×

সম্পাদকীয়

তদারকি জোরদার করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:৩১ পিএম

বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারো খোলার আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গত রবিবার মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এমন খবরে আমরা আশাবাদী হতে চাই। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে সরকার নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছে। দুই বছর ধরে মালয়েশিয়ায় রিক্রুমেন্ট বন্ধ রয়েছে পরাষ্ট্রমন্ত্রী এই শ্রমবাজারটি খুলে দেয়ার জন্য পুনরায় আবেদন করলে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী খুব তাড়াতাড়ি একটা সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন। জানা যায়, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছর জিটুজি প্লাস বাতিল করে দেয় মাহাথির মোহাম্মদের সরকার। জিটুজি প্লাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যেতে প্রথমে ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। পরে তা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা করা হয়। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে প্রায় সব কর্মী মালয়েশিয়া যেতে তিন থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। এর মাধ্যমে দুদেশের এজেন্টরা পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে বলে মালয়েশিয়া সরকারের অভিযোগ। জিটুজি প্লাসে কর্মী পাঠানোর কাজ পেয়েছিল ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি। যারা সিন্ডিকেট হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ অবস্থায় গত বছর ১৪ আগস্ট মালয়েশিয়া কর্মী নিয়োগের বিশেষ পদ্ধতি থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেয়। এর ফলে দেশটিতে বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানো বন্ধ হয়ে যায়। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। একই সঙ্গে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি অনিয়মিত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানি শুরু হয়, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। মালয়েশিয়াতে আমাদের বিশাল এক শ্রম অভিবাসী কাজ করছেন। মালয়েশিয়া কর্মী প্রেরণে অবশ্যই আগের ভুলত্রু টি মোকাবিলা করে এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে। সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সহনশীল ব্যয়ের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ করাটাই এখন বড় কর্তব্য। সিন্ডিকেট সমস্যাটি এখানে প্রকট। কেউ কেউ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলছেন। তবে অনেকে মনে করেন, অনিয়ম-প্রতারণা বাড়বে। এই অবস্থার মধ্যেই মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর জন্য অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক সংসদীয় ককাসের ২৪ দফা প্রস্তাব পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে এ খাতে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের প্রভাব থাকবে না বলে সরকারের একটি মহল মনে করছেন। চলতি বৈঠকে এই ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সুপারিশগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করছি। কোনোভাবেই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে যাতে ব্যয় বেড়ে না যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যাতে কেউ নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App