×

সারাদেশ

বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে টুঙ্গিপাড়ায় গুরুদাসপুর মহিলা কলেজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:২৮ পিএম

বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে টুঙ্গিপাড়ায় গুরুদাসপুর মহিলা কলেজ

বঙ্গবন্ধুর সমাধীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা/ ছবি: প্রতিনিধি।

মুজিব শতবর্ষকে সামনে রেখে ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত পন্যভুমির সান্নিধ্য লাভে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানালেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা সদরের চলনবিলের পিছিয়ে পরা নারী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রোজী মোজাম্মেল মহিলা অনার্স কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান তারা। পরে বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন ওই কলেজের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এর পর সকালের নাস্তা শেষে শুরু হয় বাঙ্গালী জাতীর পিতার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পুর্ণ গুরুত্বপুর্ণ স্থান গুলো ঘুড়ে দেখেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। জাতির পিতা ও তার বাবা মার সোমাধি সৌধ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংগ্রহ যাদু ঘর, শেখ রাসেল শিশু পার্কসহ বিভিন্ন বিষয় সর্ম্পকে দেখা এবং জানার প্রবল আগ্রহ আর ইচ্ছা নিয়ে।

মধুমতি আর ঘাগোর নদীর তীরে এবং হাওড়-বাঁওড়ের মিলনে গড়ে ওঠা বাংলার অবারিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভুমি এক অপরুপ পরিবেশে গড়ে ওঠা টুঙ্গিপাড়া গ্রাম। টুঙ্গিপাড়া গ্রামের সারি সারি নানা প্রজাতির গাছ পালাগুলো ছবির মতো সাজানো। গ্রামটিকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোন শিল্পীর আঁকা স্বপ্নের ছবি। গোপাল গঞ্জের টুঙ্গীপাড়া হচ্ছে একটি ইতিহাস সমৃদ্ধ জনপদ যেখানে রয়েছে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান যা প্রতিনিয়তই পর্যটকদের আকর্ষিত করে। যেদিকে চোখ যায় শুধুই সবুজের সমারোহ আর দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। বন বনানীতে ঘেরা অপরুপ সাজে সজ্জিত সুন্দর একটি গ্রাম।সড়কের দুই পাশেই সারিসারি নানা প্রজাতির দেশী বিদেশী গাছপালা। ছাঁয়া সুনিবিড় তরুলতায় ঘেরা সবুজ শ্যামল ছোট গ্রাম টুঙ্গীপাড়া। সেই গ্রামটিই আজ বাঙ্গালী জাতিসত্বা বহন করে চলছে।আর এই গ্রামেই জন্ম গ্রহন করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।ছোট বেলা থেকেই তার যেমন ছিল মানব প্রেম তেমনি ছিল প্রকৃতির সাথেও ছিল তার অগাধ ভালবাসা।আর সেই অগাধ ভালবাসাই এক সময় কাল হয়ে দাড়ায়। যার প্রমান ১৯৭৫ সালের ভয়াবহ ১৫ আগষ্ট। ঘাতকরা বাংলার এই অসংবাদিত নেতা ও তার পরিবার বর্গকে নিশংস ভাবে হত্যা করে।

টঙ্গীপাড়ার সবুজ শ্যামল মায়ায় মোহিত হবারই কথা ওখানকার মানুষগুলো কত না সহজ সরল কয়েক মিনিট বাক্য বিনিময় হওয়ায় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠতে সময় লাগেনা। এভাবেই কথা হয় স্থানীয় বয়স্ক কয়েকজন লোকের সাথে তারা জানান,যার বজ্রকন্ঠে কোটি জনতার হৃদয়ে দাগ কাটত গোটা বিশ^ কেঁপে উঠত। অথচ সেই মহান নেতার মরদেহ গোসল করানোর সাহস পাননি কেউ ওই ঘাতকদের ভয়ে। সর্ব শেষ ৫৭০(কাপড় ধোয়া সাবান)দিয়ে গোসল করিয়ে ৫/৬ জন লোক দিয়ে নামাজে জানাজা শেষ করে টুঙ্গিপাড়ায় তাকে দাফন করা হয়। প্রকৃতির কি নিয়ম আজ হাজারো জনগন প্রতিদিন তার পবিত্র সামাধি জিয়ারত ও দোয়া মোনাজাত করেন।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, টুঙ্গিপাড়ার একটি বনেদী পরিবারের নাম শেখ পরিবার। এই পরিবারের উত্তরসূরী শেখ পরিবারের সুপরিচিত ব্যক্তি শেখ হামিদ গড়ে তোলেন একটি টিনের ঘর। শেখ হামিদের একমাত্র পুত্র শেখ লুৎ্ফর রহমান একজন সাধারণ মানুষ। গোপালগঞ্জ শহরে সবেমাত্র সরকারি চাকরি গ্রহন করেছেন। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। এদিন শেখ লুৎ্ফর রহমান ও তার সহধর্মিনী সায়রা খাতুনের ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন একটি ফুটফুটে চেহারার শিশু। বাবা-মা আদর করে নাম রেখেছিলেন খোকা। এই খোকাই হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতির জনক এবং সমগ্র বাঙ্গালী জাতির প্রিয় মানুষ। শৈশব-কৈশোরে বাবা-মা তাঁকে আদর করে খোকা বলেই ডাকতেন।

বঙ্গবন্ধুর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে প্রাকৃতিক সৌন্দযের্র লীলাভুমি টুঙ্গিপাড়ায়। তিনি আবহমান বাংলার আলো-বাতাসে লালিত ও বর্ধিত হয়েছেন। মানুষের পাশাপাশি পশুপাখি,জীবজন্তু আর খেলাধুলার প্রতিও ছিল তার গভীর ভালবাসা। এভাবে তার শৈশব কেটেছে মেঠো পথের ধুলোবালি মেখে আর বর্ষার কাদা জলে ভিজে। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো। তিনি শাশ্বত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ছেলেবেলা থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। শৈশব কাল থেকেই তিনি তৎকালীন সমাজ জীবনে জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজা নিপীড়ন দেখেছেন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসাম্প্রদায়িকতার। আর পড়শি দরিদ্র মানুষের দুঃখ, কষ্ট তাঁকে সারাজীবন সাধারণ দুঃখী মানুষের প্রতি অগাধ ভালবাসায় সিক্ত করে তোলে। তাই পরবর্তী জীবনে তিনি কোনো শক্তির কাছে আত্মসমর্পন বা মাথানত করেননি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামে কখনো আপোষ না করায় অনেকবার কারাবরণ করেন করেছেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App