। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কায়কোবাদ কাজী। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনের প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, পাপিয়াসহ চার আসামি সংঘবদ্ধভাবে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, জাল নোটের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, জমি দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রার উৎস ও জাল টাকা তৈরি চক্রের সক্রিয় সদস্যসহ মূলহোতাকে গ্রেপ্তার, আসামিদের নিয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা ও ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন। র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক সূত্র বলেছে, তারকা হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুকিং করে যে রংমহল গড়ে উঠেছিল তাতে কাদের যাতায়াত ছিল সেই তালিকা দীর্ঘ। পাপিয়া ও তার স্বামীর দৈনন্দিন অর্থ ব্যয়ের অঙ্ক দেখলে ধারণা করা যায় সেখানে যারা যেতেন তাদের কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতো। তাদের নেটওয়ার্কে বড় মাপের অনেক ব্যবসায়ী, ধনীর দুলালের নাম যেমন রয়েছে তেমনিভাবে রয়েছে অনেক সেলিব্রেটি তরুণীর নাম। মডেল ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকের সঙ্গে সখ্য ছিল পাপিয়ার। তারাও যেতেন ওয়েস্টিনের স্যুটে। সেখানে অনেক ব্যবসার দেনদরবার, তদবির ও লেনদেন হতো। পাপিয়া চক্রের অনেকে দাঁবড়ে বেড়ায় সচিবালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। তারা নিয়োগ, বদলিসহ নানাবিধ তদবির বাণিজ্যে ব্যস্ত সময় পার করে। সন্ধ্যার পরও এদের অনেকে ‘ঢু’ মারে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তার খাস কামরায়। তাদের নামে ইস্যু হয় বিশেষ পাস। উত্তরা জোনের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, শুধু তারকা হোটেল নয়, বাগানবাড়ি, বাংলো বাড়ি, ডুপ্লেক্স ও রিসোর্টে রয়েছে রংমহল। ঢাকার আশপাশে সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জে এমন অনেক রংমহলে রয়েছে জলসা ঘর। আলো আধারির খেলায় সেখানে জমে উঠে মদের আসর। সাভারের মধুমতি মডেল টাউনের ভেতরে তিনটি রিসোর্টে রংমহল গড়ে উঠার কাহিনী ওপেন সিক্রেট। বাইপাইলে এক অভিনেতার বাগান বাড়িতে রয়েছে জলসা ঘর। মধ্য গাজীরচটেও রয়েছে জলসা ঘর। উত্তরার পাশে তুরাগে রিসোর্টের আড়ালে চলছে উন্মদনা। বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক ও আলাদীন পার্কে রাত্রী যাপনের নামে অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও নাচগানের আসরের খবর পাওয়া যায় প্রায়ই। পুলিশ ওইসব স্থানে একাধিকবার অভিযান চালালেও বন্ধ হয়নি অপকর্ম। গাজীপুরের বিভিন্ন রিসোর্টের রাতের চিত্র ভিন্ন। পূর্বাচল ও ৩শ ফিটের আশপাশে গড়ে উঠা অনেক রিসোর্টের আড়ালে চলছে মনোরঞ্জনের আয়োজন। মানিকগঞ্জের কয়েকটি রিসোর্টের রাতের আড্ডায় থাকে মদ-নারী ও নাচ-গানের আসর। প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। শনিবার রাতে নরসিংদীর বাসায় এবং রবিবার ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্ব^র ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র‌্যাব। নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়াকে রবিবার দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তদন্ত করছে।জাল মুদ্রা সংক্রান্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কায়কোবাদ কাজী বলেছেন, রবিবার রাতে প্রাথমিকভাবে পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার যোগাযোগ অনেক ওপরে এমন তথ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেছেন, তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান কায়কোবাদ। এদিকে জাল টাকা সরবরাহ, মাদক ব্যবসা, অনৈতিক কাজ, অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনকে তিন মামলায় মোট ১৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া অপর দুই আসামি সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবাকে বিমানবন্দর থানার মামলায় পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিমানবন্দর থানার মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চারজন আসামি হলেও শেরেবাংলা নগর থানার মামলার আসামি কেবল পাপিয়া দম্পতি। সেখানে জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ১০ দিন, অস্ত্র ও মাদক মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো-পূর্বক ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম শাহীনুর রহমান তাদের গ্রেপ্তার দেখান ও আবেদন মঞ্জুর করেন। