×

রাজনীতি

২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি বাম জোটের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:০৫ পিএম

২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ঘেরাও কর্মসূচি বাম জোটের

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট

গোপনে নির্বাচনী আইন সংশোধনের প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশনের এ হেন সিদ্ধান্তের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সভায় ব্যাংক ও আর্থিক খাতে দুর্নীতি-অনিয়ম-লুটপাট বন্ধ, ঋণখেলাপি-ব্যাংক ডাকাতদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত, ব্যাংক ডাকাতদের গ্রেপ্তার, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক অভিমুখে মিছিল, ঘেরাও এবং বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে জোট।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাসদ কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন- সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী)-র নেতা আলমগীর হোসেন দুলাল, গণসংহতি আন্দোলনের জুলহাস নাইন বাবু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

সভার এক প্রস্তাবে বলা হয়, কালোটাকা, পেশীশক্তি, সন্ত্রাস, প্রশাসনিক কারসাজি মুক্ত অবাধ-নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি উপেক্ষা করা হয়। রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে আলোচনা ব্যতিরেকে অতি গোপনে ঋণখেলাপি-বিলখেলাপিদের তুষ্ঠ করতে ও সাধারণ জনগণকে নির্বাচনের বাইরে রেখে টাকাওয়ালাদের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা করতে পূর্বের বিধান রদ করে মনোনয়ন জমার আগের দিন খেলাপিঋণ, খেলাপি বিল পরিশোধের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। জামানতের টাকা ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার ও জরিমানার টাকা ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ নির্বাচন কমিশনের রাজনৈতিক দলসূহের সঙ্গে সংলাপে বিভিন্ন দল নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য যে সকল সুপারিশ করেছিল তার কোনোটাই কমিশন গ্রহণ করেনি এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি। এ ঘটনা প্রমাণ করে বর্তমান কমিশন সরকারের অনুগত থেকে সরকারও ঋণখেলাপি, বিল খেলাপি টাকাওয়ালাদের পক্ষেই আইন প্রণয়নের সুপারিশ করছে।

সভায় অপর এক প্রস্তাবে বলা হয় যে, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাট দূর করতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছিল। অনেক দেরিতে হলেও অর্থমন্ত্রী ব্যাংকিং কমিশন গঠন করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন। বাম জোট নেতৃবৃন্দ এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তার পরও সংশয় থেকেই যাচ্ছে কারণ ইতোপূর্বেও বিগত অর্থমন্ত্রী বহুবার কমিশন গঠন করার কথা বললেও তখন তা গঠিত হয়নি। ফলে যতদিন কমিশন গঠিত না হচ্ছে এবং ওই কমিশনকে পর্যাপ্ত ক্ষমতা দিয়ে তা বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটছে ততদিন পর্যন্ত শুধু ঘোষণায় দেশবাসী আশ্বস্ত হতে পারছে না।

সভায় আরো বলা হয়, ব্যাংক আইনে ‘আমানত রক্ষা আইন’ ধারায় কোন ব্যাংক দেউলিয়া হলে ঐ ব্যাংকে কোনো আমানতকারী যত টাকাই রাখুক না কেন তাকে এক লক্ষ টাকার বেশি প্রদান করা হবে না অর্থাৎ কেউ এক কোটি টাকা আমানত রাখলেও ব্যাংক দেউলিয়া হলে তাকে মাত্র এক লক্ষ টাকা দেয়া হবে, এ বিধান বাতিল করতে হবে। কারণ এতে করে বেসরাকরি ব্যাংক মালিকদের লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংক দেউলিয়া করার প্রবণতা বাড়বে। অতি সম্প্রতি ধ্বসিয়ে দেয়া ফার্মাস ব্যাংক তার দৃষ্টান্ত।

প্রস্তাবে বলা হয়, ব্যাংক পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর মন্ত্রণালয়ন ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ না হলে আর্থিক খাতের এ সংকট দূর হবে না। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন কোনো ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেবে না এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও মন্ত্রণালয় ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে, পুুলিশ ব্যাংক ও আইনমন্ত্রীর মায়ের নামে একটি ব্যাংকসহ নতুন ৩টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিতে বাধ্য হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App