×

আন্তর্জাতিক

সার্সকে টপকে গেল করোনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:৩৭ এএম

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০২-০৩ সালে সার্সের প্রাদুর্ভাবকে ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন গতকাল রবিবার সকালে জানায়, নভেল করোনা ভাইরাসে চীনের মূল ভূখণ্ড এ পর্যন্ত ৮১১ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এ ছাড়া হংকং ও ফিলিপাইনে এর আগে মারা গেছেন আরো ২ চীনা নাগরিক। শুধু গত শনিবারই মারা গেছেন ৮৯ জন। ছয় সপ্তাহ আগে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু।

২০০২-০৩ সালে করোনা ভাইরাস পরিবারের আরেক সদস্য সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমে (সার্স) মৃত্যুর সংখ্যা ছিল সব মিলিয়ে ৭৭৪। সার্স সে সময় ছড়িয়ে যায় বিশে^র ২৪ দেশে, আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ১০০ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে করোনা ভাইরাস ফেব্রুয়ারির শুরুতেই সার্সকে ছাড়িয়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত শুধু চীনেই আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ১৯৮ জনে। শনিবার নতুন করে ২ হাজার ৬৫৬ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। আক্রান্তের এই সংখ্যা আগের কয়েক দিনের চেয়ে তুলনামূলক কম। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব তার সর্বোচ্চ পর্যায় পেরিয়ে এসেছে কিনা, সে বিষয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে না বলে জানান মিশিগান ইউনিভার্সিটির এপিডেমিওলজির অধ্যাপক জোসেফ আইসেনবার্গ।

করোনার আতঙ্কে বেইজিং ও সাংহাই এখন ভুতুড়ে নগরী : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস চীনের রাজধানী বেইজিং ও সাংহাইয়ের মতো ব্যস্ততম শহরগুলোকে ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত করেছে। জোর ধাক্কা লেগেছে ব্যবসা বাণিজ্যে, কমে এসেছে পর্যটকের সংখ্যা। সাধারণত তুষারপাতের সময়ে ২ কোটি ১৫ লাখ মানুষের এ রাজধানীর রাস্তা ও পার্কগুলোতে লাখ লাখ লোক খেলতে ও ছবি তুলতে নেমে আসে। অথচ এখন বেইজিংয়ের রাস্তাগুলোতে হাতেগোণা অল্প কিছু লোকের দেখা মিলছে। করোনা ভাইরাসের শঙ্কায় রাস্তাঘাট এখন খাঁ খাঁ করছে। পার্কগুলো এতটাই নীরব যে, কেবল পাখির কিচিরমিচিরই শোনা যাচ্ছে।

একই পরিস্থিতি চীনের অর্থনৈতিক কেন্দ্র সাংহাই শহরেও। ছুটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া এবং বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে যেতে নিষেধ করার পর থেকে বিশে^র সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশের শহরগুলো পরিণত হয়েছে এক একটা ভুতের শহরে। এখন পর্যন্ত মৃত ও আক্রান্তদের সংখ্যাগরিষ্ঠই উহান ও এর আশপাশের এলাকার, যা বেইজিং থেকে প্রায় হাজার কিলোমিটার দূরে।কী নামে ডাকব তোমায়? : গত বছরের শেষ দিন চীনের উহান থেকে নতুন করোনা ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম কেউ ‘চীনা ভাইরাস’, আবার কেউ ‘উহান ভাইরাস’ হিসেবে একে বর্ণনা করছিল।

ভাইরাসের নামের সঙ্গে দেশ বা এলাকার নাম থাকলে বিদ্বেষ ছড়াতে পারে, এই বিবেচনায় দ্রুত একটি অন্তর্বর্তীকালীন নাম ঠিক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রাথমিকভাবে তার নাম রাখা হয়, নভেল (নতুন) করোনা ভাইরাস, সংক্ষেপে, ২০১৯-এনসিওভি। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনও গত শনিবার আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন নাম ঠিক করে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের জন্য। এর সংক্রমণের উপসর্গগুলো নিউমোনিয়ার মতো বলে এর চীনা নাম রাখা হয়েছে, নভেল করোনা ভাইরাস নিউমোনিয়া, সংক্ষেপে, এনসিপি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App