শহীদ মিনার নেই, তাই কাগজে এঁকে শ্রদ্ধা!
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৬:২১ পিএম
কাগজে আঁকা শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: প্রতিনিধি
জাতীয় বীরদের প্রতি শিশুদের শ্রদ্ধা নিবেদন। ছবি: প্রতিনিধি
বিদ্যালয় আছে, কিন্তু নেই শহীদ মিনার। তাই পালিত হয় না একুশে ফেব্রুয়ারির কোনো আয়োজন। কখনো কখনো অন্যস্থানের শহীদ মিনারে গিয়ে জানানো হয় ভাষী শহীদদের শ্রদ্ধা। এমনভাবে চলছে সেই বায়ান্নর পর থেকেই।
সরকারি আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামূলক হলেও ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছরেও সরিষাবাড়ীর অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভাষাশহীদের স্মৃতিচিহ্ন শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কারো কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি আজ অবধি।
তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে। বাধ্য হয়ে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একদিনের জন্য অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। সেখানেই কোনো মতো জানানো হয় শ্রদ্ধা। এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের চেচিয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শহীদ মিনার না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড় সাদা আর্ট পেপারে শহীদ মিনারের ছবি এঁকে সেখানে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। তাদের দাবি, শুধু তাদের বিদ্যালয়েই নয়, দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে যেন সরকারিভাবে স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। তাতে তারা ভালোভাবে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
[caption id="attachment_203985" align="aligncenter" width="700"] ভাষা শহীদদের প্রতি শিশুদের শ্রদ্ধা। ছবি: প্রতিনিধি[/caption]চেচিয়াবাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মাহফুজ মিয়া বলে, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নাই। তাই আমি ও আমার ক্লাসের বন্ধুরা মিলে বড় সাদা কাগজ কিনে শহীদ মিনার আঁকিয়ে ওয়ালে (বাউন্ডারি) আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছি। আর সেই শহীদ মিনারে আমরা সবাই মিলে ফুল দিয়েছি।
প্রধান শিক্ষিকা আকলিমা খাতুন জানালেন, আমাদের বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। তাই মাতৃভাষা দিবসে আমরা স্কুলে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করি। আর এবার শিক্ষার্থীরা প্রতিকৃতি স্বরূপ শহীদ মিনার আর্ট পেপারে এঁকে সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে দিবসটি পালন করেছি।
আকলিমা খাতুন দাবি জানিয়ে বলেন, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলে নতুন প্রজন্মের কাছে শহীদ দিবসের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে পারবো।’