×

জাতীয়

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির অ্যাডভোকেসি সভা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৭:৫৬ পিএম

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির অ্যাডভোকেসি সভা

এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে অ্যাডভোকেসি সভা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি)। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) সহযোগিতায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার ( ১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে দশটায় ডিএনসিসির ৭ নম্বর অঞ্চলের অধীন দক্ষিণখানের কে সি হাসপাতাল কনভেনশন সেন্টারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে জানানোর মাধ্যমে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে সকলের অংশগ্রহণের উদ্দেশে এ সভার আয়োজন করা হয়।

ডিএনসিসির অঞ্চল ৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল কুদ্দুস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে অঞ্চল ১ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জুলকার নায়ন ও অঞ্চল ৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ আলী, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোতালেব মিয়া, ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডি এম শামীম, সংরক্ষিত ওয়ার্ড নম্বর ১৬ এর কাউন্সিলর ইলোরা পারভীন, সভার শুরুতে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল, বংশবিস্তার, রোগ-জীবাণু বহন, মানুষকে আক্রান্ত করাসহ বিশ্বে ডেঙ্গু রোগের সামগ্রিক চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সিডিসি এর ফিল্ড মনিটরিং অফিসার ডা. আবুল কালাম এবং এন্টামোলোজিকেল সার্ভিলেন্স এক্সপার্ট জান্নাতুল ফেরদৌস।

এতে দেখানো হয়, ১২৬টি দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে ২৫০ কোটির অধিক মানুষ, অর্থ্যাৎ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে, এসব দেশে প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। সিডিসির এ উপস্থাপনায় আরো বলা হয়, গত আগস্ট মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ। সারা দেশে এ এক মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড করা হয়, যার অধিকাংশই ছিলো রাজধানীতে। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক ছিলো এবং ধারণা করা হচ্ছে, এবছরও একই সময়ে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে।

অ্যাডভোকেসি সভায় এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির বিভিন্ন কার্যক্রম পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্ণেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার। তিনি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ২০১৯ সালে ডিএনসিসির সামগ্রিক কার্যক্রম এবং ২০২০ সালে চলমান ও আসন্ন এডিস মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এ রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে আমরা গত বছর বিভিন্ন আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে একাধিক অবহিতকরণ সভা, সচেতনতামূলক পদযাত্রা ও পথসভা, বাউল সংগীত, জাতীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি, সচেতনতামূলক বার্তা, টেলিভিশনে টিভিসি প্রচার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।

এছাড়া ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম দেশের জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকবৃন্দ ও টেলিভিশন মালিক ও বার্তা প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, যা এবছরও অব্যাহত থাকবে। লে. কর্ণেল সারওয়ার আরো জানান, গত বছর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যায়। গতবছর শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রতিবেশীর বাসা-বাড়িও পরিদর্শন করে এডিস মশার প্রজননস্থল ধবংস করেছে। আমরা এবারও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই কার্যক্রম প্রত্যাশা করছি। এছাড়া মেয়রের নেতৃত্বে ডিএনসিসির সকল বিভাগ ও ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণের সমন্বয়ে আমরা ‘চিরুন অভিযান’ পরিচালনা করি। তিনি আরো বলেন, গত বছর ইমামগণ প্রতি জুমার নামাজে তাঁদের বয়ানে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার-পরি”ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিলো। আমরা আশা করবো, এবারও ইমামগণ আরো সক্রিয়ভাবে থাকবেন।

তিনি আরো বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম আরো এগিয়ে নিতে এর মধ্যেই ২০০টি ফগার মেশিন, ২৩৮টি পালস ফগমেশিন, ১৫০টি হার্টসন হস্তচালিত মেশিন, ৩৪০টি প্লাস্টিক হস্তচালিত মেশিন, ২টি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন, ১০টি মটরসাইকেল ফগার ও হস্তচালিত মেশিন, ২০টি মিস্ট পাওয়ার স্প্রে মেশিন ক্রয়পূর্বক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো কয়েকটি ভেহিকল মাউন্টিং ফগার মেশিন ক্রয়ের পরিকল্পনা আছে। আমরা বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ১ হাজার বিঘা জলাশয় এর জলজ আগাছা ও কচুরিপানা পরিষ্কার করেছি, যা এখনও চলমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, আমরা গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এখন জানি কোথায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে, কোথায় এদের ঘনত্ব বেশি, কোন বয়সের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয় ইত্যাদি। তাই এসব তথ্য-উপাত্ত কাজে লাগিয়ে আমরা বছরের শুর থেকেই পুরোদমে কাজে নেমেছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App