×

সম্পাদকীয়

গার্মেন্টসে ফিরুক সুবাতাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৫৮ পিএম

দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত গার্মেন্টস শিল্প এখন বহুবিদ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য গার্মেন্টস শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক বড় বড় গার্মেন্টস কারখানা খরচ কুলিয়ে উঠতে না পারায় শ্রমিক ছাঁটাই করছে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার এবং বেকার হওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে। তৈরি পোশাক খাতের সংগঠনগুলো বলছে, গেল এক বছরেই নিট ও ওভেন পোশাক কারখানা বন্ধ হয়েছে অন্তত ১৪৩টি। চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ৭৩ হাজার কর্মী। নতুন বিনিয়োগও আসছে না। এমন অবস্থা এ খাতের জন্য অশনি সংকেত। জানা যায়, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশের তৈরি পোশাক খাত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম পরিচালনা, নানা সংস্কারমূলক পদক্ষেপের ফলে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়ায় খাতটি। পোশাক খাতের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ববাজারে চাহিদা কমা, ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারে সামঞ্জস্য না আনা, কমপ্লায়েন্ট ইস্যু, অর্ডার কমে যাওয়া, নিজেদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, প্রযুক্তির প্রসারকে কাজে লাগাতে না পারা, উদ্যোক্তাদের খরচ বাড়ার সঙ্গে পণ্যের কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়া, চীনে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবসহ বেশ কিছু কারণে প্রধান এ রপ্তানি খাত এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৭ মাসে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৯৬২ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের (২০১৮-১৯) একই সময়ের তুলনায় ৫.১৩ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১১.৮৬ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৯৪৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.২৯ শতাংশ কম। তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাত। অনেক চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাক শিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অনেক প্রতিক‚লতা এবং দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে অগ্রগতির পথে। দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে পোশাক শিল্পের কোনো বিকল্প নেই। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসছে তার অন্যতম খাত হলো গার্মেন্টস শিল্প। প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক অর্থ আয় করছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে পোশাক রপ্তানি থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিজিএমইএ। এই লক্ষ্যমাত্রাকে অনেকে উচ্চাভিলাষী বললেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এর জন্য বিদ্যমান অনেক সমস্যা দূর করতে হবে। বিশ্ব পোশাক বাজার এখন ৬৫০ বিলিয়ন ডলারের। বাংলাদেশ এর মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে। এ হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে পারলেই ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব। এই টার্গেট পূরণে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের আন্তরিক ও বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা। একই সঙ্গে পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ আরো উন্নত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App