×

রাজধানী

অস্ত্র-গুলি চুরি, ৯ মাসেও হদিস পায়নি পুলিশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৫৩ পিএম

অস্ত্র-গুলি চুরি, ৯ মাসেও হদিস পায়নি পুলিশ

শাহবাগ থানা। ফাইল ছবি

ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে প্রায়ই একাধিক অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু খোদ রাজধানীর শাহবাগ থানা থেকে একজন সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) সরকারি অস্ত্র-গুলি চুরি হওয়ার ৯ মাসেও তা উদ্ধার হয়নি। এমনকি কে বা কারা অস্ত্র ও গুলি নিয়েছে সেটাও শনাক্ত হয়নি।

গত বছরের ৫ মে শাহবাগ থানার দোতলার বিশ্রাম কক্ষ থেকে ওই অস্ত্র খোয়া যায়। অস্ত্রের সঙ্গে ১৬ রাউন্ড গুলিও নিয়ে যায় অজ্ঞাত চোর। অস্ত্র ও গুলি চুরি হওয়ার ঘটনায় তখন তোলপাড় হয়। সিসিটিভি ফুটেজে অজ্ঞাত এক তরুণকে থানার দোতলায় উঠতেও দেখেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেই তরুণকে ধরিয়ে দিতে আহ্বান জানিয়ে ছবিও প্রচার করা হয়। কিন্তু খোঁজ মিলছে না তার। অস্ত্র হারিয়ে এএসআই হিমাংশু সাহা এখনো বরখাস্ত হয়ে আছেন।

জানা গেছে, ঘটনার দিন দায়িত্ব পালন শেষে বিকেলে শাহবাগ থানায় ফেরেন এএসআই হিমাংশু। থানা ভবনের দ্বিতীয় তলার বিশ্রামকক্ষে গিয়ে নিজের পোশাক পরিবর্তন করেন তিনি। পোশাকের পাশেই রাখেন নিজের নামে বরাদ্দ সরকারি পিস্তলটি (৭.৬২ বোরের চাইনিজ পিস্তল), সঙ্গে ১৬ রাউন্ড গুলি। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে বাথরুমে যান। বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখেন অস্ত্র-গুলি নেই।

ঘটনার পরপরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। থানার সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে দেখা যায়, আনুমানিক ২৫-২৬ বছরের এক তরুণ থানায় প্রবেশ করে। নিশ্চিত না হলেও তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা, ওই তরুণই অস্ত্র-গুলি চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

আলোচিত মামলাটি থানা পুলিশের পর তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)। মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রাজীব আল মাসুদ ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা প্রযুক্তি ও প্রথাগত সোর্স কাজে লাগিয়ে তদন্ত করছি। কিন্তু চোরকে শনাক্ত বা খোয়া যাওয়া অস্ত্রটি উদ্ধার করা যায়নি।

তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর আমরা একটা অস্ত্র ও কিছু গুলি উদ্ধার করেছিলাম। কিন্তু হতাশার বিষয় হলো, খোয়া যাওয়া অস্ত্রের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি। অস্ত্র-গুলি উদ্ধার ও চোরকে ধরতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে এক তরুণকে ওই সময়ে থানায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। কিন্তু তিনিই যে অস্ত্র-গুলি চুরি করেছেন, সে বিষয়েও নিশ্চিত নই আমরা। তবে সন্দেহের তীর তার দিকে বেশি থাকলেও থানা পুলিশের কেউই সন্দেহের বাইরে নয়।

তদন্ত সূত্র জানায়, ঘটনার পর থানার প্রায় সব সদস্যকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিসিটিভি ফুটেজে এক তরুণকে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে একবার থানায় ঢুকতে দেখা যায়। ওই যুবকই বিকেল ৪টা ২৩ মিনিটে দ্বিতীয়বার থানায় ঢোকে। তবে থানায় ঢোকার জন্য সে মূল ফটক ব্যবহার না করে পাশের মসজিদে যাতায়াতের গেট ব্যবহার করে। কিছুক্ষণ পর একই গেট দিয়ে বের হয়ে যায়। ওই সময় দ্বিতীয় তলার বিশ্রামকক্ষ থেকে অস্ত্র-গুলি খোয়া যায়।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, থানার মূল ফটকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো থাকলেও মসজিদ গেটে ছিল না। থানা কম্পাউন্ডের ভেতরের সিসিটিভি ক্যামেরায় তার চেহারা দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সিসিটিভি ক্যামেরা এড়ানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে ওই যুবক মসজিদ গেট দিয়ে থানায় ঢুকে অস্ত্রটি চুরি করে নিয়ে যায়। ওই তরুণের পরনে হাফ হাতা সাদা চেক শার্ট ও কাঁধে কালো একটি ব্যাগ ছিল। মুখে ছিল দাড়ি। সে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য হতে পারে বলেও ধারণা করছে পুলিশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App