×

মুক্তচিন্তা

করোনা ভাইরাস আতঙ্ক নয় দরকার সচেতনতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ০৭:০০ পিএম

করোনা ভাইরাস আতঙ্ক নয় দরকার সচেতনতা

করোনা ভাইরাস যেন এক নয়া আতঙ্কের নাম! গবেষকদের মতে, বিশ্বে সাড়ে ৬ কোটি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে এই মারাত্মক ভাইরাস। চীন থেকে উত্থান হওয়া ভাইরাসটি ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েলসহ চীনের পাশর্^বর্তী বেশ কিছু রাষ্ট্রে। আক্রান্ত আর মৃতের সংখ্যার হার বিশ্ববাসীকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ইতোমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশও ঝুঁকিমুক্ত নয় এই মহামারি ভাইরাসের হাত থেকে।

দেশের সব জায়গায়ই জনমনে আতঙ্ক। কখন-কীভাবে আবার ভাইরাসটি এদেশে না ছড়িয়ে পড়ে! অবশ্য এই আশঙ্কা কোনোভাবেই ফেলে দেয়ার মতো নয়। এদিকে সংখ্যার হারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিশাল একটি অংশ ইতোমধ্যেই চীনের হুবেই প্রদেশে আটকা পড়েছে। তাই বেড়েছে উদ্বেগ, বেড়েছে পরিবারগুলোর দুশ্চিন্তা। কিন্তু এই দুশ্চিন্তা কোনো সমাধান নয়। জনসাধারণকে আত্মবিশ্বাসী ও সচেতন করে তুলতে হবে। কারণ এই ভাইরাসের মোকাবেলায় প্রয়োজন দৃঢ় আত্মবিশ্বাস। এ প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে ভাইরাসটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। ঈড়ৎড়হধ শব্দের অর্থ জ্যোতির্বলয়। এ ভাইরাসটি সূর্য থেকে ছিটকে পড়া আলোকরশ্মির মতো বলে এর নামকরণ করা হয় করোনা ভাইরাস। মানুষ ও পশু-পাখি এই ভাইরাসটির দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।

করোনা সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, জ্বর এবং কাশি। ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় সপ্তাহখানেক লেগে যেতে পারে। এর প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তারপর শুকনো কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। এমনকি এক সপ্তাহের মধ্যেই শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা বুঝতে পারে না সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, নাকি সাধারণ সর্দি-কাশিতে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত এলাকায় সাধারণ সর্দি-কাশি হলেও নাক, গলা ও বক্ষের পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে সেটা করোনা ভাইরাস কিনা। অতঃপর পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

কিন্তু এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলেই ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না। কারণ সর্দি-কাশি মানেই করোনা ভাইরাস নয়। সুতরাং ঘাবড়ে না গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। করোনা ভাইরাস মূলত শ্বাসযন্ত্রের নিচের অংশ শ্বাসনালি ও ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। এর ফলে বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ নিউমোনিয়া ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। প্রথমত, এ সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আত্মসচেতন হতে হবে। ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় সরাসরি কোনো চিকিৎসা না থাকলেও নিয়মতান্ত্রিকভাবে চললে খুব সহজেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে এই ভাইরাসকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে মানুষকে নিয়মিত হাত ভালোভাবে ধোয়া নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে। হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা এবং ঠাণ্ডা ও ফ্লু আক্রান্ত মানুষ থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. গ্যাব্রিয়েল লিউং বলেন, ‘আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মাস্ক ব্যবহার করুন, আর নিজে অসুস্থ না হলেও অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মাস্ক ব্যবহার করুন।’ আপাতত প্রতিকার হিসেবে এ ভাইরাস বহনকারীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা, ডাক্তারদের পরামর্শ, বারবার হাত ধোয়া, হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা ও ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ ব্যবহার করা আবশ্যক। জনসচেতনতার পাশাপাশি সরকারকে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।

  •  শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App