×

সম্পাদকীয়

প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার উদ্যোগ নিন

Icon

nakib

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৭:৩০ পিএম

গত কয়েক বছরে সরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগ বাড়লেও ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগের চিত্র হতাশাজনক। জানা গেছে, একটানা ৬ মাস ধরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিকভাবে কমে নভেম্বরে এক অঙ্কে এসে ঠেকেছে। এমন চিত্র হতাশাজনক। দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। দেশে নতুন কর্মসংস্থান তৈরির জন্য শিল্পায়নে বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর বিনিয়োগে পুঁজি সংগ্রহের দুটি খাত হলো ব্যাংক ও শেয়ারবাজার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবেই দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট ৯ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা; যা মোট ঋণের ১২ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএফএফ) হিসাবে তা ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা; যা মোট ঋণের ২৬ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংকিংবহিভূর্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু নামেই বেঁচে আছে। দেউলিয়ার পথে রয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম। অন্যদিকে শেয়ারবাজারের অবস্থা আরো খারাপ। গত এক বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম তলানিতে। দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তাছাড়া উপসাগরীয় অঞ্চলসহ বৈশ্বিক রাজনীতির অস্থিরতার ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতেও পড়তে বাধ্য। দেশে বিনিয়োগ মন্দার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্বমন্দার পরবর্তী নেতিবাচক প্রভাব, অবকাঠামোর অভাব, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব, বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থার সংকট, বাণিজ্য খাতে সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি, অনিয়ম, শিল্প, কলকারখানায় অস্থিরতা, বিদেশি ক্রেতাদের আইনগত পরিপালনগত চাপ ইত্যাদি। দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গড়ে উঠছে না নতুন শিল্প কারখানা। বিনিয়োগের অভাবে সৃষ্টি হচ্ছে না নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শিল্পের প্রবৃদ্ধি। সেক্ষেত্রে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে নতুন অর্থবছরে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, বন্দর, রেলওয়ে ইত্যাদি খাতে বড় ধরনের অবকাঠামোগত বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। এজন্য সরকারের প্রশাসন, ক্রয়, অডিট এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আরো দক্ষ করে তুলতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার পদক্ষেপ নিতে হবে। বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়নে আগামী বছর কয়েকটি বিষয়ে জোর দিতে হবে। এর মধ্যে ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করা, রপ্তানি ও সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং সর্বোপরি বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করা। এছাড়া টাকা পাচার বন্ধে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App