×

অর্থনীতি

ঋণ কমাতে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে কড়াকড়ি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:৪৭ এএম

ঋণ কমাতে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে কড়াকড়ি

সঞ্চয়পত্র। ফাইল ছবি

সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ কমাতে চলতি অর্থবছর থেকে এ খাতে বিনিয়োগে বেশকিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কোনো প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ তহবিল, তথা প্রভিডেন্ট ফান্ড ছাড়া অন্য কোনো অর্থ সঞ্চয়পত্র খাতে বিনিয়োগ বন্ধ করা হয়েছে। এ জন্য ভবিষ্যৎ তহবিলের বিপরীতে দেয়া হয়েছে আলাদা কর শনাক্তকরণ নম্বরও (টিআইএন)।

এরপরও প্রতিষ্ঠানের টিআইএন ব্যবহার করে অন্য খাতের অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএন ছাড়া প্রতিষ্ঠানের টিআইএনের বিপরীতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

সম্প্রতি অর্থ বিভাগের সরকারি ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ কর্মসূচির উপসচিব আবুল বাশার মুহাম্মদ আমীর উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন ব্যাংকে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সঞ্চয়পত্র বিধিমালা অনুযায়ী স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিল তথা প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্থ পাঁচ বছর মেয়াদে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। ভবিষ্যৎ তহবিল ব্যতীত প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো তহবিল সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা যাবে না। এজন্য ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রদানের মাধ্যমে এ তহবিলের বৈধতার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তারপরও কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএন বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের টিআইএন দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনেছে। জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালুর পর অনেক সঞ্চয়পত্র ইস্যুকারী আউটলেট ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএন না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের টিআইএন দিয়ে সঞ্চয়পত্র ইস্যু করে। বিষয়টি কর্মসূচি কার্যালয়ের নজরে এলে সঞ্চয়পত্র ইস্যুকারী আউটলেটকে ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএন দিয়ে সঞ্চয়পত্র ইস্যুর জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।

এ পরামর্শে ইতোমধ্যে পূবালী ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা যারা প্রতিষ্ঠানের টিআইএন দিয়ে স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের নামে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেছে, তারা ক্রয়কৃত সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করে স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএন ব্যবহার করে পুনরায় সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেছে।

এরপরও বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংক অভিযোগ করেছে, জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে প্রতিষ্ঠানের টিআইএন দিয়ে স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের বিপরীতে সঞ্চয়পত্র ইস্যু করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের টিআইএন ব্যবহার করে যেসব ভবিষ্যৎ তহবিলের নামে সঞ্চয়পত্র ইস্যু করা হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ তহবিলের কিছুসংখ্যক টিআইএন কর কমিশনের কাছে থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে প্রতিষ্ঠানের টিআইএন নম্বর পরিবর্তন করে স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএন নম্বর প্রতিস্থাপনে ব্র্যাক ব্যাংক থেকে আবেদন করা হয়েছে।

জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো অর্থ যাতে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ না হয়, তা প্রতিরোধে স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলের টিআইএনের অনুক‚লে জাতীয় সঞ্চয়পত্র ইস্যু করার বিষয়টি নিশ্চিত করা এবং ব্র্যাক ব্যাংকের পত্রের পরবর্তী নির্ধারণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে সঞ্চয়পত্রে অবৈধ বিনিয়োগে লাগাম টানতে চলতি অর্থবছর থেকে কিছু কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যাতে কেউ বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা বা অবৈধভাবে কালো টাকা বিনিয়োগ করতে না পরে, সেজন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের পাশাপাশি টিআইএন নম্বর নেয়া হয়।

এছাড়া বিক্রি কমাতে নতুন বাজেটে মুনাফার ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। এত দিন সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে সরকার ৫ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখত। আগামী ১ জুলাই থেকে ১০ শতাংশ করে কাটবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App