×

মুক্তচিন্তা

কলকাতায় বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৭:৪৭ পিএম

ভারতবর্ষের বাঙালিরা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করেছে আর ভারতীয় বাঙালিরা আবেগ নিয়ে যুদ্ধ করেছে। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রশ্ন উঠে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে। যখন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হয় তখন, জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ছাত্ররা প্রতিবাদ করে এবং পাকিস্তানের গণপরিষদে ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদ করেন।

\ দুই \

বাংলা ওয়ার্ল্ডওয়াইডের একটি সেমিনার ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদবিষয়ক। ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়িয়ে এমন একটি বিষয় নিয়ে কথা বলা কিছুটা জটিল তো বটেই। বিশেষ করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বাংলা ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৪৮ বছর পর এ বিষয়ে আলোচনা করাটা কঠিন তো বটেই। আমার মনে আছে, আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা নির্ধারণ করি তখন বাঙালি জাতীয়তাবাদ যে তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তানকেন্দ্রিক তার জন্য আমরা জাতীয় পতাকায় মানচিত্র সন্নিবেশিত করেছিলাম। এই সেমিনারে আমি বলেছি, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না করতেন, তাহলে বাংলা ভাষার আজকের অবস্থান তৈরি হতো না। বাঙালি জাতীয়তাবাদ কাগজে-কলমে থাকত, বাস্তব দৃষ্টান্ত বাঙালিরা খুঁজে পেত না। স্মরণ করুন ১৯৫২ সালে জাতির পিতা চীনে বাংলায় বক্তৃতা করেন এবং ১৯৭৪ সালে তিনি জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন, যার পথ ধরে আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ প্রদান করে আসছেন। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্মের জন্য ও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বাংলা বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষাই নয়, সব সরকারি কাজ, সব আইন বাংলায় হয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রধান শিক্ষার মাধ্যম বাংলা এবং বাংলাদেশ বাংলা ভাষার প্রযুক্তিগত উন্নয়নে ব্যাপক ভ‚মিকা পালন করছে।’ বিশিষ্ট পণ্ডিত পবিত্র সরকার তার বক্তব্যে বাংলা ভাষার অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের অবদানের প্রশংসা করেন। আমি অনুষ্ঠানে বলেছি, ‘আমরা আজকে স্পষ্ট করে বলতে পারি বাংলাদেশ এখন হেনরি কিসিঞ্জারের তলাহীন ঝুড়ির দেশ নয় এটি পাকিস্তানসহ বহু দেশের চাইতে বহু সূচকে উন্নত। বিশ্বের একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী এবার। আমরা এই বছরটিকে মুজিববর্ষ হিসেবে উদযাপন করছি। আগামী বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত বাংলা ভাষাভিত্তিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।’ আমি বিশ্বের সব বাংলা ভাষাভাষীকে মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মহাসমারোহে উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছি। খণ্ডিত ভ‚মি অখণ্ড জাতিসত্তা বাঙালির ভবিষ্যৎ : ২৩ জানুয়ারি ২০২০ বৃহস্পতিবার বেলা ৩ ঘটিকায় আমি ‘খণ্ডিত ভ‚মি অখণ্ড জাতিসত্তা বাঙালির ভবিষ্যৎ’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর পবিত্র সরকার, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুখরঞ্জন দাসগুপ্ত, বিখ্যাত লেখক। সেমিনারে আমি আমার বক্তৃতায় বলেছি, ‘বাঙালিরা যে যেখানে বসবাস করি না কেন, বাংলা ভাষাকে বিশ্ববাসীর কাছে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। পৃথিবীর সবচেয়ে আপন হচ্ছে মা, তারপর মাতৃভাষা। আমি আমার মাতৃভাষা বাংলাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি এবং এ কাজে যারা এগিয়ে আসবে তাদের প্রতি আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। বাংলা ভাষার জন্য এটি এক অনন্য সুযোগ ও সম্ভাবনা যে এই ভাষাভিত্তিক একটি জাতিরাষ্ট্র আছে যার নাম বাংলাদেশ। বলা যেতে পারে বাংলাদেশ এখন এই ভাষার অভিভাবক। এই ভাষা প্রচলন, প্রয়োগ ও উন্নয়নে বাংলাদেশ অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বাংলা টাইপরাইটার প্রবর্তন করে বাংলা ভাষার দাপ্তরিক কাজ করার ক্ষমতাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। এরপর বাংলাদেশ কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল যন্ত্রে বাংলার প্রয়োগকে বিশ্বমানে উন্নীত করেছে। বাংলার প্রমিতমান গড়ে তোলা ছাড়াও এই ভাষার উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। আমি বাংলাদেশের এই অগ্রণী ভ‚মিকায় বিশ্বের সব প্রান্তে থাকা বাঙালিদের সহায়তা কামনা করছি।’ Roll of Telecommunication Industry in Bringing about an Economic বিষয়ক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন : ২৪.০১.২০২০, শুক্রবার বিকাল ৩টায় Roll of Telecommunication Industry in Bringing about an Economic Transformation at the Grassroots Level of Bangladesh Technical Education and Skill Training Leads to Entrepreneurship and Future Prospect শীর্ষক সেমিনারে অংশগ্রহণ করি। সেমিনারে আমি কিনোট স্পিকার হিসেবে অংশগ্রহণ করেছি। সেমিনারে আরো অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর সৈকত মিত্র, ভাইস চ্যান্সেলর, মৌলানা আজাদ ইউনিভার্সিটি এন্ড টেকনোলজি এবং আইনানসো ব্যানার্জী, সিনিয়র পরিচালক, টিসিজি ডিজিটাল। সেমিনারে আমি আমার বক্তৃতায় বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের মহাকাব্যের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও রাজনীতির এবং সাড়ে ৩ বছরের শাসনের গৌববোজ্জ্বল বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছি। আমি বলেছি, ‘বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে বাংলাদেশ কর্তৃক ১৯৭৩ সালে আইটিও এবং একই বছর ইউপিইউর সদস্য পদ গ্রহণ এবং ১৯৭৫ সালে ভ‚-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ যুগের সূচনা হয়। বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ল্যান্ডফোন টেলিগ্রাম দিয়ে শুরু হলেও, ১৯৮৯ সালে দেশটি মোবাইল যুগে প্রবেশ করে। শুরুতে কল রেট ও মোবাইল ফোনের দাম অনেক বেশি হলেও, বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালে আরো ৪টি মোবাইল কোম্পানিকে লাইন্সেস প্রদান করে এ খাতে ব্যাপক পরিবর্তন করে। টেকনিক্যাল শিক্ষা এবং দক্ষতাবিষয়ক সেমিনারে বলেছি, ‘শিক্ষাকে কাজের ধরনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে এবং বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবে। আমরা এখনো প্রধানত ব্রিটিশ প্রবর্তিত সনাতনী শিক্ষাব্যবস্থায় পড়ে আছি। এই শিক্ষাব্যবস্থা দ্বিতীয় বা তৃতীয় শিল্পযুগের। এই শিক্ষাব্যবস্থাকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করতে হবে। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পর্ক দূরত্বের। কর্মসংস্থানের দিতে তাকিয়ে একাডেমি ও ইন্ডাস্ট্রিকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ আমি বর্তমান শিল্প ব্যবস্থাপনার ডিজিটাল দক্ষতা বাড়ানো এবং নব-উদ্ভাবিত প্রযুক্তির সংযোগ ঘটিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর আহŸান জানিয়ে বলেছি, ‘বিশ্বপ্রতিযোগিতায় টিকতে হলে নব-উদ্ভাবিত প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।’ ‘বাঙালির জাতীয়তার স্বপ্ন ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’, ‘জন্মভ‚মি ও আদিবাসীর দায়’ শীর্ষক সেমিনার : ২৫.০১.২০২০, রোজ শনিবার, সময় : ১১.৩০ ও ৩ ঘটিকা ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে আমি ‘বাঙালির জাতীয়তার স্বপ্ন ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’, ‘জন্মভ‚মি ও আদিবাসীর দায়’ ও ‘বিশ্বাঙ্গনে বাঙালির প্রতিশ্রæতি, সাফল্য ও ব্যর্থতা’বিষয়ক সেমিনারে অংশগ্রহণ করি। এ সেমিনারে আরো অংশগ্রহণ করেন এডভোকেট বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মেয়র, কলকাতা, সমরেশ মজুমদার, প্রাক্তন বিচারপতি, কলকাতা হাইকোর্ট এবং প্রফেসর পবিত্র সরকার, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুলবুল ওসমান, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেমিনারগুলোতে আমি আরো বলেছি, ‘ভারতবর্ষের বাঙালিরা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছেন। মুক্তিযোদ্ধারা বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করেছে আর ভারতীয় বাঙালিরা আবেগ নিয়ে যুদ্ধ করেছে। ১৯৪৮ সালে প্রথম প্রশ্ন উঠে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কী হবে। যখন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা করা হয় তখন, জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ছাত্ররা প্রতিবাদ করে এবং পাকিস্তানের গণপরিষদে ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদ করেন। এই প্রতিবাদগুলো একটি জাতিসত্তা বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রব্যবস্থা ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বৈষম্যের শিকার হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জনক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধিকার ও সর্বশেষে স্বাধীনতা আন্দোলন করে বাঙালির ভাষা রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি গড়ে তোলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদী, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন জাতিরাষ্ট্র। ভেবে দেখুন পাকিস্তান আমলে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগকে অসম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগে পরিণত করেন।’ যা হোক বাংলা ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রথমবারের মতো বাঙালিদের এমন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে তাতে এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনা করে সারা বিশ্বের বাঙালিদের আত্মানুসন্ধানের একটি প্লাটফরম তৈরি করে দিয়েছে বলেই আমি মনে করি।এই সুযোগে আমি বিশ্বের সব বাংলা ভাষাভাষীকে মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মহাসমারোহে উদযাপনের আহ্বান জানাই।অনুষ্ঠানের মূলমঞ্চে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রমিতা মল্লিক, দেবারতি সোম, লাইজা আহমেদ লিস (বাংলাদেশ), ঋষি ব্যানার্জী (যুক্তরাজ্য) ও স্বপ্নিল সজীবসহ বাংলাদেশ ও কলকাতার খ্যাতনামা শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনের সঙ্গে একটি মেলার আয়োজন করা হয়। সফরকালে আমি মুজিবনগর সরকারের অফিস ৮ নম্বর থিয়েটার রোডও পরিদর্শন করি। মুজিবনগর সরকার ও ৮ নম্বর থিয়েটার রোড : সেই ১৯৭৬ সালের দিকে প্রথম কলকাতা যাওয়ার পর থেকে এখন অবধি সবচেয়ে বেশিবার যে শহরটিতে আমি গিয়েছি সেটি অবশ্যই কলকাতা। কলকাতার এমন কোনো দর্শনীয় স্থান নেই যা আমি দেখিনি। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা জাদুঘর কিংবা কলেজ স্ট্রিট কোনোটাই আমার অচেনা নয়। বহু স্থানে আমি একাধিকবার গিয়েছি। দুটি জায়গা আমার গন্তব্যের বাইরে ছিল। একটি শান্তিনিকেতন ও অন্যটি ৮ নম্বর থিয়েটার রোড। ভেবেছিলাম এই ভ্রমণের ফাঁকে দুটি অদেখা জায়গাই দেখে আসব। কিন্তু হিসাব করে দেখা গেল শান্তিনিকেতন ঘুরে আসার জন্য পুরো একটি দিন লেগে যাবে, যা আমার হাতে নেই। বিকল্প হিসেবে মুজিবনগর সরকারের আবাসস্থল ৮ নম্বর থিয়েটার রোড দেখার সিদ্ধান্ত নিই। কলকাতার ড্রাইভার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে নানা স্থানে থেমে লোকজনকে জিজ্ঞেস করে অবশেষে যেখানে থামল তাতে লেখা ৪ নম্বর থিয়েটার রোড। সাইনবোর্ড আছে অরবিন্দ আশ্রমের। লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানা গেল যে এটাই ৮ নম্বর থিয়েটার রোড। গাড়ি থেকে নেমে সামনের আঙিনায় একটি গাছতলায় দাঁড়িয়ে নিজেকে কেমন জানি অসহায় মনে হলো। পুরো স্থানটির কোথাও মুজিবনগর সরকারের কোনো চিহ্ন নেই। যারা ওখানে থাকেন তারা কেউ বলতেও পারেন না যে এটি মুজিবনগর সরকারের আবাস ছিল। জানা গেল এটি একটি আশ্রম ও আশ্রমের যাবতীয় কাজই এখানে হয়ে থাকে। পরিপূর্ণ হাতাশা নিয়ে বেরিয়ে এসে আমাদের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানালেন ১৯৭২ সালে ইন্দরাজী এটিকে অরবিন্দ আশ্রমকে দান করে দেন। এরপর বাংলাদেশ সরকার বারবার চেষ্টা করেছে জায়গাটি পাওয়ার ও মুজিবনগর সরকারের স্মৃতিকে চির জাগরুক করার। বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্ব প্রদান জরুরি বলে আমি মনে করি। (সমাপ্ত)

মোস্তাফা জব্বার : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App