×

খেলা

ক্রীড়াঙ্গনের সাফল্যে উজ্জ্বল বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:৪২ এএম

অন্যান্য সেক্টরের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও বাংলাদেশের সাফল্য বেশ ঈষর্ণীয়। নতুন বছরের দ্বিতীয় মাসে জাতিকে আনন্দে ভাসিয়েছে ক্রিকেটাররা। উনিশের হাত ধরে মুজিববর্ষে বিশ্বকাপ এসেছে বাংলাদেশে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের যুবারা। এই যুবাদের দিয়ে আগামীতে আইসিসি বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন টাইগার সমর্থকরা। বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে দেশে ফিরে অধিনায়ক আকবর আলী জানিয়েছেন, বোর্ড থেকে কোনো কিছু পাওয়ার আশা করে বিশ্বকাপে খেলতে যাইনি। আগামীতে জাতিকে আরো বড় কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করব।

গত এক দশক ধরে বাংলাদেশে ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্যের পাল্লা দিনকে দিন ভারি হচ্ছে। আকবররা বিশ্বকাপ জয়ের আগে ২০১৮ সালে মেয়েদের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের মেয়েরা ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে ফাইনালে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ক্রীড়াঙ্গনেও নারীদের অবদান অনেক। ফুটবল, ক্রিকেট, হ্যান্ডবল, শুটিং, ভারোত্তোলন, সাঁতারসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে নারীরা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ক্রিকেট, ফুটবলে এগিয়েছেন নারীরা। সাবিনা, কৃষ্ণারা দেশের বাইরে বিভিন্ন লিগে খেলেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘নারীরা ক্রীড়াঙ্গনে অনেক অবদান রেখেছে। ফুটবলে আমরা ভালো অবদান রাখছি। অন্যরাও সবাই যার যার অবস্থান থেকে রাখছেন। ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের চেয়ে পিছিয়ে নেই।’ বাংলাদেশে ২ ফুটবলার জামাল ভুঁইয়া এবং হামজা চৌধুরী বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখানো ক্রীড়াবিদদের তালিকাটা বেশ লম্বা। দেশের জন্য তারা নিয়ে এসেছেন গৌরবের উপলক্ষ। তাদের মধ্যে সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, ফুটবলার সাবিনা খাতুন, দাবাড়– রাণী হামিদ, শারমিন সুলতানা শিরিন ও আর্চার ইতি খাতুনের নাম উল্লেখযোগ্য। জাতীয় হ্যান্ডবল অধিনায়ক ডালিয়া আক্তার বলেন, ক্রীড়াঙ্গনেও নারীদের সম্মান করতে হবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়াতে হবে। তাহলেই ক্রীড়াঙ্গনের নারীরা ভালো থাকতে পারবে। অনেক সময় দেখা যায়, পুরুষ ক্রীড়াবিদদের জন্য লাখ লাখ টাকা পুরস্কার থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে কয়েক হাজার টাকা। এই বৈষম্য দূর করতে হবে।

২০১৪ সালের অলিম্পিকে গলফার সিদ্দিকুর সরাসরি খেলার সুযোগ পেয়ে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করেছেন। এ বছর টোকিওতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন আর্চার রোমান সানা। গত দুবছর ধরে বিশ্ব আর্চারিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন এ আর্চার।

২০১৯ সালে রোমান সানার সাফল্যের পথে যাত্রা শুরু ইসলামিক সলিডারিটি আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে। আন্তর্জাতিক র‌্যাঙ্কিং প্রতিযোগিতায় রিকার্ভ একক ইভেন্টে রৌপ্য জয় করেন এ তীরন্দাজ। পরবর্তী সময়ে নেদারল্যান্ডসে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতেন। এ আসর দিয়েই টোকিও অলিম্পিকের টিকেট পান। এরপর সেপ্টেম্বর ফিলিপাইনে এশিয়া কাপ ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিং (স্টজ-৩) আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে রোমানের হাত ধরে রিকার্ভ এককে স্বর্ণপদকের পাশাপাশি দলগত বিভাগে রৌপ্য এবং মিশ্র দ্বৈতে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে বাংলাদেশ। এসএ গেমসে আর্চাররা দশ ইভেন্টে দশ স্বর্ণ জয় করেছে। টোকিও অলিম্পিকে ভালো ফলাফল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন রোমান সানা।

গত বছর নেপালে অনুষ্ঠিত ১৩তম এসএ গেমসে বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা ইতিহাস গড়েছে। ২৫ ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়ে ১৯টি স্বর্ণ, ৩৩টি রৌপ্য ও ৯০টি ব্রোঞ্জসহ জিতেছে ১৪২ পদক। তবে এসএ গেমসে এতদিন সেরা সাফল্য ছিল ২০১০ সালে ঢাকায় আয়োজিত আসরে। যেখানে প্রাপ্তি ছিল ১৮ স্বর্ণ, ২৩ রৌপ্য, ৫৬ ব্রোঞ্জসহ ৯৭ পদক। বিদেশের মাটিতে ১৯৯৫ সালে ৭টি স্বর্ণ জিতে বাংলাদেশ। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০১৯ সালে ১৩তম এসএ গেমসে ১৯টি স্বর্ণ জয়ের পেছনে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করেছে আর্চারি। এ ইভেন্টে দশে দশ পেয়েছেন রোমান-ইতিরা। ক্রিকেটে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান জানান, ক্রীড়াঙ্গনের জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। ক্রীড়াপ্রেমিক প্রধানমন্ত্রী বলেই অধিকাংশ খেলাতেই সাফল্য আসছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App