×

মুক্তচিন্তা

চাকরির আবেদন ফি কমানো কেন প্রয়োজন?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৮:৪৩ পিএম

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে দিন দিন বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা। মাত্র সাত বছরে এই হার দ্বিগুণ হয়েছে। উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। উচ্চশিক্ষিতরা সহজেই কোনো কাজ বেছে নিচ্ছে না আবার অনেকেই সুযোগ পাচ্ছে না কোনো কর্মসংস্থানে কাজ করার। বেকারত্বের তুলনায় কর্মসংস্থান বাড়ছে না। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় (আইএলও) আঞ্চলিক কর্মসংস্থান নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে ২০১০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ ২০১৭ সালের বেকারত্বের সংখ্যা ১২.৮ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব ১০.৭ শতাংশ। যেটা একটি দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই দেশের একজন উচ্চশিক্ষিত তরুণ তার শিক্ষাজীবন শেষ হলে বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার আবেদন করে থাকেন। সেই সঙ্গে চাকরির আবেদন ফি যদি ব্যয়বহুল হয় তা সত্যিই হতাশাজনক একজন শিক্ষিত বেকারের জন্য। সম্প্রতি সব ধরনের চাকরির আবেদন ফি কমানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এতে অংশ নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, অনেক চাকরির আবেদনে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। যা বেকার চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের দেয়ার সামর্থ্য নেই। সাধারণত চাকরির আবেদন ফি চারটি স্তরে রাখার দাবিতে এ আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯ম গ্রেডের জন্য আবেদন ফি ২০০ টাকা, ১০ম গ্রেডের জন্য আবেদন ফি ১৫০ টাকা, ১১ থেকে ১৪তম গ্রেডের জন্য আবেদন ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এবং ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের জন্য আবেদন ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন তারা। অবশ্যই চাকরির মাত্রাতিরিক্ত আবেদন ফি কমানো প্রয়োজন কারণ এতে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। একজন বিত্তশালী আবেদন করতে পারছেন। অপরদিকে একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত বা গরিব চাকরিপ্রার্থী আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একজন মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা অনেকেই টিউশনি করে নিজেদের খরচ চালিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করে। এমনকি একটি চাকরি না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে। তারপর তারা মাথায় বেকারত্বের বোঝা নিয়ে যখন চাকরির পরীক্ষার কথা ভাবেন অনেকেই হিমশিম খেয়ে যান। চাকরির আবেদন ফি বেশি হওয়ায় অনেকেই আর্থিক কারণে আবেদন করতে পারেন না। সেই সঙ্গে তারা হতাশাগ্রস্তে ভোগেন এবং এর জন্য আত্মহত্যা করতেও দেখা গিয়েছে। একজন উচ্চশিক্ষিত বেকার যখন চাকরির আবেদন করেন তার সঙ্গে যাতায়াত ভাড়া, থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদি আনুষঙ্গিক খরচ তো আছে বটেই। যদি চাকরির আবেদন ফি ৫০০-৭০০ হয় সেখানে কিন্তু লাখ লাখ চাকরিপ্রার্থী আবেদন করে থাকেন। চাকরির আবেদন ফি এত টাকা নেয়ার কারণ হিসেবে নিয়োগকর্তারা দেখান নিয়োগ সংক্রান্ত খরচ। নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ ও উত্তরপত্র মূল্যায়নসহ আনুষঙ্গিক কাজে খরচ হবে স্বাভাবিক কিন্তু বেকারদের ঘাড়ে পড়বেই বা কেন? কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে মাত্রাতিরিক্ত চাকরির আবেদন ফি কমিয়ে সব শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীর আবেদনের সুযোগ করে দেয়া এবং সেই সঙ্গে এই আন্দোলনের বিষয়টি সুনজরে এনে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তানজিনা আক্তার জেবিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App