গাজীপুরের আব্দুর রহমান (৪৫) নামের এক ব্যাবসায়ির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত রহমান উপজেলার গাজীপুর গ্রামের নছিম উদ্দিনের ছেলে। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্য রাত আড়াইটায় শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড (প্রশিকা মোড়) মজনু মিয়ার ভবন থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ভবন মালিক মজনু মিয়া জানান, গত ১৪ জানুয়ারি সামিরা তার মা’কে নিয়ে তার তিন তলা ভবনের দুই তলার পূর্ব পাশের একটি ফ্ল্যাট ৯ হাজার টাকায় ভাড়া নেয়। সাথে সামিরার স্বামীও থাকবে বলে তাকে জানায়। ভাড়া নেওয়ার পর মা মালতি বেগম ও স্বামী আব্দুর রহমানকে নিয়ে সামিরা আক্তার বসবাস করতে থাকে। গত ৮ফেব্রুয়ারি ভাড়া দেওয়ার কথা বলে বাসা তালা দিয়ে বের হয়। তারপর থেকে তাদের কেউ বাসায় আসে না। ৮ থেকে ১০ দিন যাবত ঘরের দরজা তালাবদ্ধ থাকায় সন্দেহ হয় এবং ঘর থেকে পচা দুর্গন্ধ আসে। পরে শ্রীপুর থানায় খবর দিলে ঢাকার ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক আমিনুর রহমান খান ও গাজীপুর সিআইডির পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে শ্রীপুর থানা পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে। পরে তারা দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। তারা ঘরের মেঝেতে তোষক, নতুন বস্তা ও বিছানার চাদর দিয়ে পেঁচানো রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় মরদহে দেখতে পায়। ঢাকার ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক আমিনুর রহমান খান জানান, নিহতের শরীরে পোকা ধরে গেছে। গলা অর্ধেকেরও বেশি অংশ কাটা। ধারণা করা হচ্ছে ৮ থেকে ১০ দিন আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সামিরা আক্তারের এক আত্মীয় জানান, সামিরা বরিশাল এলাকার আলী হোসেন বেপারীর মেয়ে। তার মা একাধিক বিয়ে করেছে। ছোট থেকেই সে তার মা মালতি বেগমের সাথে নানার বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদিঘী গ্রামে বসবাস করে আসছে। এখানে থেকে সে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নয়নপুর বাজার এলাকায় ‘আলীফ ফার্মেসী’ নামে একটি দোকান পরিচালানা করতো এবং নিয়মিত সে ওই দোকানে বসতো। নিহত ব্যাক্তিটি তাকে পছন্দ করতো। তবে সামিরার সাথে নিহত ব্যাক্তিটির বিয়ে হয়েছে কি’না এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। নিহত আব্দুর রহমানের এর আগে আরো দুইটি বিয়ে করেছে। তাদের মধ্যে একজন টঙ্গী ও অপরজন গাজীপুরের কোথাও বসবাস করে বলে শুনছি। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর থেকে নিহতের স্ত্রী সামিরা আক্তার ও তার মা মালতি বেগম পলাতক রয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, নিহতের প্রথম ঘরের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। হত্যার বিষয়টি পুলিশ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই হত্যাকাণ্ড কারণ ও এর সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।