×

জাতীয়

ভাইয়া বলায় ছাত্রীকে থাপ্পড় দেয়ার হুমকি শিক্ষকের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০৮ পিএম

ভাইয়া বলায় ছাত্রীকে থাপ্পড় দেয়ার হুমকি শিক্ষকের

প্রভাষক হাফিজুল ইসলাম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী প্রক্টর ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। ভাইয়া বলে সম্বোধন করায় তিনি এই হুমকি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে  মঙ্গলবার (২৮ জানুযারি) বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় সভাপতি, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ১ম বর্ষের এক ছাত্রী হেঁটে যাওয়ার সময় বাংলা বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাক্কা লাগে। তখন দাঁড়িয়ে থাকা বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ঐ ছাত্রীর পরিচয় জানতে চায়। পরে ঐ ছাত্রী তাদের তুমি বলে পরিচয় দিলে তাকে ধমক দেয় তারা এবং সিনিয়রদের সাথে ভদ্রতামূলক আচরণ করার উপদেশ দেয় তারা। পরে ঐ ছাত্রী অর্থনীতি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীকে বিষয়টি মুঠোফোনে অবগত করে। খবর পেয়ে তারা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং বাংলা বিভাগের ঐ শিক্ষার্থীদের ধমকাতে থাকে। একইসঙ্গে তাদের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তারা। এ সময় তাদের মানসিক নির্যাতনও চালানো হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

একপর্যায়ে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সহকারী প্রক্টর প্রভাষক হাফিজুল ইসলাম। এ সময় উক্ত ঘটনায় জড়িত নয় এমন বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের কিছু ছাত্রীদের ডাক দেন তিনি। রিয়া নামের এক ছাত্রী বাসের সময় হয়েছে এবং ঘটনায় জড়িত নয় বলে চলে যাওয়ার অনুমতি চায় ঐ শিক্ষকের কাছে। সে ‘ভাইয়া’ বলে সম্বোধন করায় সহকারী প্রক্টর হাত উঁচু করে ওই ছাত্রীকে থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

ওই ছাত্রী সহকারী প্রক্টরকে না চিনে ভাইয়া বলে সম্বোধন করেছে। তখন দুঃখ প্রকাশ করে বারবার ক্ষমা চাইলেও সেখানে থাকা সব ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে তাকেসহ অন্যদের অপমান করেন সহকারী প্রক্টর। অভিযোগ ওই শিক্ষার্থীদের। তিনি ঐ  ছাত্রীকে এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সেই শিক্ষার্থীদের যাবতীয় তথ্য, ফোন নাম্বার নিয়ে যায় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। একজন দায়িত্বশীল শিক্ষকের এমন আচরণ এবং অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী কর্তৃক মানষিক নির্যাতন, ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ধমকানোর ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সহকারী প্রক্টর হাফিজুল ইসলাম বলেন, প্রক্টর স্যারের কথা মতো ঘটনার সমাধানে আমি সেখানে যাই। পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীদের নাম, সেশন, বিভাগ, মোবাইল নম্বর ও অভিভাবকদের নাম লিখে নিয়ে আসি। তবে ভাইয়া ডাকায় হুমকি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, হুমকির বিষয় আমার স্মরণে নেই।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন বলেন, “ র‌্যাগিং প্রতিরোধের জন্য হাফিজুল ইসলাম ওই ভবনের দায়িত্বে আছেন। সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির খবরে তিনি সেখানে যান। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, অভিযোগপত্রটি আমি এখনো হাতে পাইনি। অফিসে হয়তো আছে ব্যস্ততার কারণে দেখা হয়নি। আগামী শনিবার আমরা বিষয়টি নিয়ে বসব।”

উল্লেখ্য, হাফিজুল ইসলাম অত্র বিশ^বিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (অনার্স) শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিশ^বিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে প্রভাষক পদে শিক্ষকতা করছেন। তিনি বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরেরও দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App