×

সারাদেশ

তীব্র বেগে গ্যাস-বালি উদগিরণ, ধসে পড়ছে গাছপালা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৫:২৬ পিএম

তীব্র বেগে গ্যাস-বালি উদগিরণ, ধসে পড়ছে গাছপালা

শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের চত্বর। ছবি: প্রতিনিধি।

তীব্র বেগে গ্যাস-বালি উদগিরণ, ধসে পড়ছে গাছপালা

জমে ওঠা বালি সরানোর ব্যর্থ চেষ্টা। ছবি: প্রতিনিধি।

কসবার বায়েক ইউনিয়নের শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন টিউবওয়েলের কূপ থেকে তীব্র বেগে উদগীরণ হচ্ছে গ্যাস বালি। এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। আশাপাশের বাড়িঘরে চুলা জ্বালানো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুকনা খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। গ্যাস নির্গমনের ফলে গর্ত বড় হয়ে তলিয়ে গেছে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি। ধসে পড়ছে আশপাশের গাছপালা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিদ্যালয়টির পাঠদানসহ সব কার্যক্রম। বিপদের আশঙ্কায় অনেকেই এলাকা ত্যাগ করার কথা চিন্তা করছে। ঘটনাস্থলের চারপাশে নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে কসবা থানা পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা। ঢাকা থেকে পেট্রোবাংলার চার সদস্যের টেকনিক্যাল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে। গ্যাস নির্গমনের পাশে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর উদগীরণ হওয়া গ্যাস ও বালি বন্ধ করা যাবে না তা জানাবে পারবে টেকনিকেল টিম। দূর থেকে ঘটনা দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন বিদ্যালয়ের আশপাশ এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ বিকট শব্দে নলকূপের কূপ থেকে গ্যাস নির্গত হতে শুরু করে। বায়েক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল মামুন ভূইয়া জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন টিউবওয়েলটি কাজ না করায় সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে গত চারদিন ধরে একটি টিউবওয়েল বসানোর কাজ করছিলো শ্রমিকরা। প্রায় পাঁচশত চল্লিশ ফিট বোরিং করার পর বালি এবং পানির লেয়ার পাওয়া যায়। এরপর ফিল্টার পাইপ লাগানোর জন্য পাইপ উপরের দিকে তুলছিলো শ্রমিকরা। আনুমানিক দেড়শ ফিট উপরে তোলার পর হঠাৎ করে বিকট শব্দে গ্যাস উঠতে থাকে। সঙ্গে উঠতে থাকে বালি ও পানি। বায়েক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, এমন পরিস্থিতি দেখে টিউবওয়েল মিস্ত্রিরা ভয়ে দূরে সরে যায়। গ্যাসের সঙ্গে নিচের বালি পানি উঠে আসার কারণে দুটি ভবন এখন হুমকির মুখে। প্রচণ্ড বেগে নিচ থেকে গ্যাস, বালি আর পানি উঠার কারণে একটি ভবনের অর্ধেক বালির নিচে চলে যাচ্ছে। অপর ভবনটির মধ্যে হালকা কাঁপুনি অনুভূত হচ্ছে। তাছাড়া গ্যাস উঠার জায়গায় গর্ত বড় হয়ে তলিয়ে গেছে শহীদ মিনারটি। বালি আর পানিতে একাকার হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের মাঠ। [caption id="attachment_200866" align="aligncenter" width="2560"] জমে ওঠা বালি সরানোর ব্যর্থ চেষ্টা। ছবি: প্রতিনিধি।[/caption] স্থানীয়রা জানান, দ্রুত সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রায় ৮শ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত এলাকাবাসী। পাশেই অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নলকূপের পাইপ থেকে গ্যাস নির্গমন হচ্ছে। গত বুধবার রাতে পেট্রোবাংলা থেকে সদস্যের টেকনিকেল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা পরীক্ষা করে দেখছেন এবং ঢাকাতেও স্যাম্পল পাঠাবেন পরীক্ষা করার জন্য। আরো কয়েকজন টেকনিকেল কর্মকর্তা আসবেন পর্যবেক্ষণের জন্য। ঢাকা থেকে আসা টেকনিকেল টিমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সালদা গ্যাস ফিল্ডের প্লান্ট অপারেটর রেজাউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গভীর রাত থেকে পেট্রোবাংলা টেকনিকেল টিম স্যাম্পল সংগ্রহের কাজ করছেন। বিকট শব্দ এবং প্রচণ্ড বেগে গ্যাস-পানি ও বালি উঠার কারণে কাজ করতে খুব বেগ পেতে হচ্ছে। ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর বুঝা যাবে কী সিদ্ধান্ত নিবে বাপেক্স কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন এবং উপজেলা পরিষদ নেতারা। তারা বিষয়টি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বুধবার সকাল থেকেই তীব্রগতিতে গ্যাস বের হচ্ছে। কোনো ভাবেই তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App