×

সম্পাদকীয়

ভুল প্রশ্নের দায় নেবে কে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৭:০৬ পিএম

চলমান মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় ঢাকা, যশোর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বোর্ডের বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নপত্রে ভুলের ছড়াছড়ির খবরে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগামী পরীক্ষাগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া দরকার বলে মনে করছি। জানা গেছে, সোমবার বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার মধ্য দিয়ে সারাদেশে ২০২০ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু প্রথম দিনের পরীক্ষায় বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঁচ শতাধিক পরীক্ষার্থীকে ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। আগের বছরের অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা প্রশ্নপত্র দেয়া হয়েছে এবারের নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের। গতকাল ভোরের কাগজের একটি খবরে প্রকাশ, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিন (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় হবিগঞ্জের বাহুবলের একটি কেন্দ্রে বলা হয়, বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা হবে সেট কোড ২-এর প্রশ্নপত্র দিয়ে। ১৫ মিনিট পর সকাল পৌনে ১০টায় বার্তা আসে সেট কোড ৩-এর প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হবে। মূলত সেট কোড ২-এর বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র ওই কেন্দ্রেই যায়নি। কিন্তু ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দুই রকম বার্তায় পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বিভ্রান্তিতে পড়েন। শুধু এটাই নয়, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৭টি পরীক্ষায় আরো অসংখ্য ভুল ধরা পড়েছে। বাজারে নিষিদ্ধ নোট-গাইড থেকে হুবহু তুলে দেয়া হচ্ছে পরীক্ষার প্রশ্ন। আবার কোথাও কোথাও ইচ্ছামতো পরীক্ষার সময় বাড়ানো বা কমানো হচ্ছে। এসব নিয়ে দায়িত্বশীলরা নির্বিকার। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাধ্যমিক স্তর সমাপনী বা এসএসসি পরীক্ষা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত খুবই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এই ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা নিশ্চিতভাবেই পরীক্ষাকেন্দ্র ও প্রশ্নপত্র ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা কাঠামোর বড় ধরনের দুর্বলতারই পরিচায়ক। অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়া কোনো পরীক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার সেসব খাতা শনাক্ত করে আলাদা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেসব খাতা বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হবে। তিন গাইডের অনেক প্রশ্ন কমন পড়ার বিষয়ে বলেন, হুবহু প্রশ্ন মিলতে পারে না; তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অপরাধ শনাক্ত করার পর সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর আশ^াসের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। বর্তমানে আমাদের বসবাস ডিজিটাল যুগে, এখন আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় দ্রুত ও নির্ভুলভাবে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব। অথচ এ সময়ে এসে এ ধরনের ভুল দেখতে হচ্ছে। প্রত্যাশা থাকবে ইতোমধ্যে যে ভুল হয়েছে তার যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আগামী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সম্পূর্ণভাবে নির্ভুল করতে হবে। সর্বোপরি, ভুলের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে হলে প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্ব পালনকারীদের শতভাগ জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App