×

রাজধানী

১২ হাজার কোটি টাকা করফাঁকি বিদেশি শ্রমিকদের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০১:৩৫ পিএম

১২ হাজার কোটি টাকা করফাঁকি বিদেশি শ্রমিকদের

সাংবাদিক সম্মেলনে টিআইবির প্রতিবেদন প্রকাশ। ছবি: ভোরের কাগজ।

বাংলাদেশে ন্যূনতম ২ লাখ ৫০ হাজার বিদেশি শ্রমিক কর্মরত আছেন। যারা বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে তারা ১২ হাজার কোটি টাকার করও ফাঁকি দিচ্ছেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআবইবি কার্যালয়ে 'বাংলাদেশে বিদেশীদের কর্মসংস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংস্থাটি এ তথ্য জানায়। গবেষণা ও প্রতিবেদন প্রণয়ন করেছেন মনজুর-ই-খোদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এই গবেষণা করা হয়েছে।

প্রতি বছর বাংলাদেশে ট্যুরিষ্ট ভিসায় আসা বিদেশিদের একটা বড় অংশ অবৈধভাবে কাজ করে। এরাই মূলত অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বলে জানায় টিআইবি। তৈরি পোষাকখাতে সবচেয়ে বেশি বিদেশি শ্রমিক রয়েছেন, এর মধ্যে ভারতের শ্রমিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপর শ্রীলঙ্কা ও চীনসহ ৪৪টি দেশের শ্রমিক রয়েছেন। তবে সরকারি কোনো সংস্থার কাছেই বাংলাদেশে বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যার হিসাব নেই বলে জানিয়েছে টিআইবি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈধ ও অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রায় আড়াই লাখ বিদেশী কর্মী কাজ করেন। যার মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী বৈধ কর্মী রয়েছেন ৯০ লাখ। এদের ন্যূনতম গড় মাসিক বেতন দেড় হাজার মার্কিন ডলার। সে হিসেবে বিদেশী কর্মীদের বার্ষিক আয় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ৩০ শতাংশ স্থানীয় ব্যয় বাদে প্রায় ৩ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে চলে যায়। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে বৈধভাবে বিদেশে যায় ৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকি ৩ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়ে যায়। টাকার অঙ্কে প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর বার্ষিক রাজস্ব ক্ষতি হয় ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন বা ১২ হাজার কোটি টাকা।

গবেষণায় আরো বলা হয়, বাংলাদেশে যারা কাজ করতে আসেন তাদের ৫০ শতাংশই ভ্রমণ ভিসায় আসেন। এখানে বাজ যোগাড় করে আবার দেশে ফিরে যান। পরে আবার ভ্রমণ ভিসা নিয়ে আসেন। বাংলাদেশ কর্মরত বিদেশীদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যা বেশি। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করছেন। এমনকি সরকারি প্রকল্পে যেসব বিদেশী কাজ করছেন তারাও ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন।

গবেষণায় দেশে বিদেশী কর্মী নিয়োগে অবৈধ অর্থের লেনদেনের বিষয়ও উঠে আসে। সেখানে বলা হয়, ভিসার সুপারিশ পত্র, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে ভিসা সংগ্রহ, বিদেমী নাগরিক নিবন্ধন, কাজের অনুমতি, এসবি ও এনএসআই ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ছাড় পত্র এবং ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধিতে ২৩ থেকে ৩৪ হাজার টাকার নিয়ম বিহর্ভূত অর্থ লেনদেন হয়। এছাড়া বিদেশী কর্মী নিয়োগে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দেশী এক্সপার্ট না খোঁজ করা, কর ফাঁকি, একই প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছরের বেশি কাজ করানো, ভীসা নীতি লঙ্গন ও বিদেশী কর্মীর বেতন কম দেখানো হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App