×

আন্তর্জাতিক

থামছে না মৃত্যুর মিছিল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮১৩

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৫৮ এএম

থামছে না মৃত্যুর মিছিল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮১৩

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ।

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস যেন এখন মৃত্যুর মিছিলে রুপ নিয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৮১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু চীনেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮১১-তে। আর হুবেই প্রদেশেই মৃত ৭৮০ জন।  এতে সংক্রমিত হয়েছেন প্রায়  সাড়ে ৩৭ হাজার মানুষ। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এসব তথ্য জানিয়েছে।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের উহানে এক মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বেইজিংয়ের মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে। উহানে প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম কোনো বিদেশি নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এছাড়া করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক জাপানি নাগরিকের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চীনের বাইরে ২৭ দেশে এখন পর্যন্ত ৩৩২ জনের আক্রান্তের খবর জানা গেছে যাদের মধ্যে মারা গেছেন দুজন একজন হংকং এবং একজন ফিলিপাইনে। তবে মৃত দুজনই মূলত চীনের নাগরিক।

চলতি সপ্তাহে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ২০০২-০৩ সালের সার্স মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেবার বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ছিল ৭৭৪ জন, আক্রান্ত ছিল ৮ হাজারের কিছু বেশি। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ১৭ জন বিদেশি। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় অপ্রতিরোধ্য করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ আর প্রতিদিন বেড়ে চলা তার শিকারের সংখ্যা নিয়ে লাইভ আপডেট দিতে শুরু করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এদিকে আক্রান্ত অনেককে পরীক্ষা করেও সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চীনের চিকিৎসকরা। চীনের একাডেমি অব মেডিকেল সাইন্সের প্রধান ওয়াং চেনের বরাতে রয়টার্স জানায়, অনেকের পরীক্ষার ফল ‘ফলস/নেগেটিভ’ আসার ঘটনা ঘটেছে। চীনের টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে ওয়াং বলেন, অসুস্থদের মধ্যে যারা করোনা ভাইরাসে সত্যিই আক্রান্ত, টেস্ট করে তাদের মধ্যে ৩০-৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ফলাফল ‘পজিটিভ’ পাওয়া যাচ্ছে। এখনো অনেকের লালা পরীক্ষা করে ‘ফলস নেগেটিভ’ রেজাল্ট পাওয়া যাচ্ছে। যার মানে সত্যিকার অর্থেই যতজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত, তার অর্ধেকের ক্ষেত্রেই সেটি পরীক্ষায় ধরা পড়েনি। উৎপত্তিস্থল হুবাই প্রদেশ এখন করোনা ভাইরাস শনাক্তে সিটি স্ক্যান করা শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে আরো তাড়াতাড়ি রোগ শনাক্ত করা সম্ভব।

বনরুই থেকেই সংক্রমণের শুরু? : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কোথা থেকে শুরু হয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে বাদুড়, ভোঁদড়ের পর এবার চীনা গবেষকদের আলোচনায় উঠে এসেছে বনরুইয়ের নাম। মানবদেহে সংক্রমিত করোনা ভাইরাসের আরএনএ বিন্যাসের সঙ্গে বনরুইয়ের শরীরে পাওয়া করোনা ভাইরাসের আরএনএ বিন্যাসের ৯৯ শতাংশ মিল পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন সাউথ চীন অ্যাগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। গায়ে আঁশযুক্ত একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী বনরুই হচ্ছে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পাচার হওয়া প্রাণী। চীন ও ভিয়েতনামের কবিরাজি চিকিৎসায় পিঁপড়েখেকো এই প্রাণীটির আঁশ ও মাংস ব্যবহার করা হয়। ভাইরোলজির ভাষায় ভাইরাসের এ ধরনের পোষক প্রাণীকে বলা হয় মধ্যবর্তী বাহক। তবে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিশ্চিত করে বলার আগে এ নিয়ে আরো বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন।

চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, হাজারের বেশি বন্যপ্রাণীর ওপর নিরীক্ষা চালিয়ে বনরুইয়ের শরীরে পাওয়া জিন বিন্যাসের সঙ্গে নভেল করোনা ভাইরাসের গঠনের সবচেয়ে বেশি মিল পেয়েছেন তারা। গবেষণা সফল হলে নভেল করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজে পাওয়া সহজ হবে, জানান তারা।করোনা ভাইরাস পরিবারের আরেক সদস্য সার্সের শুরুটাও বাদুড় থেকে হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। মানুষের দেহে আসার আগে সেই ভাইরাসেরও মধ্যবর্তী বাহক প্রয়োজন হয়েছিল। ভোঁদড় সেই মধ্যবর্তী বাহক বলে ধারণা করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App