×

জাতীয়

চট্টগ্রামের হৃতগৌরব ফেরাতে চান রেজাউল করিম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:৩৬ পিএম

চট্টগ্রামের হৃতগৌরব ফেরাতে চান রেজাউল করিম

রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রামের হৃতগৌরব ফেরাতে চান রেজাউল করিম

রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় সভানেত্রীর মনোনয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম এসে ব্যাপক সংবর্ধনা পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী। সংবর্ধনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বললেন, সিটি করপোরেশন পরিচালনায় অনেক ক্ষেত্রেই তিনি প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডকে অনুসরণ করতে চান। একই সঙ্গে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চউকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের উন্নয়নের ধারাও এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। অর্থবিত্তের প্রতি তার কোনো মোহ নেই, কোনো লোভ-লালসা নেই। নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামের হৃতগৌরব ফেরাতে চান তিনি। গতকাল বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের পুরনো রেলস্টেশন চত্বরে চট্টগ্রাম আওয়ামী পরিবারের উদ্যোগে দেয়া সংবর্ধনায় রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন চট্টগ্রামের প্রয়াত নেতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই আস্থা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমি পালন করব। অর্থবিত্তের প্রতি আমার কোনো মোহ নেই। কোনো লোভ নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। এম এ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী ও মহিউদ্দিন চৌধুরীরা যে পথে গিয়েছেন আমিও সে পথে যাব।’ তিনি বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে এই চট্টগ্রামের হৃতগৌরব ফিরিয়ে দিতে চাই। আমি নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামকে মাদকমুক্ত, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলব। নির্বাচিত হলে তার প্রথম কাজ সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প সিডিএকে দিয়েছেন। এটা যদি সফল হয় তাহলে অনেকাংশে আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তিলাভ করব। মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য যা করা দরকার আমি করব।’ নগর আওয়ামী লীগের আইন-বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর কমিটির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহম্মদ, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর কমিটির উপদেষ্টা মুহাম্মদ সফর আলী, সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম, এম এ রশিদ, কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী এবং মীরসরাই উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন। তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না মনোনয়নবঞ্চিত চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। স্বতন্ত্র মনোনয়নপত্র কিনলেন বিএসসি পুত্র মুজিবুর : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হওয়া মুজিবুর রহমান মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় থেকে তার প্রতিনিধি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক নন বলে জানান। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান সাবেক মন্ত্রী ও নগর আওয়মী লীগের সহসভাপতি নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে। নুরুল ইসলাম বিএসসিও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এদিকে চসিক নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা পর এ পর্যন্ত মেয়র পদে দুইজন এবং কাউন্সিলর পদে ৪৮ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার মেয়র পদে দুইজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩২ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মেয়র পদে মুজিবুর রহমান ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. জান্নাতুল ইসলাম মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর আগের দিন মঙ্গলবার ১০টি ওয়ার্ডে ১৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের বিষয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে মুজিবুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, ‘ চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণদের অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, তাদের এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন। সেই বিবেচনায় দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু নেত্রী দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতা রেজাউল করিম চৌধুরীকে মনোনয়ন দিয়েছেন। দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার প্রশ্ন আসে না। আমার নামে কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন, তা আমি জানি না। তিনি বলেন, রেজাউল করিম চৌধুরীকে বিজয়ী করতে উনার জন্য কাজ করব।’ চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান ভোরের কাগজকে বলেন, প্রার্থী নিজে অথবা প্রতিনিধি যে কারো নামে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারেন। এক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার সিডির টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছেন কিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলো নির্ধারণ করেছি। ৭২১টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল তৈরি ও চ‚ড়ান্ত ভোটার তালিকা তৈরির কাজও চলছে। এখন পর্যন্ত ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৮ জন। নতুন আরো প্রায় ৮৫ হাজার সংযুক্ত হতে পারে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার চসিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৯ মার্চ এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ মার্চ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ মার্চ। এ ছাড়া ৯ মার্চ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App