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ জাল টাকা উদ্ধারের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কায়কোবাদ কাজী। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনের প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, পাপিয়াসহ চার আসামি সংঘবদ্ধভাবে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, জাল নোটের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, জমি দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রার উৎস ও জাল টাকা তৈরি চক্রের সক্রিয় সদস্যসহ মূলহোতাকে গ্রেপ্তার, আসামিদের নিয়ে পুলিশ অভিযান পরিচালনা ও ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন। র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক সূত্র বলেছে, তারকা হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট বুকিং করে যে রংমহল গড়ে উঠেছিল তাতে কাদের যাতায়াত ছিল সেই তালিকা দীর্ঘ। পাপিয়া ও তার স্বামীর দৈনন্দিন অর্থ ব্যয়ের অঙ্ক দেখলে ধারণা করা যায় সেখানে যারা যেতেন তাদের কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হতো। তাদের নেটওয়ার্কে বড় মাপের অনেক ব্যবসায়ী, ধনীর দুলালের নাম যেমন রয়েছে তেমনিভাবে রয়েছে অনেক সেলিব্রেটি তরুণীর নাম। মডেল ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকের সঙ্গে সখ্য ছিল পাপিয়ার। তারাও যেতেন ওয়েস্টিনের স্যুটে। সেখানে অনেক ব্যবসার দেনদরবার, তদবির ও লেনদেন হতো। পাপিয়া চক্রের অনেকে দাঁবড়ে বেড়ায় সচিবালয়সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। তারা নিয়োগ, বদলিসহ নানাবিধ তদবির বাণিজ্যে ব্যস্ত সময় পার করে। সন্ধ্যার পরও এদের অনেকে ‘ঢু’ মারে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মকর্তার খাস কামরায়। তাদের নামে ইস্যু হয় বিশেষ পাস। উত্তরা জোনের পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, শুধু তারকা হোটেল নয়, বাগানবাড়ি, বাংলো বাড়ি, ডুপ্লেক্স ও রিসোর্টে রয়েছে রংমহল। ঢাকার আশপাশে সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জে এমন অনেক রংমহলে রয়েছে জলসা ঘর। আলো আধারির খেলায় সেখানে জমে উঠে মদের আসর। সাভারের মধুমতি মডেল টাউনের ভেতরে তিনটি রিসোর্টে রংমহল গড়ে উঠার কাহিনী ওপেন সিক্রেট। বাইপাইলে এক অভিনেতার বাগান বাড়িতে রয়েছে জলসা ঘর। মধ্য গাজীরচটেও রয়েছে জলসা ঘর। উত্তরার পাশে তুরাগে রিসোর্টের আড়ালে চলছে উন্মদনা। বিনোদন কেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম, নন্দন পার্ক ও আলাদীন পার্কে রাত্রী যাপনের নামে অসামাজিক কর্মকাণ্ড ও নাচগানের আসরের খবর পাওয়া যায় প্রায়ই। পুলিশ ওইসব স্থানে একাধিকবার অভিযান চালালেও বন্ধ হয়নি অপকর্ম। গাজীপুরের বিভিন্ন রিসোর্টের রাতের চিত্র ভিন্ন। পূর্বাচল ও ৩শ ফিটের আশপাশে গড়ে উঠা অনেক রিসোর্টের আড়ালে চলছে মনোরঞ্জনের আয়োজন। মানিকগঞ্জের কয়েকটি রিসোর্টের রাতের আড্ডায় থাকে মদ-নারী ও নাচ-গানের আসর। প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন (৩৮), সাব্বির খন্দকার (২৯) ও শেখ তায়্যিবা (২২)। ্রতাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়। শনিবার রাতে নরসিংদীর বাসায় এবং রবিবার ভোরে হোটেল ওয়েস্টিনে তাদের নামে বুকিং করা বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে অভিযান চালানো হয়। এছাড়া ফার্মগেট এলাকার ২৮ নম্ব^র ইন্দিরা রোডে অবস্থিত রওশন’স ডমিনো রিলিভো নামক বিলাসবহুল ভবনে তাদের দুটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ ও নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র‌্যাব। নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়াকে রবিবার দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App